রামমন্দির উদ্বোধন করলেন নরেন্দ্র মোদি

নয়াবার্ত‍া  ডেস্ক : ভারতের উত্তরপ্রদেশের শহর অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। রাষ্ট্রীয় মহাসমারোহে সোমবার দুপুরে উদ্বোধন অনুষ্ঠান শুরু হয়। ধর্মীয় রীতি মেনে পূজা-অর্চনার পর উন্মোচন করা হয় রামলালার মূর্তি। খবর- এনডিটিভি ও টাইমস অব ইন্ডিয়া।

স্থানীয় সময় সকাল ১১টার পর রামমন্দির চত্বরে আসেন নরেন্দ্র মোদি। হাতে পূজার ডালা নিয়ে ধীরে ধীরে গর্ভগৃহের দিকে এগিয়ে যান তিনি। পরে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) প্রধান মোহন ভাগবতের সঙ্গে হাতে পদ্মফুল নিয়ে বসেন পূজায়। খুলে দেওয়া হয় রামমন্দিরের গর্ভগৃহে রামলালার বিগ্রহের চোখের বাঁধন।

রামমন্দির চত্বরে দেওয়া বক্তব্যে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘রামের অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। আমাদের বিচারবিভাগ বিচার সুনিশ্চিত করেছে। আইন মেনেই তৈরি হয়েছে মন্দির।’

‘২২ জানুয়ারি নতুন যুগের শুরু’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘রাম বিবাদ নয়, সমাধান। আর এই রামমন্দির শুধু মন্দির নয়, ভারতের দর্শনও।’

এই মন্দির উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ভারতের ইতিহাসের পাতায় যুক্ত হলো নতুন অধ্যায়। ৩১ বছর আগে গুঁড়িয়ে দেওয়া বাবরি মসজিদের জায়গায় এই মন্দির। ভোটের কয়েক মাস আগে এই মন্দির উদ্বোধন নরেন্দ্র মোদির জয়ের সম্ভাবনাকে দৃঢ় করবে বলে মনে করা হচ্ছে। ১৬ শতকের ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ নিয়ে বহুকাল ধরে যে বিতর্ক চলে আসছে, সেখানে মন্দির তৈরির মাধ্যমে মোদির দীর্ঘদিনের প্রতিশ্রুতি এবং হিন্দু জাতীয়তাবাদীদের স্বপ্ন পূরণ হলো।

১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদটি গুঁড়িয়ে দিয়েছিল হিন্দু জনতা। সেই হামলা পুরো ভারতকে বদলে দেয় এবং দেশের হিন্দু জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে চাঙ্গা করে। এ কারণে আজকের অনুষ্ঠানটি অত্যন্ত বিতর্কিত।

১ হাজার ৮০০ কোটি রুপিরও বেশি খরচ করে হিন্দু দেবতা রামচন্দ্রের নামে এ মন্দির গড়ে তোলা হয়েছে। কয়েকজন হিন্দুত্ববাদী নেতা এ শহরকে বলছেন ‘হিন্দুদের ভ্যাটিকান’।

বিলাসবহুল এ মন্দির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সাত হাজারেরও বেশি মানুষকে ব্যক্তিগতভাবে অযোধ্যায় আমন্ত্রণ জানানো হয়। এ ছাড়া হাজারো ধর্মপ্রাণ হিন্দু মন্দিরের ভেতরে ফুল ও উপহার রাখার জন্য ছোট শহরটিতে ভিড় করেন।

এদিকে রামমন্দির ঘিরে অযোধ্যা শহরের চেহারা পাল্টে দেওয়া হয়েছে। কয়েক হাজার কোটি রুপির যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে রাস্তাঘাটের সম্প্রসারণ, একটি ঝাঁ চকচকে নতুন বিমানবন্দর, একটি বিশাল রেলস্টেশন এবং একটি বহুতল গাড়ি পার্কিং। এ জন্য তিন হাজারেরও বেশি বাড়ি, দোকান ও ধর্মীয় অবকাঠামো সম্পূর্ণ বা আংশিক ভেঙে ফেলা হয়েছে। এখানে এখন জমির দাম আকাশ ছুঁয়েছে।

Share