রাষ্ট্রপতি মাসব্যাপী বাণিজ্যমেলার উদ্বোধন করবেন

নিজস্ব প্রতিবেদক :  আর তিনদিন পরই শুরু হচ্ছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা-২০১৯। বুধবার (৯ জানুয়ারি) বিকেলে এবারের মেলা উদ্বোধন করবেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। প্রতিবারের মতো এবারও মেলা প্রাঙ্গণজুড়ে থাকবে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নচিত্রের ছাপ। এবার মেলার প্রধান ফটক নির্মিত হচ্ছে মেট্রোরেলের আদলে। গতবার এটি ছিলো পদ্মাসেতুর আদলে।

উল্লেখ্য, ১ জানুয়ারি থেকে মেলা শুরু হওয়ার কথা থাকলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে এবার ৯ জানুয়ারি শুরু হচ্ছে বাণিজ্যমেলা।

এ বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব তপন কান্তি ঘোষ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যস্ততার কারণে ৯ জানুয়ারি বুধবার বিকেল ৩ টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ মেলার উদ্বোধন করবেন।

মাসব্যাসী এ আন্তর্জাতিক মেলা চলবে ৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এবারের মেলাকে সফল করতে এরইমধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মেলায় থাকবে ফায়ার ইউনিটি ও মেডিকেল টিম। বিভিন্ন স্থানে পাঁচটি বিশ্রামাগারের ব্যবস্থা থাকবে। ধূলো কমাতে পানি ছিটানো হবে। মেলার পরিবেশ পরিষ্কার রাখতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া বাণিজ্যমেলায় বেশি বেশি বিদেশি ক্রেতা অংশ নেবেন এটাই প্রত্যাশা। এরজন্য যা কিছু করণীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সব করবে।

তিনি বলেন, ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলায় সার্বক্ষণিক নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পোশাকধারী পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি সাদা পোশাকের গোয়েন্দা পুলিশ সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করবেন। নিরাপত্তার স্বার্থে মেলাস্থলে সব ধরনের হকার ও ভিক্ষুক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফুডকোর্টের অনিয়ম রুখতে বাধ্যতামূলক রাখতে হবে মূল্যতালিকা। এছাড়া, ইভটিজিংরোধে মেলা প্রাঙ্গণে পুলিশের বিশেষ টিম দায়িত্ব পালন করবে।

নিরাপত্তা বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের ( ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ইতোমধ্যে বাণিজ্য মেলাকে ঘিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে অনিয়ম রুখতে মেলায় ফুডকোর্টে মূল্যতালিকা প্রদর্শন করা না হলে মেলা কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় সেই স্টল বন্ধ করে দেবে পুলিশ। এছাড়া মেলায় টিকিট কালোবাজারি ও ইভটিজিং রোধে থাকবে পুলিশের বিশেষ টিম। মেলার ভেতর সুবিধাজনক স্থানে চারটি হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হবে। মেলার ভেতর থাকবে প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা। মেলা প্রাঙ্গণে মোটরসাইকেল চালানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।

জানা গেছে, মেলায় যাতে গতবারের থেকে বেশি বিদেশি ক্রেতা অংশ নিতে পারেন সেজন্য সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন দূতাবাসে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া মেলায় বিদেশি ক্রেতা টানতে এবং করণীয় ঠিক করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দিক নির্দেশনা চাওয়া হচ্ছে। বিদেশি মিডিয়ায় বিজ্ঞাপণের পাশাপাশি ডিজিটাল প্লাটফর্মে ক্যাম্পেইনও চালানো হবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এবারের মেলায় স্থান পাবে সংরক্ষিত নারী স্টল ২০টি, প্রিমিয়ার প্যাভিলিয়ন ৬০টি, প্রিমিয়ার মিনি প্যাভিলিয়ন ৩৮টি, সাধারণ প্যাভিলিয়ন ১৮, সাধারণ মিনি প্যাভিলিয়িন ২৯টি, প্রিমিয়ার স্টল ৬৭টি, রেস্টুরেন্ট তিনটি, সংরক্ষিত প্যাভিলিয়ন নয়টি, সংরক্ষিত মিনি প্যাভিলিয়ন ছয়টি ও বিদেশি প্যাভিলিয়ন ২৬টি। আর এসবের কাজ অনেকাংশে এগিয়ে গেছে।

শুরু হয়েছে ২০১টি সাধারণ স্টল ও ২২টি ফুড স্টলের কাজ। এখানে রেডিমেড গার্মেন্টস, হোমটেক্স, ফেব্রিকস পণ্য, হস্তশিল্পজাত, পাটজাত, গৃহস্থালি ও উপহারসামগ্রী, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, তৈজসপত্র, সিরামিক, প্লাস্টিক, পলিমার পণ্য, কসমেটিকস হারবাল ও প্রসাধনী সামগ্রী, খাদ্য ও খাদ্যজাত পণ্য, ইলেকট্রিক ও ইলেকট্রনিকস সামগ্রী, ইমিটেশন ও জুয়েলারি এবং নির্মাণসামগ্রী ও ফার্নিচার এসব স্টল থাকবে।

দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের স্টল ও প্যাভিলিয়ন মিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৫০০ প্রতিষ্ঠান অংশ নেবে বাণিজ্য মেলায়। এবার নতুন করে চার থেকে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান আবেদন করেছে। তবে আমাদের দেশীয় প্যাভিলিয়ন মাত্র ২৬টি। তাই এবার একক দেশগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। দেশগুলো হলো- ভারত, পাকিস্তান, চীন, ব্রিটেন, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া, ইরান, থাইল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, সিঙ্গাপুর, ভুটান, নেপাল, মরিশাস, ভিয়েতনাম, মালদ্বীপ, রাশিয়া, আমেরিকা, জার্মানি, সোয়াজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, হংকংসহ বিভিন্ন দেশ।

Share