লঞ্চে সন্তানের জন্ম, আজীবন যাতায়াত ফ্রি

নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : ঢাকা থেকে লঞ্চে বরিশাল যাচ্ছিলেন ফাহিমা বেগম। বাড়িতে সন্তান প্রসবের উদ্দেশেই স্বামীর সঙ্গে লঞ্চে যাত্রা করেন তিনি। কিন্তু মাঝ নদীতেই ফাহিমার প্রসব ব্যথা ওঠে। শেষ পর্যন্ত লঞ্চেই ফুটফুটে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি।

এ ঘটনায় ফাহিমা ও তার স্বামী ফোরকান হাওলাদারকে আজীবন বিনা ভাড়ায় ওই লঞ্চে যাতায়াতের সুযোগ করে দিয়েছে লঞ্চ কোম্পানি। সদ্যজাত শিশুটিও ১২ বছর পর্যন্ত বিনা ভাড়ায় এই লঞ্চে যাতায়াত করতে পারবে।

শনিবার রাত পৌনে ১২টায় ঢাকা-বরিশাল রুটের লঞ্চ অ্যাডভেঞ্চার- ৯ এ সন্তান প্রসবের ঘটনাটি ঘটে। এতে লঞ্চটিতে উৎসবের পরিবেশ তৈরি হয়।

ফাহিমা-ফোরকান দম্পতির বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার দুধল গ্রামে।

অ্যাডভেঞ্চার- ৯ লঞ্চের সুপারভাইজার সাইফুল ইসলাম জানান, রাত ১১টার দিকে ওই নারীর প্রসব ব্যথা ওঠে। এসময় প্রসবে সহায়তা করার জন্য লঞ্চের মাইকে ঘোষণা দেওয়া হয়। যাত্রীদের মধ্যে কেউ ধাত্রী পেশায় অভিজ্ঞ আছেন কি-না তা জানতে চাওয়া হয়। তখন কেবিনের যাত্রী ও শেরে বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. শাহনাজ শারমীন এগিয়ে আসেন। তাকে সহায়তায় এগিয়ে আসেন আরও কয়েকজন নারী যাত্রী ও লঞ্চের কর্মচারী। তারা ফাহিমা বেগমকে লঞ্চের ২১০ নম্বর কেবিনে নিয়ে যান। সেখানে তিনি নিরাপদে কন্যা সন্তান প্রসব করেন।

সুপারভাইজার আরও জানান, লঞ্চমালিক নিজাম উদ্দিন খুশি হয়ে তার প্রতিষ্ঠান ‘নিজাম শিপিং লাইন্স’-এর সঙ্গে মিলিয়ে নবজাতকের নাম রাখেন ‘নুসাইবা’। আর ওই দম্পতিকে আজীবন তাদের লঞ্চে বিনামূল্যে ভ্রমণ সুবিধারও ঘোষণা দেন তিনি।

ফোরকান হাওলাদার জানান, তার স্ত্রীর সন্তান প্রসবের নির্ধারিত তারিখ ছিল ২২ অক্টোবর। এজন্য তারা লঞ্চে বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে লঞ্চেই তার মেয়ের জন্ম হয়।

রোববার সকালে বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় হাসপাতালে মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর ওই দম্পতি সন্তানসহ গ্রামের বাড়িতে চলে যান।

Share