চলুন ঘুরে আসি নীলাচল

নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : দেশের অন্যতম একটি পর্যটন স্পট পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির নীলাচল। যেখানে প্রকৃতি তার সৌন্দর্যের সবটুকু উজাড় করে দিয়েছে। মেঘের সংস্পর্শ, সাথে হিম বাতাসের খেলা। আর চারপাশে সবুজের হাতছানি। চারদিকে শুধুই বিশুদ্ধ শান্তির পরশ।

বর্ষায় এই নীলাচলের সৌন্দর্য থাকে একটু ভিন্ন। দূর আকাশের মেঘ ভেসে আসে নীলাচলের চূড়ায়। যেটি ইচ্ছে হলেই ছুঁয়ে দেখতে পারেন পর্যটকরা। যান্ত্রিক জীবনের ফাঁকে প্রকৃতির এমন বিশুদ্ধ পরশ জীবনে এনে দেবে নতুন এক ভিন্নমাত্রা। সবুজের এই আবরণে নিজের মনকে ঢেকে রাখা যাবে কিছুক্ষণ।

বর্ষায় অবশ্য এখানে পর্যটকের সংখ্যা কিছুটা কম থাকে। হানিমুন, আনন্দ ভ্রমণ কিংবা পরিবার নিয়ে ঝামেলাহীন পরিবেশে ঘুরতে যাওয়ার আদর্শ স্থান হতে পারে এই নীলাচল। বান্দরবান শহর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২ হাজার ফুট উঁচুতে এর অবস্থান। দূর থেকে নীলাচলকে দেখতে মনে হবে আকাশের নীল রংয়ের আচল পাহাড়ে ছড়িয়ে রয়েছে। এ কারণেই পাহাড়টির নামকরণ করা হয়েছে নীলাচল। পাহাড়টি থেকে এক নজরে চোখে পড়বে বান্দরবান শহর ও পার্শ্ববর্তী এলাকার সৌন্দর্য।

‘ঝুলন্ত নীলা’ ‘নীহারিকা’ এবং ‘ভ্যালেন্টাইন’ পয়েন্ট নামে বেশ কিছু স্পট এই নীলাচলের নতুন সহযোজন। পাহাড়ের ভাজে ভাজে স্পটগুলো তৈরি। এক একটি স্পট থেকে একেকভাবে নীলাচলের ভিন্ন ভিন্ন সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। কথিত আছে, রোগ নিরাময়ের টনিক হিসেবে কাজ করে নীলাচলের নির্মল বাতাস।

পাহাড় থেকে দেখা যাবে তঞ্চঙ্গ্য, বম সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকটি পাহাড়ি গ্রাম। গ্রামগুলো দেখতে চাইলে পায়ে হেঁটে পাহাড়ের পাদদেশে চলে যাওয়া যায়। যদি জোৎস্না রাতে নীলাচলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান তবে সেভাবেই দিনক্ষণ ঠিক করে বেরিয়ে পরতে পারেন। কারণ জ্যোৎস্না রাতের সৌন্দর্য আপনাকে এনে দেবে অন্যরকম রোমাঞ্চকর অনুভূতি।

বান্দরবান শহর থেকে ভাড়ায় চালিত বেবি ট্যাক্সি, চান্দের গাড়ি, জিপ নিয়ে ১৫-২০ মিনিটে নীলাচল যাওয়া যায় খুব সহজেই। ভাড়া গুণতে হবে ৪০০-৮০০ টাকা। নীলাচলে পাহাড়ের ঢালুতে রয়েছে ৩টি নীল রঙের দৃষ্টিনন্দন কটেজ ও জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি রেস্টহাউজ। কটেজগুলো ভাড়ায় পাওয়া যায়, আর রেস্ট হাউজে রাত্রিযাপন করতে হলে আগেই জেলা প্রশাসনের অনুমতি নিতে হয়।

এখানে রয়েছে স্কেপ নামের একটি আকর্ষণীয় রেস্টুরেন্ট। যেখানে সাধারণ পর্যটকদের জন্য সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান করার অনুমতি রয়েছে। তবে রিসোর্টের অতিথিরা সর্বক্ষণ থাকার সুযোগ পাবেন সেখানে।

কিভাবে যাবেন: ঢাকার ফকিরাপুল, কমলাপুর ও সায়দাবাদ থেকে শ্যামলী পরিবহন, সেন্টমার্টিন পরিবহন ও বিআরটিসির এসি ও নন এসি বাস সার্ভিস রয়েছে। ভাড়া ৬শ’ থেকে ১ হাজার ২শ’ টাকার মধ্যে।

এছাড়া সড়ক, রেল কিংবা আকাশ পথে চট্টগ্রাম হয়ে সহজেই যাওয়া যায় বান্দরবান। চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকে পূরবী, পূর্বাণী পরিবহনের বাস সার্ভিস রয়েছে সকাল ৬ থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। ভাড়া ১১০-১৩০ টাকার মধ্যে।

Share