মে মাসে রপ্তানি আয় এসেছে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার

নয়াবার্তা প্রতিবেদক : মে মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের তুলনায় ১৬ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ কম। গত বছরের মে মাসে রপ্তানি আয় হয়েছিল ৪ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের জুলাই-মে মাসের রপ্তানি আয় বেড়েছে ২ শতাংশ। এসময়ে পণ্য রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৫১ দশমিক ৫৪ বিলিয়ন ডলার। যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৫০ দশমিক ৫২ বিলিয়ন ডলার। গতকাল বুধবার রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ইপিবি এ তথ্য জানিয়েছে।

ইপিবির তথ্যানুসারে, মে মাসের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা ৫ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় ২৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ কম। তৈরি পোশাক শিল্পের আয় নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির কারণে মে মাসের সামগ্রিক রপ্তানি নেতিবাচক হয়েছে। তৈরি পোশাক পণ্য থেকে মে মাসে আয় হয়েছে ৩৩৫ কোটি ডলার। যা আগের বছরের চেয়ে ১৭ দশমিক ১৯ শতাংশ কম। খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, তারল্য সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো যথাসময়ে অর্থ দিতে পারছে না। আবার যা দিচ্ছে তাও পরিমাণের তুলনায় অনেক কম। ফলে ব্যবসার পরিচালন ব্যয় ও সময় দুটোই বেড়ে যাচ্ছে। তাই রপ্তানিকারকরা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। রপ্তানি আয়ের ইতিবাচক ধারায় ফিরয়ে আনতে বাবসায়ী নেতা এসব সমস্যা দ্রুত সমাধানের দাবি করেছেন। এপ্রিল মাসের নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির কারণ ছিল ঈদের ছুটি। কিন্তু মে মাসের নেতিবাচক প্রবৃদ্ধির চিন্তার বিষয়। পোশাক পণ্যের ইউনিট মূল্য কমে যাওয়ার কারণে সামগ্রিক রপ্তানি আয়ে প্রভাব পড়েছে। খাত সংশ্লিষ্টরা জানান, জানুয়ারি-মার্চ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক পোশাক আমদানি কমেছে ৭ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং ইউরোপের কমেছে ১২ দশমিক ৮৪ শতাংশ। পাশাপাশি জুলাই ২০২৩ থেকে মার্চ ২০২৪ যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে প্রধান পণ্যের ইউনিট প্রতি দরপতন হয়েছে ৮ থেকে ১৮ শতাংশ।

ইপিবির তথ্য বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে জাতীয় রপ্তানিতে ৮৪ শতাংশের বেশি অবদান রাখা পোশাক রপ্তানি আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৮৬ শতাংশ বেড়ে ৪ হাজার ৩৮৫ কোটি ডলারে দাঁড়িয়েছে। খাত সংশ্লিষ্টদের মতে, পোশাকখাতকে নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে টিকে থাকতে হচ্ছে। একদিকে এনবিআর, বন্দর ও ব্যাংকিং সংক্রান্ত জটিলতা মোকাবিলা করতে হচ্ছে। অন্যদিকে শিল্পাঞ্চলের বাইরে নতুন কোনো কারখানায় গ্যাস-বিদ্যুৎ সংযোগ ও ব্যাংকঋণ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যা ব্যবসায়ীরা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে। কারণ এ ধরনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে বিনিয়োগ ও রপ্তানি আরও বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ইপিবির তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, হিমায়িত মৎস্য খাত থেকে আয় ১৩ দশমিক ৫৬ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩৪ কোটি ৫ লাখ ডলার। যা গত বছর ছিল ৪০ কোটি ডলার। চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের আয় কমেছে ১৪ দশমিক ১৭ শতাংশ। এ সময়ে এ খাত থেকে আয় হয়েছে ৯৬ কোটি ১৫ লাখ ডলার। তবে চামড়ার জুতা থেকে রপ্তানি আয় ২৫ দশমিক ৯২ শতাংশ কমেছে। এ সময়ে আয় হয়েছে ৪৮ কোটি ডলার। যদিও চামড়ার জুতা থেকে রপ্তানি আয় কমেছে কিন্তু নন লেদার জুতা থেকে আয় বেড়েছে ৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ। এ খাতটি গত ১১ মাসে আয় করেছে ৪৬ কোটি ৩৩ লাখ ডলার। হোম টেক্সটাইল পণ্যের রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৭৭ কোটি ৬০ লাখ ডলার যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ২৪ দশমিক ২৯ শতাংশ কম। কৃষি ও কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য থেকে আয় বেড়েছে ৮ দশমিক ২ শতাংশ। এই খাত থেকে আয় হয়েছে ৮৪ দশমিক ৬৩ কোটি ডলার। সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে পরিচিত ওষুধ শিল্প থেকে রপ্তানি আয় বেড়েছে ১৪ দশমিক ৩২ শতাংশ। এ খাত থেকে আয় হয়েছে ১৮ কোটি ৪২ লাখ ডলার। প্লাস্টিক পণ্য থেকে আয় হয়েছে ২২ কোটি ২৫ লাখ ডলার। পাট ও পাটজাত পণ্যের রপ্তানি কমেছে ৭ দশমিক ৫৩ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে পাট ও পাটজাত পণ্য থেকে আয় হয়েছে ৭৮ কোটি ৪৬ লাখ ডলার যা আগের বছর ছিল ৮৫ কোটি ডলার। টুপি রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে ৩১ কোটি ডলার।

Share