নয়াবার্তা প্রতিবেদক : গত অক্টোবর মাসে দেশে ১৯৭ কোটি ৭৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার এসেছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি ডলার ১১০ টাকা ৫০ পয়সা ধরে যার পরিমাণ দাাঁড়ায় ২১ হাজার ৮৫২ কোটি টাকা। প্রতিদিন এসেছে প্রায় ৬ কোটি ৩৯ লাখ ডলার বা ৭০৫ কোটি টাকা। যা চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয়। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ৬৮৮ কোটি ৪৫ লাখ ১০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। বুধবার (০১ নভেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান থেকে এমন তথ্য জানা গেছে। মূলত প্রণোদনা বৃদ্ধির ফলে প্রবাসী আয়ের পালে হাওয়া লেগেছে।
গত সেপ্টেম্বরে শেষ ৪১ মাসের সর্বনিম্ন ১৩৩ কোটি ৪৩ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলার প্রবাসী আয় আসে। ডলারে দাম বাড়ানোর পাশাপাশি প্রণোদনা বৃদ্ধির এক মাসের ব্যবধানে ৬৪ কোটি ৩২ লাখ ১০ হাজার ডলার বা ৫১ হাজার ৩০৭ কোটি ৪৭ লাখ টাকা বেড়ে গেছে। যা আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেশি। ২০২২ সালের অক্টোবর মাসে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৫২ কোটি ৫৫ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার।
অক্টোবর মাসে রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের ৬ বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৫ কোটি ৪৪ লাখ ৭০ হাজার ডলার। বিশেষায়িত কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে আসে ৫ কোটি ৮২ লাখ ডলার। সব বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে আসে ১৭৫ কোটি ৮৮ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকের মাধ্যমে আসে ৬০ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার।
যখন সরকার ডলার সংকটে হিমসিম খাচ্ছে, রিজার্ভে টান পড়েছে- সে সময়ে ডলার ও প্রবাসে আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস প্রবাসী আয়ের ঘুরে দাঁড়িয়েছে। এ সময়ে কয়েক দফায় প্রবাসী আয়ের ডলারের মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রণোদনা বাড়িয়েছে। সর্বশেষ মঙ্গলবার ডলারের দাম ৫০ পয়সা বাড়িয়ে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা করা হয়েছে। গত সপ্তাহে প্রবাসী আয়ে সরকারের ২ দশমিক ৫০ শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে ২ দশমিক ৫০ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার অনুমতি দেয়। এর ফলে প্রবাসী আয়ের ১ ডলারের বিপরীতে প্রায় ১১৬ টাকা পাচ্ছে।
সাধারণত হুন্ডির মাধ্যমে আসায় কয়েক মাস ধরে প্রবাসী আয় আশঙ্কজনকভাবে কমে যায়। বিষয়টি সরকারের নীতি নির্ধারক মহলের তাগাদায় জরুরি বৈঠকে বসে বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশ (এবিবি)। সিদ্ধান্তে প্রবাসী আয়ের ডলারের মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি প্রণোদনা বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করা। আর এতেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে প্রবাসী আয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন বলছে, সেপ্টেম্বর মাসে ১৩৪ কোটি ৩৬ লাখ ৬০ হাজার ডলার প্রবাসী আয় আসে। আগস্টে এসেছিল ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ডলার। আর জুলাই মাসে ১৯৭ কোটি ৩০ লাখ ডলারের (১.৯৭ বিলিয়ন ডলার) রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। গত জুন মাসে দেশে রেকর্ড পরিমাণ ২১৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার (২.১৯ বিলিয়ন ডলার) প্রবাসী আয় এসেছিল।
আগামীতে প্রবাসী আয়ের এ ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।
