২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার বিষয়ে খালেদা জিয়া আগেই অবহিত ছিলেন : শেখ হাসিনা

নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলার জন্য পুনরায় তৎকালীন বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার এবং তাদের পৃষ্ঠপোষকতাকেই অভিযুক্ত করে বলেছেন, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়া এটা হতে পারে না।

তিনি বলেন, ‘আলামত ধ্বংস, খুনিদের পালাতে সহায়তা করা এবং বিচারকে অন্য খাতে প্রবাহিত করার যে অপচেষ্টা, তাতেই এটি স্পষ্ট প্রতীয়মান হয়।’ খালেদা জিয়াও ঘটনা সম্পর্কে আগেই অবহিত ছিলেন, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওই দিন রাত ১১টার দিকে চারজনকে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের একটি বিমানে করে খালেদা জিয়ার সরকার দেশ থেকে বাইরে পাঠিয়ে দেয়। তাঁদের মধ্যে তাজউদ্দীন ছিলেন, একজন কারারক্ষী এবং শোনা যায় কর্নেল রশিদ এবং ডালিম সে সময় ঢাকায় এসেছিলেন এবং খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার তত্ত্বাবধানে ছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘ডিজিএফআই, এনএসআইসহ গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশ সবাই এর সঙ্গে জড়িত ছিল। কাজেই, তারাই এদের রক্ষা করে এবং দেশ থেকে বাইরে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। কারণ, যখন তারা জানল যে আমি মরি নাই, বেঁচে আছি, তখন তারা দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল।’প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা আজ সকালে গ্রেনেড হামলার ১৭তম বার্ষিকী উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে এ কথা বলেন।

তিনি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চ্যুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একজন কারারক্ষী এর সঙ্গে জড়িত ছিল। জেলখানার ভেতর গ্রেনেড পাওয়া গেল (২১ আগস্ট হামলায় ব্যবহৃত গ্রেনেডের মতো আর্জেজ গ্রেনেড), এরা অনেকগুলো ক্রিমিনাল জোগাড় করেছিল, তাদের মধ্যে কিছু জেলখানা থেকে বের করে নিয়ে এসেছিল। কিন্তু প্রত্যেকের হাতে যে গ্রেনেডগুলো ছিল, সবাই সেগুলো মারতেও পারেনি। রমনা হোটেলের সামনের গলিতে এবং কয়েকটি জায়গায় সেই গ্রেনেড পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আক্রমণকারীদের রক্ষা করার জন্য সেদিন ভয়াবহতার মধ্যেই পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ারগ্যাস ছুড়েছে। সব আলামত সিটি করপোরেশনের গাড়ি দিয়ে ধুয়ে নষ্ট করা হয়েছে। একটা গ্রেনেড অবিস্ফোরিত ছিল, সেটি সংরক্ষণের কথা বলায় একজন অফিসারকে ধমকানো হয়। পরে তাঁকে নির্যাতনও করা হয়েছে। সরকারের সহযোগিতা না থাকলে তো এমন হতে পারে না।

আলোচনা সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রারম্ভিক ভাষণ দেন। দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদও বক্তৃতা করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর হামলা হলো। আমরা সেটার প্রতিবাদ করলাম। সন্ত্রাসবিরোধী সমাবেশ ডাকলাম। মুক্তাঙ্গনে সভা হওয়ার কথা ছিল, অনুমতি দেয়নি। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম আওয়ামী লীগ অফিসের সামনেই করব। পোস্টার করা হলো, পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিলাম আমরা। কিন্তু তারা (সরকার) মধ্যরাতে মুক্তাঙ্গনে করার অনুমতি দিল। তখনই সন্দেহ হলো কেন এত রাতে অনুমতি দিল? তা ছাড়া আমাদের সমাবেশ করার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছিল। অবশ্য প্রকাশ্যে দিবালোকে এভাবে আর্জেজ গ্রেনেড হামলা করে মানুষ হত্যা করবে, তা কেউ স্বপ্নেও ভাবতে পারেনি।

তিনি প্রশ্ন তোলেন, গ্রেনেড হামলায় মানুষ মারা কোন ধরনের গণতন্ত্র ছিল?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যদিও এর আগেই খালেদা জিয়া বক্তৃতা দিয়ে তাঁর নাম দলেই বলেছে, ‘প্রধানমন্ত্রী তো দূরের কথা, বিরোধী দলের নেতাও কোনো দিন আমি হতে পারব না।’ এর আগে কোটালীপাড়ায় ৭৬ কেজি ওজনের বোমা পুঁতে শেখ হাসিনাকে হত্যা প্রচেষ্টার আগেও খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘এক শ বছরেও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসতে পারবে না,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা যখন জাতীয় সংসদে গিয়ে বিষয়টি তুলতে চেষ্টা করলাম, তখন কিছুতেই এ ব্যাপারে কথা বলতে দেবে না। শোক প্রস্তাব দিতে চাইলাম, সেটা প্রত্যাখ্যান করা হলো, নিল না। আমরা যারা কথা বলতে চেয়েছি, তাদের কোনো মাইক দেওয়া হলো না।’ খালেদা জিয়া নিজেই দাঁড়িয়ে বললেন, ‘ওনাকে আবার কে মারবে। উনি তো ভ্যানিটি ব্যাগে করে নিজেই গ্রেনেড নিয়ে সেখানে গেছেন এবং নিজেই গ্রেনেড মেরেছেন। এটা খালেদা জিয়ার নিজের ভাষ্য।’

