নয়াবার্তা প্রতিবেদন : জনকল্যাণে দ্রুত বিচারের স্বার্থে আদালতের নির্ধারিত স্থানে না বসে অপরাধ সংঘটিত স্থানে তাৎক্ষণিক বিচারের উদ্দেশ্যে গঠিত সংক্ষিপ্ত আদালতই হলো ভ্রাম্যমাণ আদালত বা মোবাইল কোর্ট। জনস্বার্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও প্রতিরোধ কাজকে আরও দ্রুত ও অধিকতর দক্ষতার সঙ্গে কার্যকর করার জন্য মোবাইল কোর্ট আইন ২০০৯ অনুসারে আদালত বসানো হয়।
২০০৭ সালে মোবাইল কোর্ট অধ্যাদেশ জারি করা হলেও ২০০৯ সালে তা আইনে পরিণত হয়। এই আদালতের বিচারক হবেন একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। এখানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলতে সহকারী কমিশনার থেকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পর্যন্ত নিয়োজিত পদে দায়িত্বরত কর্তাব্যক্তিকে বুঝানো হয়েছে।
মোবাইল কোর্ট আইন, ২০০৯ এর ৫ ধারায় উল্লেখিত যেকোনো সরকারি কর্মকর্তা, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট; জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আঞ্চলিক অধিক্ষেত্রে যেকোনো এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং অপরাধ প্রতিরোধ কার্যক্রম সম্পাদনের উদ্দেশ্যে লিখিত আদেশ দ্বারা মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করার ক্ষমতা অর্পণ করতে পারবেন।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের ক্ষমতা কতটুকু : এই আইনের আওতায় একজন ম্যাজিস্ট্রেট কোনো ব্যক্তিকে সর্বোচ্চ দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং নির্ধারিত সীমার মধ্যে যেকোনো পরিমাণ অর্থদণ্ড আরোপ করতে পারবেন। মোবাইল কোর্ট পরিচালনার সময় কোনো অভিযুক্ত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসা করা হয়ে থাকে- তিনি দোষ স্বীকার করবেন কিনা। অভিযোগ স্বীকার না করলে তার স্বপক্ষে প্রমাণ চাইবেন। যাচাই বাছাই শেষে উপযুক্ত মনে করলে ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযুক্ত ব্যক্তিকে অব্যাহতি দেবেন। অভিযুক্ত ব্যক্তি দোষ স্বীকার করলে দুইজন সাক্ষীর উপস্থিতিতে ম্যাজিস্ট্রেট কারাদণ্ডাদেশ ও অর্থদণ্ড আরোপ করতে পারেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের দেওয়া সাজার বিরুদ্ধে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আপিল করা যায়। আর জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের দেওয়া সাজার বিরুদ্ধে জেলা ও দায়রা জজের কাছে আপিল করা হয়।
তবে, অত্র আইনের ১৪ ধারা অনুসারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ভুলে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি মোবাইল কোর্ট পরিচালনাকারী এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট বা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা মোবাইল কোর্ট পরিচালনায় জড়িত কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে মামলা করতে পারেন না।