নিজস্ব ডেস্ক প্রতিবেদক : ইতালি, জাপান, পোল্যান্ড, পর্তুগাল, দক্ষিণ কোরিয়া, স্পেন, থাইল্যান্ডসহ ২০টিরও বেশি দেশে ২১০০ সালে জনসংখ্যা অর্ধেকে নেমে আসবে।লানসেটের এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ২১০০ সালে পৃথিবীর জনসংখ্যা হবে ৮৮০ কোটি, জাতিসংঘের অনুমানের চেয়ে যা ২০০ কোটি কম। বুধবার প্রকাশিত ওই সমীক্ষায় বলা হয়েছে, জন্মহার হ্রাস ও বয়স্কদের আয়ু তুলনামূলক বেড়ে যাওয়ার কারণে জনসংখ্যার এ অবস্থা হবে।
এতে আরও বলা হয়, বর্তমানে চীনের জনসংখ্যা ১৪০ কোটি, তবে আগামী ৮০ বছরের মধ্যে অর্থাৎ শতকের শেষে তা নেমে আসবে ৭৩ কোটিতে। বিশ্বের ১৯৫টি দেশের মধ্যে ১৮৩টি দেশে অভিবাসীদের বাদ দিয়ে জনসংখ্যার স্তর বজায় রাখতে হিমশিম খাবে। সাব সাহারার অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোতে জনসংখ্যা তিনগুণ হয়ে যাবে। সেখানে ৩০০ কোটি মানুষ বাস করবে। নাইজেরিয়ায় জনসংখ্যা হবে ৮০ কোটি। সেসময় ভারতের জনসংখ্যা থাকবে ১১০ কোটি।
অবশ্য জনসংখ্যার এই হ্রাসকে পরিবেশের জন্য সুখবর হিসেবে বর্ণনা করেছেন ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের ইন্সটিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভালুয়েশনের শীর্ষ গবেষক ক্রিস্টোফার মারে। তার মতে, এ পূর্বাভাসগুলোর অবশ্য কিছু ইতিবাচক দিক রয়েছে। এগুলো খাদ্যের ওপর চাপ কমানোর সম্ভাবনা তৈরি করছে। সাব সাহারা এলাকার কিছু অংশের জন্য অর্থনৈতিক সুযোগ ও পরিবেশ দূষণ রোধের মতো সুসংবাদও রয়েছে এ সমীক্ষায়। তবে আফ্রিকার বাইরের দেশগুলো কর্মক্ষেত্রের সঙ্কীর্ণতার কবলে পড়বে ও তাদের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এই বিভাগে উচ্চ আয়ের দেশগুলোর জন্য জনসংখ্যা স্তর ঠিক রাখা এবং অর্থনৈতিক বৃদ্ধি বজায় রাখার সর্বোত্তম উপায় হলো পরিবারগুলোর জন্য নমনীয় ইমিগ্রেশন নীতি ও সামাজিক সহায়তা বজায় রাখা- সমীক্ষায় এমনটাই ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে এমন সতর্কতাও দেয়া হয়েছে যে, কিছু কিছু দেশের ভুল নীতির কারণে তাদের প্রজননন স্বাস্থ্যসেবায় খারাপ প্রভাব পড়বে এবং তা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
প্রজনন হ্রাস ও বয়স্ক লোকের বেশিদিন বেঁচে থাকার কারণে ২১০০ সালে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা কম পক্ষে ৪০ শতাংশ হ্রাস পাবে। ২০১৭ সালে যে সংখ্যাটি ৬৮ কোটি, সেটি ২১০০ সালে ৪০ কোটিতে নেমে আসবে।
অন্যদিকে বিশ্বের মোট সংখ্যার চার ভাগের এক ভাগ লোকের বয়স হবে ৬৫ বছরের ওপরে। আর বর্তমানে আশি বছরের লোকসংখ্যা ১৪ কোটি থেকে ২১০০ সালে উন্নীত হবে ৮৬ কোটিতে। এতে করে কর্মবয়সী মানুষের সংখ্যা কমে যাবে। কোনো কোনো দেশে তার তীব্র অভাবও অনুভূত হবে। ইন্সটিটিউট ফর হেলধ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভালুয়েশনের গবেষক প্রফেসর স্টেইন এমিল ভোসেটের মতে, এর ফলে অল্প সংখ্যক কর্মী ও করদাতা নিয়ে সমাজে একটা অচলাবস্থার সৃষ্টি হতে পারে।
যেমন, চীনে শতাব্দীশেষে কর্মীলোকের সংখ্যা ৬২ শতাংশ কমে ৯৫ কোটি থেকে ৩৫ কোটিতে চলে আসবে। ভারতে অবশ্য অতটা খারাপ অবস্থা হবে না। তবু বর্তমানের ৭২ কোটি থেকে নেমে তা চলে আসবে ৫৫ কোটিতে। ওদিকে নাইজেরিয়ায় দেখা যাবে এর বিপরীত চিত্র। বর্তমানে দেশটিতে কর্মী লোকের সংখ্যা সাড়ে আট কোটি। ২১০০ সালে সংখ্যাটা দাঁড়াবে ৪৫ কোটিতে। সূত্র: আল জাজিরা