নয়াবার্তা প্রতিবেদক : রাজধানীর উত্তরখানে এক গৃহবধূকে হত্যার পর ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন এক ব্যক্তি। গ্রেপ্তার হজরত আলী (৪৭) পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক। নিহত নারী (৩২) সপরিবার উত্তরখানের কুড়িপাড়ায় থাকতেন। তাঁর একমাত্র সন্তান কলেজপড়ুয়া। স্বামী রিকশা চালাতেন।
উত্তরখান থানা পুলিশ জানায়, নিহত নারীকে হজরত স্ত্রী বলে দাবি করলেও মূলত ওই নারীর সঙ্গে তাঁর এক বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গতকাল সন্ধ্যায় ওই নারী নিজের বাসা থেকে হজরতের চনপাড়ার বাসায় যান। হজরত ছাপড়াঘরের একটি কক্ষে একাই থাকতেন। হজরত ওই নারীকে বিয়ে করার কথা বলে তাঁর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেন। পরে হজরত বিয়ে করতে রাজি না হলে দুজনের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে হজরত তাঁকে পানের ছেঁচুনি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করেন। এতে ওই নারী চিৎকার দিলে হজরত মসলা বাটার পাটা দিয়ে উপর্যুপরি মাথায় আঘাত করে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করেন। টের পেয়ে প্রতিবেশীরা হজরতের কক্ষের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় তিনি জনরোষ থেকে বাঁচতে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে ওই নারীকে হত্যা করার কথা জানান। এ সময় উত্তরখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল মজিদের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে হজরতকে গ্রেপ্তার করেন এবং মরদেহটি উদ্ধার করে তা ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠান।
ওসি আবদুল মজিদ আজ বুধবার বলেন, নিহত নারীকে হজরত স্ত্রী বলে দাবি করেছেন। তবে ওই নারী প্রকৃতপক্ষে আরেকজনের স্ত্রী। জিজ্ঞাসাবাদে হজরত হত্যার কথা স্বীকার করে পুলিশকে বলেছেন, গতকাল সন্ধ্যার দিকে ওই নারী তাঁর বাসায় আসেন। পরে দুজন একসঙ্গে রাতের খবার খান। ওই নারী মুঠোফোন সঙ্গে না আনায় হজরত জানতে চান, ফোনটি কোথায় রেখে এসেছেন। এ নিয়ে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে তিনি ওই নারীকে মারপিট করেন। কিন্তু প্রতিবেশীরা বাসা ঘিরে ফেললে তিনি হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার আশঙ্কায় ওই নারীকে তৎক্ষণাৎ পরিকল্পনা করে মেরে ফেলেন।
ওসি বলেন, হজরত পুলিশের কাছে দাবি করেন, এ পর্যন্ত ওই নারী তাঁর জমানো পৌনে তিন লাখ টাকা নিয়ে গেছেন। হজরতের বিরুদ্ধে হত্যাসহ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে উত্তরখান থানায় মামলা হয়েছে। তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।