
নিজস্ব প্রতিবেদক : ছাত্র–জনতার গণ–অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সেনানিবাসের ভেতরে প্রাণ রক্ষায় আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের মধ্যে রাজনৈতিক ব্যক্তি চিরৈন ২৪ জন, বিচারক ছিলেন ৫ জন এবং অসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা ছিলেন ১৯ জন। বাদ বাকি ৫১৫ জনই ছিলেন পুলিশ সদস্য। তাদের মধ্যে ৪৩৫ জন আশ্রয় নিয়েছিলেন ঢাকার সাভার সেনানিবাসে।
সে সময়ে শুধু মানবিক দায়বদ্ধতার কারণে আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড থেকে আশ্রয়প্রার্থীদের জীবন রক্ষা করাই মুখ্য উদ্দেশ্য ছিল বলে সেনাবাহিনীর বৃহস্পতিবার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।
সেনাবাহিনীর প্রকাশিত তালিকায় দেখা যায়, তৎকালীন পুলিশ মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনসহ পুলিশের বিভিন্ন স্তরের ৫১৫ জন কর্মকর্তা ও সদস্য ওই সময় সেনানিবাসে সাময়িকভাবে অবস্থান নেন। তাদের মধ্যে কেবল সাভারেই আশ্রয় নিয়েছিলেন ৪৩৫ জন। তবে এদের সবাই ঢাকা জেলা পুলিশের কর্মকর্তা কি না, কিংবা তারা সাভার, আশুলিয়া, ধামরাই থানা বা জেলা পুলিশের অন্য কোনো ইউনিটে কর্মরত ছিলেন কি না, তা তালিকায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়নি।
আইএসপিআরের তথ্য অনুযায়ী, সাভারে আশ্রয় নেওয়া ৪৩৬ জনের মধ্যে ৪৩৫ জন পুলিশ সদস্য এবং বাকি একজন জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) কর্মকর্তা।
পুলিশ সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন ৩ জন পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর), ১১ জন উপ-পরিদর্শক (এসআই), ২৩ জন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই), ২ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট টাউন সাব-ইন্সপেক্টর (এটিএসআই), ৩ জন সার্জেন্ট, ৬ জন নায়েক এবং ৩৮৭ জন কনস্টেবল। এই সংখ্যাগুলো থেকে ধারণা পাওয়া যায়, সেই সময় সাভার ও আশপাশের এলাকার পরিস্থিতি কতটা উত্তপ্ত ছিল।
আইএসপিআরের তথ্যে আরো জানা যায়, আশ্রয় নেওয়া বাকি ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন ২৪ জন রাজনৈতিক ব্যক্তি, ৫ জন বিচারক এবং ১৯ জন অসামরিক প্রশাসনের কর্মকর্তা।
পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ঢাকায় আশ্রয় নেন ১১ জন, বগুড়ায় ১ জন, চট্টগ্রামে ১৭ জন, কুমিল্লায় ২১ জন, যশোরে ১ জন, রাজশাহীতে ২১ জন, রংপুরে ১ জন এবং সিলেটে ৫ জন।
আইএসপিআরের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তৎকালীন বিরাজমান নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে আশ্রয় প্রার্থীদের জীবন বিপন্ন হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা ছিল।
কিন্তু দুঃখজনকভাবে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তিকর সংবাদ ছড়িয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার পাশাপাশি জনগণের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করার অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সবাইকে এ ধরনের বিভ্রান্তিমূলক অপপ্রচার থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি পেশাদারত্ব, নিষ্ঠা ও আস্থার সঙ্গে জাতির পাশে থাকার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছে।