নিজস্ব জেলা প্রতিবেদক : রাজশাহীর তানোর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ওরফে ময়না তাঁর সরকারি বাসায় বসে করোনার টিকা নিয়েছেন। টিকাদানের প্রশিক্ষণ নেই—উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এমন একজন কর্মচারী আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাঁকে এই টিকা দেন। ‘জরুরি কারণে’ না বুঝে এভাবে টিকা নিয়েছেন বলে দাবি করেছেন উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার গাড়িতে করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুজন কর্মী দুপুরের দিকে উপজেলা চেয়ারম্যানের সরকারি বাসভবনে যান। বাড়ির গেটের বাইরে গাড়ি রেখে ভেতরে গিয়ে তাঁরা টিকা দিয়ে আসেন। উপজেলা চেয়ারম্যানকে টিকা পুশ করেছেন নিশান মণ্ডল নামের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একজন কর্মচারী। তাঁর পদবি ‘পোটার’। তিনি টিকার বাক্স পরিবহনের দায়িত্বে থাকেন।
টিকা দেওয়ার পর সেই ছবি জামিল রহমান নামের এক ব্যক্তির ফেসবুকে পাওয়া যায়। জামিল রহমান উপজেলা চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে পরিচয় দেন। এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যানের দৃষ্টি আকর্ষণ করার পর ফেসবুক থেকে ছবিটি সরিয়ে নেওয়া হয়। লুৎফর হায়দার উপজেলা যুবলীগের সভাপতি পদে আছেন।
দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মী না হওয়ার সত্ত্বেও টিকা দেওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে নিশান মণ্ডল বলেন, তিনি দীর্ঘ ১২ বছর ধরে টিকাদানকারী স্বাস্থ্যকর্মীদের সঙ্গে কাজ করছেন। এই অভিজ্ঞতা থেকে তিনি টিকা দিয়েছেন। তা ছাড়া গ্রাম্য চিকিৎসক হিসেবে তাঁর এক মাসের প্রশিক্ষণ রয়েছে।
উপজেলা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ ওরফে ময়না বলেন, তিনি প্রথম ডোজ টিকা হাসপাতালে গিয়েই নিয়েছেন। জরুরিভাবে তাঁর ঢাকায় যাওয়ার দরকার। হাসপাতালে গেলে বেশি সময় লাগবে। তাই তিনি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানান। তিনি তারপরেই বাসায় স্বাস্থ্যকর্মী পাঠিয়ে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা বার্নাবাস হাঁসদাক স্বীকার করেন যে এক অর্থে এভাবে টিকা দেওয়াটা অনিয়ম হয়েছে। তিনি বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানের জরুরি কাজ ছিল বলে তিনি এই সহযোগিতাটা করেছেন। তবে তাঁর গাড়িতে করে স্বাস্থ্যকর্মী পাঠিয়ে টিকা দেওয়ার কথা তিনি অস্বীকার করেন। তিনি দাবি করেন, টিকা নিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীরা গেছেন কিন্তু তাঁর গাড়ি যায়নি।