নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবির ঘটনায় ৩৯ জন বাংলাদেশি নিখোঁজ ব্যক্তির নাম–পরিচয় প্রকাশ করা হয়েছে। যারা লিবিয়া থেকে উন্নত জীবনের আশায় অবৈধ পথে ইতালিতে যাচ্ছিলেন। এরা সবাই মানব পাচার চক্রের খপ্পরে পড়েছিলেন। আর এই চক্রের হোতা নোয়াখালীর তিন ভাইকে শনাক্ত করা হয়েছে।
বুধবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। তিনি বলেন, বেঁচে যাওয়া ১৪ যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে লিবিয়ায় বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেন।
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি এই চক্রের হোতা হচ্ছে নোয়াখালীর তিন ভাই। এছাড়া মাদারীপুরের আছে আরও দুইজন। তদের বিষয়ে আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি।’ তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী সন্দেহভাজন ওই মানব পাচারকারীদের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেননি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ওই দিন দুটি নৌকায় করে ভূমধ্যসাগর হয়ে প্রায় ১৩০ জন ইতালির উদ্দেশে যাত্রা করেন। এতে ১০০ জন বাংলাদেশের নাগরিক ছিলেন। এর মধ্যে একটি নৌকা নিরাপদে পৌঁছে যায়। অন্যটিতে ৭০ থেকে ৮০ জন ছিলেন। এই নৌকাটি ডুবে যায়।
মন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের এসব নাগরিক চার থেকে মাস আগে লিবিয়া গিয়েছিলেন। লিবিয়া যাওয়ার আগে দুবাই, শারজা, আলেকজান্দ্রিয়া হয়ে ত্রিপোলিতে পৌঁছান তারা। ত্রিপোলিতে পৌঁছার পর মানব পাচারকারীরা তাদের জিম্মি করে আটকে রাখে। বিভিন্ন সময়ে তাদের নির্যাতন করে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে টাকা আদায় করে মানব পাচারকারীরা।
এদিকে ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবির ঘটনায় মাদারীপুরের দুই যুবক এখনো নিখোঁজ রয়েছেন বলে তাদের পরিবার জানায়। এই দুজনের একজন হলেন সজিব হোসেন। তিনি দালালের হাত ধরে লিবিয়া যান। এরপর লিবিয়াতে ছয় মাস কাজ করার পরে নোয়াখালীর রুমান নামে এক দালালের খপ্পরে পরেন তিনি।
সজিবের আত্মীয়রা জানান, ওই দালাল আড়াই লাখ টাকার বিনিময়ে সজিবকে ইতালি নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। সজিব রাজি হয় তার সঙ্গে যেতে। এরপর দালাল টাকা আটকে রেখে সজিবকে লিবিয়ার বন্দি করে রাখে। এরপর দীর্ঘ চার মাস পরে গত বৃহস্পতিবার সজিবকে অবৈধ পথে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি পৌঁছানোর কথা বলে সজিবকে নৌকায় তোলা হয়।
গত বৃহস্পতিবার লিবিয়ার জুয়ারা থেকে অবৈধভাবে ইতালিতে যাওয়ার পথে ভূমধ্যসাগরে একটি নৌকা ডুবে যায়। গভীর সমুদ্রে যাত্রীদের ছোট আরেকটি নৌকায় তোলা হলে এ ঘটনা ঘটে। শুক্রবার ভোরে তিউনিসিয়া উপকূলে বেঁচে যাওয়া যাত্রীদের উদ্ধার করা হয়। ডুবে যাওয়াদের মধ্যে অধিকাংশ বাংলাদেশি।