ভারত জিতলো কোহলি ঝড়ে

নয়াবার্তা ডেস্ক : পাক-ভারত দ্বৈরথ। বরাবরের মতো থাকল টান টান উত্তেজনা ও রোমাঞ্চ। মেলবোর্নে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে শেষ হাসি হাসলো ভারত। ৩১ রানে চার উইকেট হারানো ভারতকে পথ দেখান বিরাট কোহলি ও হার্দিক পান্ডিয়া। পান্ডিয়া এক পর্যায়ে বিদায় নিলেও কোহলি ছিলেন রীতিমতো বিধ্বংসী। কোহলির ব্যাটিং ঝড় ও শেষ ওভারের নাটকীয়তায় পাকিস্তানকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে ভারত।

রোববার সুপার টুয়েলভের গ্রুপ টুয়ের ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে ৮ উইকেটে ১৫৯ রান করে পাকিস্তান। জবাবে লক্ষ্যে পৌঁছাতে শেষ বল খেলতে হয়েছে ভারতকে। অশ্বিনের ব্যাটে জয়সূচক রান আসলেও ম্যাচের নায়ক বিরাট কোহলি। ৫৩ বলে ছয়টি চার ও চার ছক্কায় ৮২ রানে অপরাজিত থাকেন ভারতের সাবেক এই অধিনায়ক। ম্যাচ সেরা অনুমিতভাবে তিনিই।

চ্যালেঞ্জিং টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় ভারত। দ্বিতীয় ওভারে পাকিস্তানের তরুণ পেসার নাসিম শাহর বলে লোকেশ রাহুল হয়ে যান ব্যাটিং ইনসাইড এজ। ৮ বলে ৪ রান করেন ভারত ওপেনার।

চতুর্থ ওভারে বিদায় নেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা। হ্যারিস রউফের বলে স্লিপে ইফতিখারের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। সাত বলে চার রান করেন তিনি।

দুটি বাউন্ডারি হাকিয়ে ঝড় তোলার আভাস দিলেও টিকতে পারেননি সূর্যকুমার যাদব। হ্যারিসের বলে উইকেটের পেছনে রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ দেন তিনি। ১০ বলে তিনি করেন ১৫ রান। এরপর রান আউট হন অক্ষর প্যাটেল। তিন বলে তিনি করেন দুই রান।

৩১ রানে চার উইকেট হারানো ভারতকে তখন পথ দেখানো শুরু করেন বিরাট কোহলি ও অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া। দুজনের সাবলিল ব্যাটিংয়ে ১৫ ওভারে ১০০ রানে পৌছে ভারত। ৩০ বলে দরকার তখন ৬০ রান। দুরুহ এই টার্গেট কোহলির ব্যাটে কমতে শুরু করে। ১৯তম ওভারে তার দুটি ছক্কা ম্যাচের মোড় ঘুড়ে দেয়। শেষ ওভারে দরকার ছিল ১৬ রান। নওয়াজের এক নো ও এক ওয়াইডসহ বাজে বোলিংয়ে সুবিধাটা ভালোমতো নেয় ভারত। প্রথম বলে হার্দিক (৩৭ বলে ৪০ রান) আউট। পঞ্চম বলে বিদায় কার্তিক। তারপরও কোহলি-অশ্বিন জুটিতে শেষ হাসি হাসে ভারত।

এর আগে ব্যাট করতে নেমে শুরু থেকেই চাপে ছিল পাকিস্তান। প্রথম ওভারে রান আসে মাত্র একটি। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই বিদায় নেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। আরশদ্বিপের বলে এলবির শিকার তিনি। রিভিউ নিয়েও ভাগ্য ফেরাতে পারেননি বাবর।

এরপর টিকতে পারেননি রানের ধারায় থাকা মোহাম্মদ রিজওয়ানও। চতুর্থ ওভারে আরশদ্বিপের বলে ভুবনেশ্বরের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ১২ বলে এক বাউন্ডারিতে মাত্র চার রান রিজওয়ানের।

দলের এমন বিপদে হাল ধরার চেষ্টা করেন ইফতিখার আহমেদ ও শান মাসুদ। দুজনে সফলও বলা চলে। চাপ কাটিয়ে দুজনে দলকে নিয়ে যান নব্বইরে ঘরে। তখনই আবার বিপর্যয়। সাত রানের ব্যবধানে তিন উইকেট হারিয়ে বসে পাকিস্তান।

দলীয় ৯১ রানের মাথায় ইফতিখারকে এলবির শিকারে পরিণত করেন বুমরার পরিবর্তে ভারতের স্কোয়াডে আসা পেসার মোহাম্মদ শামি। আউট হলেও ফিফটি করেই বিদায় নেন ইফতিখার। ৩৪ বলে চার ছক্কা ও দুই চারে ৫১ রান করেন তিনি।

স্কোর একশ হওয়ার আগে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে দ্রুত সাজঘরে ফেরেন শাদাব খান (৫) ও হায়দার আলী (২)। দুজনই হার্দিক পান্ডিয়ার বলে ক্যাচ দেন সূর্যকুমার যাদবের হাতে।

১৬তম ওভারে আবার পান্ডিয়ার হানা। ৬ বলে ৯ রান করা মোহাম্মদ নওয়াজকে উইকেটের পেছনে কার্তিকের গ্লাভসে ধরা পড়েন। পরের ওভারে আরশদ্বিপের শিকার আসিফ আলী। ৩ বলে ২ রান করা আসিফ ক্যাচ দেন কার্তিকের হাতে।

একপ্রান্ত আগলে রাখা শান মাসুদও পেয়ে যান এক পর্যায়ে ফিফটি। তার সঙ্গে যোগ দেয়া পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদিও শেষের দিকে চেষ্টা করেন ঝড় তোলার। ৮ বলে এক চার ও ছক্কায় ১৬ রান করে ভুবনেশ্বরের শিকার হন শাহিন।

৪২ বলে পাচ চারে ৫২ রানের দারুণ ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন শান মাসুদ। ৪ বলে ৬ রানে অপরাজিত হ্যারিস রউফ। ভারতের হয়ে বল হাতে আরশদ্বিপ ও ভুবনেশ্বর নেন তিনটি করে উইকেট। ভুবনেশ্বর ও শামি পান একটি করে উইকেট।

Share