এ কেমন বিধিনিষেধ!

নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : সর্বাত্মক কঠোর বিধিনিষেধের অষ্টম দিনে গণপরিবহন ছাড়া সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে।

আজ বুধবার (২১ এপ্রিল) সকাল থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত সরেজমিনে রাজধানীর মোহাম্মদপুর, গাবতলি, শ্যামলী, আসাদগেট, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ধানমন্ডি, মালিবাগ, মগবাজার, কাকরাইল ও পল্টন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে মোড়ে মোরে পুলিশের চেকপোস্ট নেই। কোনো কোনো মোড়ে চেকপোস্ট থাকলেও তাতে পুলিশের উপস্থিতি নেই।

এলাকাগুলো ঘুরে দেখা যায়, মোটরসাইকেলে দুইজন আরোহণ করছে এবং সিএনজিতে চারজন থেকে পাঁচজন পর্যন্ত চলাচল করছে। মোটরসাইকেলে দুইজন চলাচল করলেও পুলিশ তাদের দেখে অনেকটা নিশ্চুপ অবস্থায় দাঁড়িয়ে ছিলো। এমনকি মোটরসাইকেলে ডেকে ডেকে যাত্রী তুলতেও দেখা যায় অনেক রাইডারকে।

আজ বুধবার (২১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় রাজধানীর বিজয় সরণীর সিগ্যানালে দেখা যায়, রাস্তার চারটি পয়ন্টেই কয়েক মিনিট পরপর সিগ্যানাল ফেলছে ট্রাফিক পুলিশ। গণপরিবহন না থাকলেও ট্রাক, সিএনজি, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল ব্যাক্তিগত গাড়ি ও পথচারীদের ভিড় ছিলো চোখে পড়ার মতো।

বিজয়সরণী দায়িত্বরত শেরে বাংলা জোনের ট্রাফিক সার্জেন মেহেদী হাসান ফারুক বলেন, আমি সকাল ৬টা থেকে এখানে আছি। সকাল ৮টার পর থেকে সড়কে গাড়ির ভিড় বাড়তে থাকে। গত দুইদিনে সড়কে গাড়ি দিগুণ বেড়েছে। আমরা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছি। গাড়ি এতো বেশি যে একটি ধরলে অন্যগুলো ধরার সুযোগ থাকে না। আর চেক করতে চাইলেও নানা রকম ইস্যু দেখায়। আবার অনেকে মুভমেন্ট পাসও দেখাচ্ছে।জনসাধারণের চলাচল উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

ফার্মগেটেও কড়াকড়ি দেখা যায়নি। গেল কয়েকদিন যানবাহন পথচারী চলাচলে যতোটা কঠোর তা ছিলো সেটা আজ দেখা যায়নি। দুই একটা গাড়ি চেক করলেও অধিকাংশ গাড়ি পাস কাটিয়ে চলে যেতে দেখা গেছে। এছাড়া পথচারীদের ভিড়ও ছিলো স্বাভাবিক। কোনো বাধা ছাড়া স্বাভাবিকভাবে চলাচল করছে। নেই কোনো বাড়তি সতর্কতা। একই চিত্র দেখা যায়, বাংলামোটরও আর শাহবাগে চেক পোস্টে।

কাওরানবাজার মোড়ে দেখা যায়, গাড়ি থামিয়ে থামিয়ে ঝটলা বেধে অসংখ্যা মানুষ রাস্তা পাড় হচ্ছে। সেখানেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে মুভমেন্ট পাস চেক কিংবা বিধিনিষেধ অমান্য করায় কোনো জরিমানা অথবা চেক কর‍তে দেখা যায়নি। ফলে স্বাভাবিকভাবেই চলাচল করছে পথচারীরা।

রমনা পার্কের গেটে চেক পোস্ট আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মোটরসাইকেলসহ আটক হওয়া পাঠাও চালক রকিবুল হাসান বলেন, আমার মা অসুস্থ, প্রতিদিন মায়ের জন্য ওষুধ কিনতে হয়। আমি গাড়ি নিয়ে না বের হলে মায়ের ওষুধ কিনতে পারবো না। পরিবারে আমার ভাই-বোন আছে তাদের খাবারের ব্যবস্থা করতে হয়। আমি একাধিক মামলা খেয়েও বাধ্য হয়ে গাড়ি নিয়ে নামতে হচ্ছে। এছাড়া আমার কোনো উপার্জনের পথ নেই।

রমনা গেটে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা রমনা ট্রাফিক জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. রেফাতুল ইসলাম বলেন, সড়কে গাড়ি বেশি হলেও আমাদের চেক পোস্টের জোরদার একটু কমেনি। জরুরি সেবায় নিয়োজিত সরকারের নির্দেশে ১৮ শ্রেণির লোকজনকে আমরা শুধুমাত্র আইডি কার্ড দেখেই নিশ্চিত হতে পারলে আমরা ছেড়ে দিচ্ছি। আজ সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত অনিয়মের জন্য ২০টি মামলা হয়েছে। চেক পোস্টে কার্যক্রম এখনো অব্যাহত রয়েছে। গতকালও মিন্টু রোডে বিধিনিষেধ অমান্য করায় শুধুমাত্র সন্ধ্যায় বিভিন্নজনকে ১৬টি মামলা দেওয়া হয়েছে। এর আগের দিন আমরা ২২টি মামলা দিয়েছি।

Share