তিনি বলেন, ‘আমি বাবার পথ ধরেই এ দেশের মানুষের জন্য কাজ করছি। গ্রেনেড, বোমা, বুলেট দিয়ে বারবার হত্যাচেষ্টা হয়েছে। আল্লাহর রহমতে নেতা–কর্মীরা আমাকে বাঁচিয়েছেন।’

বিএনপির সমালোনা করে শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘তারা গুম-খুনের কথা বলে। তাদের হারিছ চৌধুরী, সালাউদ্দিন আরও কে কে গুম হয়েছে বলে বেড়ায়। পরে বিদেশে খোঁজ পাওয়া যায়। কেউ ভারতে, লন্ডনে, আসলে তারা নিজেরা নিজেদের গুম করে রাখে। এটাও এ দেশে ঘটে, দুর্ভাগ্য।’
বিএনপির এই অত্যাচারটা শুরু হয়েছিল ২০০১ সালের ১ অক্টোবর থেকে। এমনকি জুলাই মাসে আমার ক্ষমতা হস্তান্তরের পর থেকেই এক অদৃশ্য শক্তির বলে তাদের দুর্বৃত্তায়ন শুরু হয়। সামরিক–অসামরিক আমাদের অনেক কর্মকর্তাকে ও এসডি করা, চাকরিচ্যুত করা থেকে শুরু করে হত্যা, গুমসহ, নারীদের ওপর পাশবিক অত্যাচারসহ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর অকথ্য অত্যাচার-নির্যাতন শুরু করে। তারা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর মতোই নির্যাতন শুরু করেছিল।

অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় শহীদ, ১৫ আগস্টের সব শহীদ এবং মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং সম্ভ্রমহারা দুই লাখ মা-বোনের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

আলোচনা সভায় আরও বক্তৃতা করেন দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি, কেন্দ্রীয় নেতা এবং বিএমএ মহাসচিব ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, মহানগর আওয়ামী লীগ উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, দক্ষিণের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মান্নাফী প্রমুখ। দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, এমপি গণভবন থেকে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের এই দিনে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী শান্তিপূর্ণ সমাবেশে নজিরবিহীন গ্রেনেড হামলা চালানো হয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুহুর্মুহু ১৩টি যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত আর্জেস গ্রেনেড বিস্ফোরণের বীভৎসতায় মুহূর্তেই মানুষের হাত-পাসহ বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ছিন্নভিন্ন হয়ে রক্ত-মাংসের স্তূপে পরিণত হয় সমাবেশস্থল। ওই ঘটনায় দলীয় নেতা–কর্মীরা মানববর্ম রচনা করে শেখ হাসিনাকে রক্ষা করলেও তাঁর কান ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর গ্রেনেডের আঘাতে আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের সহধর্মিণী আইভি রহমান এবং নেতা-কর্মীসহ মোট ২৪ জন প্রাণ হারান। রাজনৈতিক কর্মী, পথচারী, নিরাপত্তাকর্মী, সাংবাদিকসহ ৫ শতাধিক আহত হন।

দীর্ঘ ১৪ বছর পর ২০১৮ সালের অক্টোবরে গ্রেনেড হামলা মামলায় আদালত বিএনপি-জামায়াত জোট আমলের সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, শিক্ষা উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, গোয়েন্দা সংস্থার তৎকালীন দুই শীর্ষ কর্মকর্তাসহ ১৯ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৪ জন জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি-বি) সদস্য। এ ছাড়া রায়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৯ জনের যাবজ্জীবন ও অপর ১১ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ড দেওয়া হয়। বিচারিক আদালতের রায়ের পর মামলাটি এখন হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও আপিল শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

সেদিনের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমাবেশ শেষ করা মাত্র একজন ফটোগ্রাফার এসে ছবি নিতে না পারার কথা জানাতেই তিনি থমকে দাঁড়ালেন। মাইকটি তিনি হাত থেকে রাখতেও পারেননি, তখনই গ্রেনেড হামলা শুরু হয়ে যায়।

তিনি বলেন, ‘গ্রেনেড বিস্ফোরিত হওয়ার শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে হানিফ ভাইসহ (সাবেক মেয়র মোহাম্মদ হানিফ) কয়েকজন ঘিরে ফেলেন।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি দেখলাম আমার গায়ে শুধু রক্ত আর রক্ত। অর্থাৎ ওই যে স্প্লিন্টারগুলো সব এসে আঘাত করছে হানিফ ভাইয়ের মাথায় ও গায়ে। যেহেতু সে ধরে রেখেছে, তার রক্তে আমার শরীর ভেসে যাচ্ছে। তিনটি গ্রেনেড ফোটার পর কয়েক সেকেন্ড বিরতি দিয়ে আবার। মনে হচ্ছে যেন এর শেষ নেই, কেয়ামতের মতো। চারদিকে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন কিছুই দেখা যাচ্ছিল না। জানি না, আল্লাহ কীভাবে হাতে তুলে আমাকে বাঁচালেন। আমার গায়ে একটাও স্প্লিন্টার লাগেনি। কিন্তু আওয়াজে ডান দিকের কানে আর শুনতে পাচ্ছিলাম না।’

শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘যখন আমি গাড়িতে উঠতে যাব, দরজাটা খুলে মাহবুব দাঁড়ানো (২১ আগস্ট শহীদ, তাঁর দেহরক্ষী) তখনই গুলি এল এবং সেই গুলিতে মাহবুব মারা গেল। আরও কয়েকটি গুলি এসে গাড়িতেও লাগল (বুলেটপ্রুফ গাড়ি)।’

ওই দিনের কথা স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেখানে এই ধরনের ঘটনা ঘটলে সাধারণত পুলিশ এগিয়ে আসে সাহায্য করতে, যারা আহত তাদের রক্ষা করতে। এখানে দেখা গেল উল্টো। বরং আমাদের নেতা–কর্মী দূরে যারা ছিল, তারা যখন ছুটে আসছে, তাদের আসতে দেওয়া হচ্ছে না বরং টিয়ার গ্যাস মারা হচ্ছে, লাঠিচার্জ করছে পুলিশ।’

শেখ হাসিনা বলেন, তার মানেটা কী? যারা আক্রমণকারী এদের রক্ষা করা, এদের রেসকিউ করার জন্যই এই টিয়ার গ্যাস মারা, লাঠিচার্জ করা।

সরকারপ্রধান বলেন, ‘সবচেয় দুর্ভাগ্যের বিষয় বিএনপিমনা ডাক্তারদের কেউ সেদিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছিল না। আর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো আহতকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। বলেছে এখানে ইমার্জেন্সিতে চিকিৎসা নিতে পারবে না। সেটা সম্পূর্ণ বন্ধ। আর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিএনপিমনা কোনো একটা ডাক্তারও সেদিন ওখানে কোনো চিকিৎসা করেনি। আমাদের ডাক্তার রোকেয়া আইভি রহমানসহ প্রায় ৭০ জনকে নিজে একা অ্যানেস্থেশিয়া দিয়েছে।’ গ্রেনেড হামলায় যাঁরা মারা গিয়েছিলেন, তাঁদের লাশ প্রথমে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তাঁদের পরিবারের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছিল না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীরা সেখানে ঘিরে থাকলে কর্তৃপক্ষ ভোররাতে লাশ দিতে বাধ্য হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি–জামায়াত জোট সরকার ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে জজ মিয়া নামের দরিদ্র একজনকে তার পরিবার লালন–পালনের আশ্বাস দিয়ে তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কাহিনি তৈরি করে। অথচ তার আর্জেজ গ্রেনেড সংগ্রহ করা বা গ্রেনেড মারার মতো, লোক সংগ্রহ করার মতো কোনো ধরনের সামর্থ্যই ছিল না।

পাশাপাশি, ওই সময় মগবাজার আওয়ামী লীগ নেতা মোখলেসকে মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করাসহ আওয়ামী লীগের কর্মীদের গ্রেপ্তার করে তাদের দিয়ে স্বীকারোক্তি আদায়ের পরিকল্পনা হয়েছিল যে আওয়ামী লীগের দলীয় কোন্দলেই এই হামলার ঘটনাটি ঘটেছে।

সভায় আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘আপনারা জানেন একটা গ্রেনেড পাওয়া গেল জেলখানার ভেতরে, দেয়ালের সাথে। সেটা আবার আমাদের কোনো কোনো স্বনামধন্য পত্রিকা ডায়াগ্রাম এঁকে দেখাল যে জেলখানার পাশের কোনো এক বাড়ি থেকে ওই গ্রেনেড ছুড়ে মারাতে ওটা ওখানে পড়েছে। জেলখানার পাশে এমন কোনো বাড়ি নেই, যেখান থেকে গ্রেনেড মারলে ওই জায়গায় এসে গ্রেনেড পড়বে।

এ ছাড়া পাশের দেশের গোয়েন্দা সংস্থা নাকি এ কাণ্ড ঘটিয়ে চলে গেছে, এমন কথাও বলা হলো।

শেখ হাসিনা বলেন, পাশের দেশের গোয়েন্দা সংস্থা এসে দিনদুপুরে এভাবে এতগুলো গ্রেনেড যদি শহরের ভেতরে মেরে যেতে পারে, তাহলে সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থাগুলো কী করছিল? তাহলে তারা দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে কীভাবে? আমাদের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত সশস্ত্র বাহিনী, বিডিআর, পুলিশ, তারা কী করছিল? এভাবে তারা (বিএনপি-জামায়াত) সবার দৃষ্টি অন্যদিকে ঘোরানোর চেষ্টা করেছিল, বলেন প্রধানমন্ত্রী।

Share