মোখা দুর্বল হচ্ছে, সেন্ট মার্টিনে ১৪৭ কিলোমিটার বেগে বাতাস

নয়াবার্তা প্রতিবেদক : অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র আজ রোববার বেলা তিনটার কক্সবাজার ও উত্তর-মিয়ানমার উপকূল পার হয়েছে। সন্ধ্যার দিকে উপকূল ছেড়ে মোখা আরও দুর্বল হয়ে যেতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। তবে এর প্রভাবে উপকূলীয় জেলাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে আছে জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কাও।

আজ আবহাওয়া অধিদপ্তরের ২১তম বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।

মোখার প্রভাবে কক্সবাজারের টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে ব্যাপক ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলেছে, বেলা আড়াইটার সময় সেন্টমার্টিন দ্বীপে ১৪৭ কিলোমিটার পর্যন্ত বাতাসের গতিবেগ ছিল। মোখার প্রভাবে টেকনাফেও ব্যাপক ঝড়-বৃষ্টি হয়েছে।

আজ আবহাওয়ার বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপকূল ছাড়তে থাকা মোখা উত্তর ও উত্তরপুর্ব দিকে এগিয়ে সামান্য দুর্বল হয়ে গেছে। ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র আজ বেলা তিনটায় মিয়ানমারের সিটুয়ের কাছে দিয়ে কক্সবাজার ও উত্তর-মিয়ানমার উপকূল ছেড়ে মিয়ানমারের স্থলভাগের ওপর আছে। সম্পূর্ণ ঘূর্ণিঝড়টি আজ সন্ধ্যা নাগাদ উপকূল ছেড়ে ধীরে ধীরে দুর্বল হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও এর কাছাকাছি এলাকায় বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১২০ কিলোমিটার। এটি দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১৩০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে।

কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহা বিপৎসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এই জেলা কাছের দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

আর চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে আট নম্বর মহা বিপৎসংকেত আট নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এর পাশাপাশি মোংলা সমুদ্রবন্দরকে চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং এসব জেলার কাছের দ্বীপ ও চরগুলোতে আট নম্বর মহা বিপৎ সংকেতের আওতায় থাকবে।

কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও বরগুনা জেলার নদী বন্দরসমূহকে চার নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ০৫-০৭ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ু তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে উপকূলীয় জেলা ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং এসব জেলা কাছের দ্বীপ ও চরগুলোর নিম্নাঞ্চলে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে তিন থেকে পাঁচ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।

ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল বিভাগে ভারী (৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতি ভারী (৮৯ মিলিমিটার) বৃষ্টি হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধস হতে পারে।

Share