নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : পৃথিবীর ছায়ায় চাঁদ ঢেকে যাবে ধীরে ধীরে। এই চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদ পৃথিবীর খুব কাছে চলে আসে। এ সময় চাঁদকে স্বাভাবিকের চেয়ে বড় ও উজ্জ্বল দেখাবে। চাঁদের রং হবে রক্তিম। জ্যোতির্বিজ্ঞানের ভাষায়, একে বলে ‘সুপার ব্লাড মুন’।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার আকাশে ঘটবে এমন মহাজাগতিক ঘটনা। এই চন্দ্রগ্রহণ যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও এশিয়ার কিছু জায়গা থেকে দেখা যাবে। তবে আকাশ পরিষ্কার থাকলে বাংলাদেশ থেকেও এই চন্দ্রগ্রহণ ও সুপার ব্লাড মুন দেখা যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের অ্যালফি দ্বীপ থেকে দক্ষিণ–পূর্ব দিকে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে এই চন্দ্রগ্রহণের গতিপথ হবে। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা ৯ মিনিটে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ শুরু হবে। কেন্দ্রীয় চন্দ্রগ্রহণ শুরু হবে আরও ৯ মিনিট পর। এরপর পূর্ণ গ্রহণ থেকে চাঁদ বেরিয়ে আসবে। পুরো প্রক্রিয়া শেষ হবে সন্ধ্যা ৭টা ৫১ মিনিটের দিকে।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, পূর্ণ এই চন্দ্রগ্রহণ শুরু হবে ঢাকার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৪১ মিনিটে। এই গ্রহণ শেষ হবে ৭টা ৫১ মিনিটে। আকাশ পরিষ্কার থাকলে বাংলাদেশ থেকে চন্দ্র উদয়ের পর থেকে চন্দ্রগ্রহণ শেষ হওয়া পর্যন্ত গ্রহণটি দেখা যাবে। তবে এই পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ এবং সুপার মুন যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও পূর্ব এশিয়া থেকে দেখা যাবে।
বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির চেয়ারম্যান মশহুরুল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, এবারের সুপারমুন ও চন্দ্রগ্রহণ বাংলাদেশ থেকে দেখা যেতে পারে, যদি আকাশ পরিষ্কার থাকে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের কারণে আকাশ ঢেকে আছে মেঘে। করোনার কারণে এবার এই চন্দ্রগ্রহণ দেখার জন্য কোনো শিবির আয়োজন করা হয়নি। নিজ নিজ বাসার ছাদ থেকে সোসাইটির সদস্যরা চন্দ্রগ্রহণ পর্যবেক্ষণ করবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ন্যাশনাল অ্যারোনটিকস অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা) বলছে, ২০২১ সালের অন্যান্য চন্দ্রগ্রহণের তুলনায় আজকে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণটিতে পৃথিবীর খুব কাছাকাছি অবস্থানে আসবে চাঁদ। এটাকেই সাধারণত সুপারমুন বলা হয়। এ সময় কেবল চাঁদের উজ্জ্বলতা ও আকার বাড়বেই না, পাশাপাশি এই সুপারমুন একটা ‘সুপারপাওয়ার’ নিয়ে আসবে, যেখানে চাঁদের রং পরিবর্তন হয়ে লালচে দেখাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক গোলাম দস্তগীর আল–কাদেরী প্রথম আলোকে বলেন, সুপারমুনের সময় চাঁদকে অনেক বড় আকারে দেখাবে। এ সময় আলোর বিচ্ছুরণ বেশি হবে। লাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশি। তাই লাল রংটাই চোখে পড়বে মানুষের। অন্য রঙের আলোগুলো ছড়িয়ে পড়বে। তিনি বলেন, মানবসভ্যতার শুরু থেকে চন্দ্রগ্রহণ চমকপ্রদ এক ঘটনা। তবে বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে, এটি সাধারণ একটি ঘটনা। প্রাচীনকালে অবশ্য অনেকের কাছে এটি ভীতিকর ব্যাপার ছিল। তবে বিজ্ঞানমনস্ক ও আধুনিক মানুষেরা কৌতূহল নিয়ে এটি উপভোগ করেন। এখানে অলৌকিকতা নেই।