মিয়ানমার ইস্যুতে বাংলাদেশ এখনই সীমান্তে সেনা মোতায়েনের কথা ভাবছে না

নয়াবার্তা প্রতিবেদক : বাংলাদেশ সীমান্তে একের পর এক গোলাবর্ষণের ঘটনায় চতুর্থবারের মতো ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মোকে ডেকে ব্যাখ্যা চেয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এসে মিয়ানমার রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়ে বলেছেন, সীমান্তে বাংলাদেশের অংশে মর্টার শেল ও গোলাগুলির জন্য আরাকান আর্মি দায়ী। 

রোববার দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে উপস্থিত হন।পরে রাষ্ট্রদূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মিয়ানমার অনুবিভাগের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক নাজমুল হুদার দপ্তরে ডেকে নেওয়া হয়।

এ সময় বাংলাদেশ সীমান্তে একের পর এক গোলাবর্ষণের ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়ে কড়া প্রতিবাদ জানিয়ে তাকে একটি চিঠি হস্তান্তর করা হয়। পরে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ত্যাগ করেন।

এদিকে রোববার বিকালে সমন্বয় সভা শেষে ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্র সচিব খুরশিদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, মিয়ানমার সেনাদের সঙ্গে কার সংঘর্ষ হচ্ছে সেটি বাংলাদেশের মাথা ব্যাথা নয়। কিন্তু তা যেন কোনোভাবেই বাংলাদেশকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে, সে ব্যাপারে সতর্ক করা হয়েছে দেশটিকে।

খুরশিদ আলম বলেন, আমরা বলেছি আরাকান আর্মি এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে বিরোধ আপনাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। আপনার সমস্যা আপনি কীভাবে সমাধান করবেন তা আপনার ওপর নির্ভর করে। কোনো মর্টার শেল বা বুলেট যেন আমাদের পাশে না পড়ে। এর দায় আপনাদের নিতে হবে’।

মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে বলা হয়, বাংলাদেশ একটি দায়িত্বশীল এবং শান্তিপ্রিয় রাষ্ট্র এবং আকাশ ও স্থল সীমা লঙ্ঘনের পুনরাবৃত্তির পরও ধৈর্য ধরে আছে।

এ কর্মকর্তা আরো বলেন, ঢাকা একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে কূটনৈতিকভাবে যা করতে পারে তা করছে তবে একে দুর্বলতা হিসেবে বিবেচনা করা উচিত নয়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ একাধিকবার বলার পরও সীমান্তে সংঘাত বন্ধ না হওয়া দুঃখজনক। মিয়ানমার সীমান্তে প্রয়োজনে বিজিবি ও কোস্টগার্ডের বাড়তি সদস্য মোতায়েন করা হবে। তিনি বলেন, মিয়ানমার ইস্যুতে বাংলাদেশ এখনই সীমান্তে সেনা মোতায়েনের কথা ভাবছে না।

খুরশিদ বলেন, দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে শক্ত অবস্থান থেকে আবারো মিয়ানমারকে সতর্ক করা হয়েছে। ঢাকা এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি কোনোভাবেই চায় না।

প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের তুমব্রু সীমান্তের জিরো পয়েন্টে রোহিঙ্গা ক্যাম্প এলাকায় মিয়ানমারের মর্টার শেল নিক্ষেপে ইকবাল নামের এক রোহিঙ্গা নিহত হন। এ ছাড়া ওই ঘটনায় এক শিশুসহ পাঁচ রোহিঙ্গা নাগরিক আহত হন। তারা এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এর আগে গত ৯ সেপ্টেম্বর মিয়ানমার ভূখণ্ড থেকে ছোড়া একটি গুলি বাংলাদেশ সীমান্তের তুমব্রু এলাকায় এসে পড়ে।

তার আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টায় মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া দুটি গোলা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম এলাকায় পড়ে।

তারও আগে গত ২৮ আগস্ট বিকালের দিকে মিয়ানমার থেকে নিক্ষেপ করা একটি মর্টার শেল ঘুমধুমের তুমব্রুতে এসে পড়ে। তবে সেটি বিস্ফোরিত হয়নি।

Share