সুন্দরবনে হরিণ শিকারি চক্র আটক উদ্ধার তালিকায় হরিণ এবং শিকার সরঞ্জাম নেই

আবু বকর : অনেক নাটকীয় ঘটনার পর অবশেষে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারি বন সংরক তার উর্ধতন খুলনার বিভাগীয় বন সংরক্ষক (পশ্চিম জোন) এর  নির্দেশে রাত সাড়ে ৩টার দিকে স্টেশন কর্মকর্তা কবির উদ্দীন সুন্দরবনের পশুরতলা খাল থেকে ট্রলার সহ হরিণ শিকারি চক্রদের আটক করেছে। তবে শিকারি চক্রদের রায় শিকারকৃত ১০টি হরিণ এবং শিকারিদের সরঞ্জাম জব্দ না থাকায় পুরো বিষয়টি প্রশ্ন সৃষ্টি করেছে। বন বিভাগ একটি ইঞ্জিন চালিত ট্রলারসহ ৩ জনকে আটকের কথা বললেও তাদের সঙ্গী ৯ জনসহ হরিণ শিকারির সরঞ্জাম ছেড়ে দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

১০টি হরিণসহ ছেড়ে দেয়া সদস্যের মধ্যে ছয় জন হলো, গাবুরার ৯নং সোরা গ্রামের জিন্নান আলী,বিল্লাল হোসেন,সাহেব আলী,বুড়িগোয়ালিনীর আনিছুর রহমান,আল আমিন,মোস্তফা। বাকী তিন জনের নাম জানা যায়নি।এবিষয়ে গত রাতে শিকারি চক্রদের আটকের আগে“পশ্চিম সুন্দরবনের মান্দার বেড়িয়া এলাকায় ১০টি শিকারকৃত হরিণ সহ শিকারি চক্র লোকালয়ে ফেরার অপেক্ষায় রয়েছে!” এমন সংবাদের ভিত্তিতে সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা রফিক আহম্মেদকে জানালে তিনি বিষয়টি আমলে না নিয়ে এড়িয়ে যান। শনিবার রাত ৯ টার দিকে বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে জানানো হয়। বুড়িগোয়লীনীর আকবার, মুজাহিদ সহ সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, শিকারি চক্র গত ২৫ এপ্রিল একটি দুই সিলিন্ডার ইঞ্জিন চালিত ট্রলার নিয়ে মান্দার বেড়িয়া এলাকায় হরিণ শিকারে গেছে। সূত্র জানায়, সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারি বন সংরক রফিক আহম্মেদ এবং স্টেশন কর্মকর্তা কবির উদ্দীন এর সম্মতি নিয়ে চক্রটি হরিণ শিকারে গেছে। সন্ধ্যায় শিকারি চক্রের অবস্থান পুস্পকাটির ওসি মহসীনকে জানানো হলে তিনি সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে মান্দার বেড়িয়ার গহীণ অরণ্যে পৌছে শিকারিদের গতিরোধ করে। এসময় শিকারি দল মহসীনকে জানান, ট্রলারটি স্থানীয় সাংবাদিক হালিমের এবং এ বিষয় এসিএফ ও এসো অবগত আছেন। তখন মহসীন তাদের ছেড়ে দিয়ে চলে যায়। এই প্রতিবেদক রাতে বিষয়টির বিস্তারিত খুলনার বিভাগীয় বন সংরক্ষক (পশ্চিম জোন) বসিরুল আল মামুনকে জানালে তিনি জানান যে, ইতিমধ্যে তিনি এ বিষয়ে অবগত হয়ে শিকারি চক্রকে ধরার জন্য সহকারি বন সংরক্ষক রফিক আহম্মেদ ও স্টেশন কর্মকর্তা কবির উদ্দীনকে নির্দেশ দিয়েছেন। বুড়িগোয়ালীনী স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা কবির উদ্দীন নির্দেশ মোতাবেগ সুন্দরবনের পশুর তলা খাল থেকে রাত সাড়ে ৩ টার সময় হরিণ চক্রের ট্রলার আটক করে। রফা দফার মধ্য দিয়ে হরিণ ও হরিণ মারা সরঞ্জাম সহ ৯ জন শিকারি চক্রকে ছেড়ে দিয়ে ট্রলার সহ তিন জনকে আটক করে নিয়ে আসে। এঘটনায় তড়ি ঘড়ি করে স্টেশন কর্মকর্তা কবির উদ্দীন বাদী হয়ে বন আইনে তিন জনকে আসামী করে মামলা দায়েরের মাধ্যমে আসামীদের জেল হাজতে প্রেরন করেছেন। আটককৃত আসামীরা হলো, বুড়িগোয়ালীনী গ্রামের আমজাদ মোল্লার ছেলে আব্দুল হাকিম, আজিজুল ও কয়রা উপজেলার জোরশিং গ্রামের সাত্তার সানার ছেলে আশরাফুল। মামলা নং ৭৬। তারিখ ১৮/৪/২০১৯।

উল্লেখ্য গত বছরের ৬ই জুলাই চান্চল্যকর ২২ হরিণ শিকারের তথ্য প্রথমে রেঞ্জ কর্মকর্তাকে জানানো হলেও তিনি গুরুত্ব দেননি। পরে কোস্টগার্ড এবং বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে জানিয়ে শিকারি চক্রদের আটক করা হয়। এ বিষয়ে পরবর্তীতে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হলে বিচার বিভাগীয় তদন্তের রুল হয়। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে।

 

Share