পাকিস্তানের সেনাবাহিনী সবচেয়ে বড় ভূমিদস্যু : লাহোর হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি

নিজস্ব ডেস্ক প্রতিবেদক : ‘অবৈধ’ ভূমি দখলে সম্পৃক্ততা থাকায় পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা আবাসন কর্তৃপক্ষের (ডিএইচএ) প্রতি ক্ষোভ ঝাড়লেন লাহোর হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি মোহাম্মদ কাসিম। একই সঙ্গে দেশটির সেনাবাহিনী ‘সবচেয়ে বড় ভূমিদস্যু’ বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। গত বুধবার এক আবেদনের শুনানিতে তিনি এ কথা বলেন।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম ডনের খবরে বলা হয়েছে, ইভাকিউইয়ি ট্রাস্ট প্রোপার্টি বোর্ডের (ইটিপিবি) কাছ থেকে বৈধভাবে ইজারা নেওয়া জমিতে যাতে ডিএইচএ কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ না করে, সেই নির্দেশনা চেয়ে তিনজন সাধারণ ব্যক্তি আদালতে রিট আবেদন করেন।

শুনানির একপর্যায়ে প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টের জমিও সেনাবাহিনী দখলে নিয়েছে বলে জানান। এ নিয়ে সেনাবাহিনীর প্রধানকে একটি চিঠি লিখতে লাহোর হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি।

ডিএইচএর কাউন্সেল আলতাফুর রেহমান বিষয়টি তাঁর জানা নেই বলে জানান। বিষয়টি যাচাইয়ের জন্য প্রধান বিচারপতি লাহোরের ক্রপস কমান্ডারকে সমন করেন। তিনি তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেন, ‘সেনাদের উর্দি মানুষের সেবার জন্য, রাজার মতো শাসন করার জন্য নয়।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, সেনাবাহিনী সম্পর্কে তিনি মিথ্যা কথা বলেননি। সৃষ্টিকর্তা তাঁকে সত্য বলার সাহস দিয়েছেন। তিনি বলেন, সেনাবাহিনী যেভাবে সাধারণ লোকজনের সম্পত্তি দখল করছে, সেটি ভূমি দখল ছাড়া আর কিছু নয়।

আদালত শুনানির একপর্যায়ে ক্যাপিটাল সিটি পুলিশ অফিসারকে তলব করেন।আদালতে বিরতির পর শুনানি শুরু হলে লাহোরের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ দোগার হাজির হন। প্রধান বিচারপতি তাঁকে ডিএইচএর অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পারলে চাকরি ছেড়ে দিতে বলেন। ডিএইচএর বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পেলে তার এফআইআর নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় এই পুলিশ কর্মকর্তাকে।

প্রধান বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে বলেছেন, অবসরে যাওয়া সেনা কর্মকর্তাদের জন্য আকর্ষণীয় কল্যাণমূলক পরিকল্পনা রয়েছে, যা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠানের জন্য নেই। তিনি প্রশ্ন রেখে জানতে চান, ‘সেনাবাহিনীই শুধু ত্যাগ স্বীকার করে? পুলিশ, আইনজীবী, বিচারপতি, তারা কোনো ত্যাগ স্বীকার করে না?’

Share