নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : সারাদেশে বজ্রপাত ও বিদ্যুৎস্পৃষ্টে ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। বজ্রপাতে মারা গেছে গবাদি পশু। আহত হয়েছেন অনেকেই। বৃহস্পতিবার দুপুরে মানিকগঞ্জ, ফরিদপুর, রংপুর, মাগুরা ও বগুড়ায় বজ্রপাতে এবং বিদ্যুৎস্পৃষ্টে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে।
আমাদের ঘিওর (মানিকগঞ্জ) সংবাদদাতা জানান, উপজেলার মৌহালী এলাকায় পুকুরে গোসল করতে যাওয়ার সময় বজ্রপাতে মঙ্গল চন্দ্র সরকার (৫৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। মঙ্গল চন্দ্র সরকার মৌহালী এলাকার লাল বিহারী চন্দ্র সরকারের ছেলে।
নগরকান্দা (ফরিদপুর) সংবাদদাতা জানান, নগরকান্দা ও সালথা বজ্রপাতে নারী, প্রবাসী ও কৃষকসহ তিনজন নিহত হয়েছেন।
নগরকান্দায় তালমা ইউনিয়নের দক্ষিণ বিলনালিয়া গ্রামের কৃষক ইমরান ব্যাপারি দুপুর দেড়টার দিকে পাট ধোয়ার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। এ সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলে তিনি নিহত হন। ইমরান ওই গ্রামের পাচু ব্যাপারির ছেলে।
অপরদিকে, সালথায় বজ্রপাতে মারা গেছেন মাঝারদিয়া ইউনিয়নের কাগদী গ্রামের মৃত ইদ্রিস আলীর স্ত্রী হাসি বেগম (৪৫)। বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে হাসি বেগম রান্না করছিলেন। এ সময় বজ্রপাতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে এলাকাবাসী উদ্ধার করে নগরকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক এসএম ফরহাদ তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে দুপুর সোয়া ১টার দিকে বাড়ির পাশে জমিতে কাজ করার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলে মারা গেছেন সালথা উপজেলার মাঝারদিয়া ইউনিয়নের বাতা গ্রামের বাসিন্দা বিল্লাল মাতুব্বর (৪৭)। সৌদি প্রবাসী বিল্লার মাতুব্বর ওই গ্রামের মৃত ইসমাইল মাতুব্বরের ছেলে।
আমাদের বগুড়া প্রতিনিধি জানান, বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় বজ্রপাতে নারীসহ তিনজন নিহত ও দুইজন আহত হয়েছেন। এ সময় বজ্রপাতে মারা গেছে ৫টি গরু।
বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের ডাকাতমারা চরে গরু নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে ঘটনাস্থলে নূরু প্রামানিকের ছেলে আমিরুল ইসলাম (৪০) ও তার স্ত্রী ফাইমা বেগম বেলচা (৩০) ঘটনাস্থলে নিহত হন। এ সময় তাদের ৫টি গরু মারা যায়।
একই সময় সদর ইউনিয়নের নিজ বাটিয়া চরের তহসিনের ছেলে সুমন (৩২) পাট ধোওয়ার সময় বজ্রপাতে আহত হন। তাকে সারিয়াকান্দি হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এছাড়াও নিজাম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী তানিয়া খাতুন (১৫) স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে বজ্রপাতে আহত হয়। সারিয়াকান্দি পৌর এলাকার সুমন (২১) কালিতলা গ্রোয়েণ বাঁধে চায়ের দোকানে বজ্রপাতে আহত হয়।
আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন । সারিয়াকান্দি থানার অফিসার ইনচার্জ আল আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মাগুরা প্রতিনিধি জানান, বৃহস্পতিবার বিকালে মাগুরা সদর উপজেলার বাড়িয়ালা গ্রামে বজ্রপাতে অলিপ বিশ্বাস (৩৫) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। তিনি মাগুরা সদর উপজেলার নলদাহ গ্রামের অরুপ বিশ্বাসের ছেলে। নিহত অলিপ বিশ্বাস বৃষ্টির মধ্যে ট্রাক্টরে করে জমিচাষ করার সময় বজ্রপাতে অলিপ বিশ্বাস গুরুতর আহত হন। তাকে মাগুরা সদর হাসপাতালে আনা হলে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
অপরদিকে আমাদের নন্দীগ্রাম (বগুড়া) সংবাদদাতা জানান, নন্দীগ্রামে মরিচ ক্ষেতে সেচ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে আব্দুল বারিক (৩০) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। বারিক নন্দীগ্রাম পৌর এলাকার কচুগাড়ী মহল্লার আব্দুর রউফের ছেলে। বৃহস্পতিবার দুপুরে কচুগাড়ী মাঠে গভীর নূলকুপের বিদ্যুতের সুইচ দিতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানায়, দুপুরে গভীর নলকূপের বিদ্যুতের সুইচ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায় আব্দুল বারিক। নন্দীগ্রাম পৌরসভার মেয়র কামরুল হাসান সিদ্দিকী জুয়েল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
মিঠাপুকুর (রংপুর) সংবাদদাতা জানান, রংপুরের মিঠাপুকুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে উজ্জল চন্দ্র (১৮) নামে এক পরিবহন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাতে বৈদ্যুতিক ফ্যান লাগাতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। উজ্জ্বল উপজেলার বড় হযরতপুর ইউনিয়নের চিথলী পশ্চিমপাড়া গ্রামের নারায়ণ চন্দ্রে ছেলে।