নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনাভাইরাসের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগ এবং দেশের অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ রেখে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে সীমিত পরিসরে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের আদেশক্রমে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে আজ মঙ্গলবার এ তথ্য জানা গেছে।
এর আগে করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে ১২ এপ্রিল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস/আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ১৪ থেকে ২১ এপ্রিল পর্যন্ত সার্বিক কার্যাবলি বা চলাচল বিষয়ে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এর এক দিনের মাথায় আজ পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতিতে সীমিত পরিসরে আদালতের কার্যক্রম পরিচালনার ও সিদ্ধান্ত এল।
৪ এপ্রিল করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে শর্তসাপেক্ষে ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত শর্তসাপেক্ষে চলাচলে সাত দিনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। নির্ধারিত এই মেয়াদের শেষ দিনে ১১ এপ্রিল ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ, চেম্বার আদালত ও হাইকোর্ট বিভাগের কার্যক্রম ১২ এপ্রিল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সীমিত পরিসরে চলবে বলে পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে জানায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। ১১ এপ্রিল অপর এক বিজ্ঞপ্তিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন জানায়, করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে শুধু জামিন ও অতি জরুরি ফৌজদারি দরখাস্ত নিষ্পত্তির জন্য অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালে ১২ এপ্রিল থেকে কার্যক্রম পরিচালিত হবে।
এদিকে ১২ এপ্রিল দ্বিতীয় দফায় কার্যবালি বা চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। এর সঙ্গে মিল রেখে আজ সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে পৃথক তিনটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ১২ এপ্রিলের প্রজ্ঞাপনের প্রসঙ্গ তুলে মঙ্গলবার আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. বদরুল আলম ভূঞা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ রেখে জনগণের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার্থে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে সীমিত পরিসরে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের ১১ এপ্রিলের বিজ্ঞপ্তির ধারাবাহিকতা টেনে আজকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ১ নম্বর কোর্টে প্রতি রোববার, মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিচারিক কার্যক্রম চলবে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে শুধু ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে প্রতি সোম ও বুধবার বেলা ১১টা থেকে চেম্বার আদালত অতি জরুরি বিষয়ে শুনানি করবেন।
হাইকোর্টেও সীমিত পরিসরে কার্যক্রম : মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ১২ এপ্রিলের প্রজ্ঞাপনের প্রসঙ্গ তুলে মঙ্গলবার হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ রেখে জনগণের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার্থে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে সীমিত পরিসরে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের ১১ এপ্রিলের বিজ্ঞপ্তির ধারাবাহিকতা উল্লেখ করে আজকের বিজ্ঞপ্তির ভাষ্য, ৫ এপ্রিল থেকে অ্যাফিডেভিট করা অতি জরুরি বিষয়ে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে শুধু ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে প্রধান বিচারপতি কর্তৃক গঠিত বেঞ্চগুলো শুনানি করবেন। সংশ্লিষ্ট আদালত মামলা শুনানির তারিখ ও সময় নির্ধারণ করবেন। ১২ এপ্রিল থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে বিচারকাজ পরিচালনার জন্য ১১ এপ্রিল প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টের পৃথক চারটি বেঞ্চ গঠন করে দেন।
অধস্তন আদালতেও ভার্চ্যুয়ালি নিষ্পত্তি হবে জামিন ও অতি জরুরি দরখাস্ত
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের ১২ এপ্রিলের প্রজ্ঞাপনের প্রসঙ্গ তুলে মঙ্গলবার হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত অপর বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দেশের অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ রেখে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে সীমিত পরিসরে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।
১১ এপ্রিলের বিজ্ঞপ্তির ধারাবাহিকতার কথা উল্লেখ করে আজকের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শুধু জামিন ও অতি জরুরি ফৌজদারি দরখাস্ত তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে নিষ্পত্তি করার জন্য দেশের প্রত্যেক জেলার জজ ও দায়রা জজ, মহানগর দায়রা জজ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক, শিশু আদালতের বিচারক এবং চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও ক্ষেত্রমতো তাঁর নিয়ন্ত্রণাধীন ম্যাজিস্ট্রেটকে নির্দেশ প্রদান করা হলো। এ সময় আদালত–সংশ্লিষ্ট শুধু অত্যাবশ্যকীয় কর্মচারীরা উপস্থিত থাকবেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতেও উল্লেখ করা হয়।