নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার জাল সনদ নিয়ে চাকরি করার দায়ে ফেঁসে গেলেন কলেজ শিক্ষক শিবপদ সানা। বেসরকারি শিক্ষক ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) এর সহকারী পরিচলক (পমূপ্র-৩) তাজুল ইসলামের নির্দেশে অবশেষে তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা হয়েছে।
এর আগে কলেজের গভর্নিং বডির সভায় জাল সনদধারী শিক্ষক শিবপদ সানার বেতন-ভাতা স্থগিত করা হয়। অভিযুক্ত শিক্ষক শিবপদ সানা তালা উপজেলার মেশারডাঙ্গা গ্রামের মৃত. করুণাময় সানার ছেলে। তিনি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার দু’টি জাল সনদ দিয়ে দীর্ঘ বছর ধরে পার্শ্ববর্তী আশাশুনির বড়দল আফতাবউদ্দীন কলেজিয়েট স্কুলে ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রভাষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
সূত্রে জানা গেছে, এনটিআরসিএ এর দু’টি সনদ জাল করে শিবপদ সানা ২০১০ সালে বড়দল আফতাবউদ্দীন কলেজিয়েট স্কুলে ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। এরপর থেকে তার জাল সনদের বিষয়টি নিয়ে এলাকায় সমালোচনা শুরু হয়। অবশেষে এক অভিযোগের প্রেক্ষিতে এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষ শিক্ষক শিবপদ সানার দাখিলকৃত ২টি নিবন্ধন সনদ যাচাই করেন। যাচাইঅন্তে এনটিআরসিএ’র সহকারী পরিচালক (পমূপ্র-৩) তাজুল ইসলাম গত ১১ মার্চ ৩৭.০৫.০০০০.০১০.০৫.০০২.২০.২৭৯ নং স্মারকে সংশ্লিষ্ট কলেজে পত্র প্রেরণ করেন। ওই পত্রে শিক্ষক শিবপদ সানার জমা দেওয়া দু’টি শিক্ষক নিবন্ধন সনদ জাল ও ভূয়া বলে উল্লেখ করে তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করার নির্দেশনা দেন।
এনটিআরসিএ’র পত্র সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষক শিবপদ সানার শিক্ষন নিবন্ধন পরীক্ষা পাশের প্রথম সনদটি ৪র্থ শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা- ২০০৮ এর রোল নং ২০১১০৪৫১ এবং রেজিষ্ট্রেশন নং ৮০০১৯৮৩০। কিন্তু এই সনদটির প্রকৃত শিক্ষার্থী এমডি জিয়াউর রহমান, পিতা- এমডি আয়ুব আলী, বিষয় বাংলা। অনুরুপ দাখিলকৃত দ্বিতীয় সনদটি ১ম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা- ২০০৫ এর রোল নং- ৬৫৭০৩৫২ এবং রেজিঃ নং ০৫১০৭৯৫৩। কিন্তু এই সনদটিও জাল ও ভুয়া এবং প্রকৃত সনদধারীর নাম তানমীম ইয়াসমীন, পিতা- মোঃ শাহজাহান আলী এবং সঠিক রেজিঃ নং ০৫৪১১৩৪০।
এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট বড়দল আফতাবউদ্দীন কলেজিয়েট স্কুলের অধ্যক্ষ ড. মো. শিহাবউদ্দীন জানান, এনটিআরসিএ এর পত্রের প্রেক্ষিতে গত ৭ এপ্রিল গভর্নিং বডির সভা এডহক কমিটির আহ্বায়ক উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাজমুল হুসেইন খাঁনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সর্বসম্মতভাবে জাল ও ভূয়া সনদধারী প্রভাষক শিবপদ সানার বেতন-ভাতা স্থগিত রাখাসহ তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে এ ব্যাপারে শিবপদ সানার সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
এদিকে, কলেজর অধ্যক্ষ বাদি হয়ে আশাশুনি থানায় একটি মামলা করেছেন। আশাশুনি থানার ওসি মো: গোলাম কবীর জানান, উক্ত ঘটনায় থানায় একটি মামলা (১৭/২০) রেকর্ড করা হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে এই মামলার তদন্ত পূর্বক যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।