নয়াবার্তা প্রতিবেদক : কৃষ্ণা রানী সরকার, সানজিদা আক্তার ও শামসুন নাহারের লাগেজ থেকে অর্থ চুরির ঘটনায় মতিঝিল ও বিমান বন্দর থানায় দুটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। পাশাপাশি র্যাব, এপিবিএনসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এ ঘটনার তদন্তে কাজ শুরু করেছে।
এদিকে জিডি দায়েরের পর এ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের একাধিক ইউনিট, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র্যাব) ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন। সংস্থাগুলো এরই মধ্যে সিসি টিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করার পাশাপাশি অন্যদিকগুলোও খতিয়ে দেখছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের উত্তরা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মোর্শেদ আলম জানিয়েছেন, ‘চুরির ঘটনায় বিমানবন্দর এলাকার একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করছি আমরা। একইভাবে সক্রিয় হয়েছে বিমানবন্দরে দায়িত্ব পালন করা আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নও।’
সাফ শিরোপা জয়ী নারী দলের সদস্য সানজিদাসহ কৃষ্ণা রাণী সরকারের লাগেজে থাকা ৯০০ ডলার ও বাংলাদেশি টাকা মিলিয়ে প্রায় দেড় লাখ টাকা এবং দলের অপর সদস্য শামসুন নাহারের ৪০০ ডলার চুরি হয়। দলের ফিজিও’র কিছু মূল্যবান সামগ্রীও চুরি হয়েছে বলে বাফুফে থেকে জানানো হয়েছে। রাতে বাফুফে ভবনে লাগেজ হাতে পেয়ে ফুটবলাররা বুঝতে পারেন তাদের লাগেজ থেকে অর্থ ও জিনিসপত্র খোয়া গেছে।
বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) নারী বিভাগের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ বলেছেন, ‘শেষপর্যন্ত চুরি শনাক্ত না করা গেলে খোয়া যাওয়া অর্থ আমরা ফুটবলারদের দিয়ে দেব।’
এদিকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলেছে, সাফজয়ী দুই ফুটবলারের লাগেজ থেকে ডলার, কাপড়চোপড় ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক জিনিস চুরি হওয়ার সত্যতা পাওয়া যায়নি। আজ বৃহস্পতিবার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মো. কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এমনটাই বলা হয়েছে।
গতকাল বুধবার নেপাল থেকে ঢাকায় ফেরার পর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ফুটবলার কৃষ্ণা রানী সরকার ও শামসুন্নাহারের লাগেজ থেকে ডলার, কাপড়চোপড় ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক জিনিস খোয়া যাওয়ার অভিযোগ ওঠে। বলা হয়, কৃষ্ণার লাগেজ থেকে ৪০০ ডলার ও শামসুন্নাহারের লাগেজ থেকেও কিছু নেপালি টাকা ও কাপড়চোপড় খোয়া যায়।
বিমানবন্দরের ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সাফজয়ী মহিলা ফুটবল দল বুধবার বেলা ১টা ৪২ মিনিটে উড়োজাহাজে (বিজি-৩৭২) করে কাঠমাণ্ডু থেকে ঢাকায় অবতরণ করে। পরে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) প্রতিনিধি ইমরানের কাছ থেকে এবং গণমাধ্যম ও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফুটবল দলের দুই নারী সদস্যের হাতব্যাগ থেকে ডলার ও টাকা চুরির অভিযোগ পাওয়া যায়। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে হজরত শাহজালাল বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ক্লোজড সার্কিট টিভি (সিসি) ফুটজে পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করে চুরির ঘটনার প্রমাণ পায়নি বলে নিশ্চিত হয়েছে।
সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণে দেখা যায়, সাফজয়ী ফুটবলারদের নিয়ে বুধবার বেলা ১টা ৪২ মিনিটে হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বেলা ১টা ৫৮ মিনিটে ব্যাগেজ মেকআপ এরিয়ার ট্রলি আসে। বেলা ১টা ৫৯ মিনিটে ব্যাগেজ মেকআপ এরিয়ার প্রথম লাগেজ ড্রপ হয়। বেলা ২টার দিকে কনভেয়ার বেল্ট-৮–এ প্রথম লাগেজ ড্রপ করা হয়। বেলা ২টা ৮ মিনিটে ব্যাগেজ মেকআপ এরিয়ার শেষ ব্যাগেজ ড্রপ হয়। পরে বাফুফে প্রটোকল প্রতিনিধি ও দুজন টিম অফিশিয়াল লাগেজ ট্যাগ চেক করে সম্পূর্ণ অক্ষত ও তালাবদ্ধ অবস্থায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে লাগেজগুলো বুঝে নিয়ে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন।
এর আগে সকালে বিমানবন্দরে দায়িত্বরত এপিবিএন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক বলেছিলেন, ‘আমরা চুরির সংবাদ পাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছি।’