নয়াবার্তা ডেস্ক : তুরস্কের বিখ্যাত আয়া সোফিয়া মসজিদ প্রাঙ্গণে নামাজে ইমামতি করায় একজন সৌদি ইমামকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে সৌদি আরব সরকার। বৃহস্পতিবার, ১৩ অক্টোবর একটি মানবাধিকার পর্যবেক্ষক সংস্থা এই তথ্য প্রকাশ করেছে।
প্রিজনারস অব কনসায়েন্স নামে সৌদি মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, বুধবার সৌদি ইমাম এবং কোরআনের হাফেজ আবদুল্লাহ বাসফারকে ১২ বছর কারাদণ্ডের আদেশ দেয় সৌদি আদালত। তিনি বেশ কয়েক বছর আগে তুরস্কের আয়া সোফিয়া মসজিদ প্রাঙ্গণে ইমামতি করার আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছিলেন। এরই প্রেক্ষাপটে তার বিচার হয় এবং তাকে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।
মানবাধিকার সংস্থাটি এই রায়ের নিন্দা জানিয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে তাকে নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
আবদুল্লাহ বাসফার সৌদি আরবের একজন প্রখ্যাত ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব। তিনি জেদ্দার কিং আব্দুল আজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে শরিয়া ও ইসলামিক স্টাডিজে সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন।
প্রিজনারস অব কনসায়েন্স জানায়, ২০১৪ সালে বিখ্যাত এই মসজিদে নামাজের ইমামতি করার একটি ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে পড়ার পরে ২০২০ সালে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে দুই বছর বিচার ছাড়াই আটকে রাখা হয়েছিল। সেই সময়ে তিনি জিজ্ঞাসাবাদকারীদের দ্বারা হয়রানির শিকার হয়েছিলেন। তবে তাকে ঠিক কী অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে তা স্পষ্ট নয়।
২০১৪ সালে তুরস্কের সঙ্গে সৌদি আরবের কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটেছিল। এরকম একটি সময়ে তুরস্কে গিয়েছিলেন ইমাম আবদুল্লাহ বাসফার। তিনি যখন আয়া সোফিয়ায় নামাজ পড়িয়েছেন তখন ঐতিহাসিক এই স্থাপনাটি যাদুঘর ছিল। ২০২০ সালে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এটিকে পুনরায় মসজিদে পরিণত করেন।
উল্লেখ্য, আয়া সোফিয়া ষষ্ঠ শতাব্দীতে বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের অধীনে একটি খ্রিস্টান গির্জা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ইস্তাম্বুলে অটোমানদের বিজয়ের পরে এটি একটি মসজিদে পরিণত হয়। ১৯৩৫ সালে আধুনিক তুরস্কের প্রতিষ্ঠাতা কামাল আতাতুর্ক এটিকে জাদুঘরে রূপান্তরিত করেন। তুর্কি রক্ষণশীলদের দীর্ঘ প্রচারণার পরে, ২০২০ সালে এটি পুনরায় মসজিদে পরিণত হয়।
সূত্র: দ্য নিউ আরব