নয়াবার্তা প্রতিবেদক : মূল ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রদর্শন ছাড়া মোটরসাইকেল বিক্রি করা ও নিবন্ধন (রেজিস্ট্রেশন) দেওয়ার মেয়াদ বাড়িয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। আজ বুধবার এ-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।
বিআরটিএর পরিচালক শীতাংশু শেখর বিশ্বাস স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় বলা হয়েছে, আগামী ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষানবিশ ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়ে মোটরসাইকেল কেনা ও নিবন্ধন করা যাবে। তবে আগামী ১৫ ডিসেম্বর থেকে মূল ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া মোটরসাইকেলের নিবন্ধন নম্বর দেবে না বিআরটিএ। একই সঙ্গে ১৫ ডিসেম্বর থেকে মূল ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া কারও কাছে মোটরসাইকেল বিক্রি না করার জন্য বিক্রেতাদেরও অনুরোধ করেছে সংস্থাটি।
বাংলাদেশ মোটরসাইকেল অ্যাসেম্বলার্স ও ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএএমএ) এক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিআরটিএ। এর আগে কাল বৃহস্পতিবার থেকে মূল ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া মোটরসাইকেলের নিবন্ধন না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সংস্থাটি।
বিআরটিএর ওই সিদ্ধান্তের পর মোটরসাইকেল শিল্পের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন। তাঁদের আশঙ্কা ছিল, লাইসেন্স প্রদর্শনের বাধ্যবাধকতা মোটরসাইকেল কেনাবেচায় ধস নামবে। কারণ, বিআরটিএর লাইসেন্স দেওয়ার সক্ষমতার চাইতে মোটরসাইকেল বিক্রির সংখ্যা কয়েক গুণ বেশি।
বিআরটিএ এবং বিএমএএমএর তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর বিআরটিএ দেড় লাখের মতো লাইসেন্স দিতে পারে। বিপরীতে মোটরসাইকেল বিক্রি হয় প্রায় ছয় লাখ। ফলে শুধু ড্রাইভিং লাসেন্সের কারণে প্রায় সাড়ে চার লাখ মোটরসাইকেল বিক্রি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হতো।
বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানো ও সড়ক দুর্ঘটনার হার কমানোর জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্সের বাধ্যবাধকতা আরোপ করতে চায় সংস্থাটি। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২১ সালে দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ৬ হাজার ২৮৪ জন। এর মধ্যে ৩৫ শতাংশের মৃত্যু হয়েছে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায়। বিআরটিএর হিসাবে, দেশে মোট নিবন্ধিত যানবাহনের ৭০ শতাংশ মোটরসাইকেল।
মোটরসাইকেল খাতের উদ্যোক্তারা বলছেন, সরকার নানা ধরনের নীতিসহায়তা দিয়ে মোটরসাইকেল খাতে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ নিশ্চিত করেছে। অন্যদিকে বিধিনিষেধ দিয়ে এ খাতের গতি থামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কোম্পানিগুলো আরও বলছে, সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে যে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার, সে বিষয়ে তারাও একমত। তবে তারা চায়, কোম্পানিগুলোকে সঙ্গে নিয়ে সমস্যা চিহ্নিত করে দুর্ঘটনা কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হোক। লাইসেন্স দেখানো ছাড়া মোটরসাইকেল বিক্রি করা যাবে না, এ বিধিনিষেধ আরোপের আগে বিআরটিএর সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি।