নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে চলমান ছুটি আগামী ১২ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এরপর আগামী ১৩ জুন থেকে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে। আমাদের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। আমরা ক্লাস নিতে পারব।
মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ফলে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। এ কারণে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে ২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। বুধবার (২৬ মে) দুপুর ১২টায় এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।
মন্ত্রী জানান, চলতি বছরে এসএসএসি পরীক্ষার্থীরা ৬০ দিন এবং এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা ৮৪ দিন ক্লাসের পর পরীক্ষায় অংশ নেবে। আর ২০২২ সালের পরীক্ষার্থীরা যথাক্রমে ১৫০ দিন ও ১৮০ দিন ক্লাস করে পরীক্ষায় অংশ নেবে। ২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে অনুষ্ঠিত হবে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান শিক্ষামন্ত্রী।
গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। গত ২৯ এপ্রিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২৩ মে খোলা হবে। পরে তা আরেক দফা বাড়িয়ে ২৯ মে করা হয়। কয়েক ধাপে বাড়ানোর পর সেই ছুটি এবার ১২ জুন পর্যন্ত বাড়লো। চলমান করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতির কারণে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মচারী ও অভিভাবকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও সার্বিক নিরাপত্তার বিবেচনায় এবং কোভিড ১৯ সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির সঙ্গে পরামর্শক্রমে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের চলমান ছুটি বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এদিকে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পক্ষে-বিপক্ষে নানা মত রয়েছে অভিভাবকদের। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর বলছে, বেশির ভাগ অভিভাবক স্কুল খোলার বিপক্ষে। যদিও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাগুলোর জরিপ বলছে ভিন্ন কথা। সম্প্রতি পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বিআইজিডি) যৌথ গবেষণা জরিপে দেখা যায়, করোনার বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের ৯৭ শতাংশ অভিভাবক তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে চান। দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রাথমিকের ১৯ শতাংশ ও মাধ্যমিকের ২৫ শতাংশ শিক্ষার্থী শিখতে না পারার ঝুঁকিতে রয়েছে।
আবার সরকারের সিদ্ধান্ত আছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার আগে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেওয়া। সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব এমন তথ্যই জানিয়েছেন। কিন্তু কতসংখ্যক শিক্ষার্থীকে দ্রুত সময়ে টিকার আওতায় আনা যাবে, এ প্রশ্ন রয়েই যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে থাকা ১ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়ার জন্য তাদের তালিকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে পাঠানো হলেও অনেক শিক্ষার্থী এখনো টিকার প্রথম ডোজই দেয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয় খোলার দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এই দাবিতে গত সোমবার দেশের বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধনও করেছেন তারা। এছাড়া অনলাইনের পরিবর্তে সরাসরি পরীক্ষা ও ক্লাসে অংশ নেওয়ারও দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, অনলাইন শিক্ষায় বৈষম্য হচ্ছে। যারা মফস্বলে থাকছেন, ইন্টারনেটের দুর্বলতার কারণে তারা কিছুই শিখতে পারছেন না।