গত অর্থবছরে মাথা পিছু আয় ছিলো ২ হাজার ৮২৪ ডলার

নয়াবার্তা প্রতিবেদক : গত অর্থবছরে বাংলাদেশের মানুষের মাথা পিছু আয় ছিলো ২ হাজার ৮২৪ ডলার। এ পরিমাণ আগের অর্থবছরের চেয়ে বেড়েছে। ২০২০-২১ অর্থবছরের চূড়ান্ত হিসাব অনুযায়ী, মাথাপিছু আয় ছিল ২ হাজার ৫৯১ ডলার।

গত অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৩ লাখ ৪২ হাজার ৪০০ কোটি টাকা। এ সময়ে রাজস্ব আদায় বেড়েছে ৪ দশমিক ১ শতাংশ। মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর ২০২১-২২ অর্থবছরের কার্যাবলি সম্পর্কিত বার্ষিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম। আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তাঁর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় মন্ত্রিসভার বৈঠক। পরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিসভার বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলো জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।

প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে দেশে খাদ্যশস্য মজুত ছিল ১৬ দশমিক শূন্য ৭ লাখ মেট্রিক টন, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১১ শতাংশ বেড়েছে। গত অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছে ২১ দশমিক শূন্য ৩ মার্কিন ডলার। এটি তার আগের বছরের চেয়ে কমেছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবাসী আয় ছিল ২৪ দশমিক ৭৮ বিলিয়ন ডলার। তবে রপ্তানি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২ দশমিক শূন্য ৮ বিলিয়ন ডলারে। এ রকমভাবে অর্থনীতির নানা তথ্য তুলে ধরা হয় ওই প্রতিবেদনে।

এই প্রতিবেদন উপস্থাপনের সময় আসন্ন সংকটের আশঙ্কা নিয়েও আলোচনা হয়। আলোচনায় বলা হয়, কোভিড-পরবর্তী রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধসহ কয়েকটি কারণে ২০২৩ সালটি সংকটের বছর হওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে। এ জন্য খাদ্যের উৎপাদন বাড়ানোসহ একগুচ্ছ পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মন্ত্রিসভা।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, ২০২১-২২ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৭ দশমিক ২৫ (সাময়িক) শতাংশ, বাংলাদেশে মাথাপিছু আয় ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলার নিরুপিত হয়েছে। এ অর্থবছরে দেশে রপ্তানি বেড়েছে ৩৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ। মোট রপ্তানি হয়েছে ৫২ দশমিক ০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছে ৩ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আর প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ২১ দশমিক ০৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এ সময়ে ৯ লাখ ৮৪ হাজার ৭৫৯ বাংলাদেশি কর্মী বিদেশে কর্মসংস্থান পেয়েছেন।

তিনি বলেন, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে এক হাজার ৮৩৬টি প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ২ লাখ তিন হাজার ৭৮৩ কোটি টাকা, যা বরাদ্দের ৯২ দশমিক ৮০ শতাংশ। এ অর্থবছরে ৩৩৩টি প্রকল্প শেষ হয়েছে।

২০২১-২২ অর্থবছর শেষে ১৬ দশমিক ০৭ লাখ টন খাদ্যশস্য মজুত ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, যা আগের বছরের তুলনায় ১০ দশমিক ৯৮ শতাংশ বেড়েছে। এ ছাড়া সার, সেচ কাজে বিদ্যুৎ, আখসহ বিভিন্ন খাতে মোট ১৫ হাজার ১৭২ দশমিক ৭৯ কোটি টাকা ভর্তুকি দেওয়া হয়েছে। আর জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হয়েছে ৬৬৯ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। আর এই অর্থবছরে বিদ্যুৎসুবিধাভোগী জনগোষ্ঠী শতভাগে উন্নীত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে দেশে মোবাইল গ্রাহক সংখ্যা ১৮ দশমিক ৪৭ কোটি ও ইন্টারনেট গ্রাহক প্রায় ১২ দশমিক ৬২ কোটিতে উন্নীত হয়েছে। আর ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর পরীক্ষামূলকভাবে সাড়ে তিন গিগাহার্জ ব্যান্ডে ফাইভজি সেবা চালু করা হয়েছে। ২০২২ শিক্ষাবর্ষে শিক্ষার্থীদের ৩৪ কোটি ৭০ লাখ ২২ হাজার ১৩০ কপি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।

Share