নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : আলোচিত ফরিদপুরের সংসদ সদস্য মুজিবর রহমান চৌধুরী ওরফে নিক্সন চৌধুরীকে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য করা হয়েছে।
জাতীয় সম্মলনের প্রায় এক বছরের মাথায় শনিবার সন্ধ্যায় ২০১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করে যুবলীগ। এতে প্রেসিডিয়াম সদস্যের তালিকায় ৯ নম্বরে রয়েছে তার নাম।
ফরিদপুর-৪ আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের হয়ে লড়া নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে হারিয়ে ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দুই দফায় স্বতন্ত্র সাংসদ হন নিক্সন চৌধুরী। আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগে আসার আগে দলীয় কোনো পদ ছিল না তার।
প্রেসিডিয়াম সদস্য হওয়ার পর রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে নিক্সন চৌধুরী লিখেছেন, ‘আমাকে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচিত করায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু কন্যা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সংগ্রামী সভাপতি ডক্টর ফজলে শামস পরশ ভাইকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।’
নিক্সন চৌধুরী সর্বশেষ বিতর্কে জড়ান গত অক্টোবরে। ওই সময় ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে উপনির্বাচনে ভোটগ্রহণ চলাকালে মোবাইল ফোনে তার ও চরভদ্রাসন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন সুলতানার কথোপকথনের একটি অডিও ভাইরাল হয়।
ওই অডিওতে এমপিকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনার এসিল্যান্ড-ভাঙ্গা আমার লোককে গাড়িতে তুলে নিছে। ওরে দালালি করতে মানা করেন।’ তারপর গালাগাল করতে শোনা যায়। এরপর বলেন, ‘সিগারেট খাওয়ার জন্য ওকে ধরছে, আপনি ওকে ছাড়তে বলেন। আমি আসতাছি চরভদ্রাসন, পাঁচ মিনিট সময় দিলাম এর মধ্যে ছেড়ে না দিলে উপজেলা ঘেরাও করব আমি।’
ওই নির্বাচন শেষে রাতে ফলাফল ঘোষণার পর একটি বিজয় সমাবেশ হয় চরভদ্রাসন উপজেলা সদরের স্থানীয় আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে। সেখানে এমপি নিক্সন চৌধুরী জেলা প্রশাসক অতুল সরকারকে হুঁশিয়ার করে দেন। ডিসির উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আমি যদি নেতাকর্মীদের নিয়ে নামি, তবে আপনি এক মিনিট দম নেওয়ার সুযোগ পাবেন না।’
এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক (ডিসি), উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ (ইউএনও) স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ‘দুর্ব্যবহার’ করার অভিযোগ এনে নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে চিঠি দেন ফরিদপুরের ডিসি অতুল সরকার। নির্বাচনকালীন ঘটনা হওয়ায় এরপর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে মন্ত্রিপষিদ বিভাগ থেকে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি পাঠানো হয়।
ফরিদপুরের জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা নওয়াবুল ইসলাম ১৫ অক্টোবর চরভদ্রাসন থানায় সাংসদ নিক্সন চৌধুরীর বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের এ মামলায় এমপি নিক্সনকে আগাম জামিন দেন হাইকোর্ট।