রিজার্ভের শর্তে ছাড় দিয়ে তৃতীয় কিস্তি অনুমোদন দিল আইএমএফ

নয়াবার্তা প্রতিবেদক : বাংলাদেশের সঙ্গে ঋণ বন্দোবস্তের দ্বিতীয় পর্যালোচনা শেষ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। ফলে বাংলাদেশ শিগগিরই প্রায় ১১৫ কোটি ডলার ঋণ পাচ্ছে।

এক বিজ্ঞপ্তিতে আইএমএফ বলেছে, বর্ধিত ঋণসুবিধা (ইসিইএফ), বর্ধিত তহবিল সুবিধা (ইএফএফ) ও রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটির (আরএসএফ) অধীন ঋণসহায়তা কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যালোচনা শেষ হয়েছে।

ঋণের তৃতীয় কিস্তি হিসেবে ইসিএফ/ইএফএফের অধীন বাংলাদেশ পাচ্ছে ৯২৮ মিলিয়ন বা ৯২ কোটি ৮০ লাখ ডলার এবং আরএসএফের অধীন ২২০ মিলিয়ন ডলার বা ২২ কোটি ডলার। অর্থাৎ তৃতীয় দফায় বাংলাদেশ পাচ্ছে মোট ১১৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার। এর আগে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম কিস্তিতে ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পেয়েছিল বাংলাদেশ। গত ডিসেম্বরে পেয়েছিল দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার।

আইএমএফের এই ঋণ কর্মসূচির যেসব শর্ত দেওয়া হয়েছিল তার মধ্যে বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভের শর্ত পূরণ হয়নি। সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় সংশোধনমূলক ব্যবস্থা নেবে—এই শর্তে রিজার্ভের শর্তে ছাড় দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের অর্থনীতির বিভিন্ন সূচক বিশ্লেষণ করেছে আইএমএফ। তারা বলেছে, বাংলাদেশের অর্থনীতি বহুমুখী চ্যালেঞ্জের মুখে আছে। বিশ্ববাজারে ধারাবাহিকভাবে পণ্যের উচ্চ মূল্য ও বৈশ্বিক আর্থিক খাতে অর্থপ্রবাহ কমে যাওয়ায় বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির সংকট বেড়েছে। চলতি হিসাব সংকুচিত হলেও হঠাৎ আর্থিক হিসাবের ঘাটতি তৈরি হওয়ায় বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ও টাকায় চাপ পড়েছে। এই চাপ সামলাতে অবশ্য মুদ্রার বিনিময় হার সংশোধনে সাহসী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

আইএমএফ বলেছে, আমদানি সংকোচন নীতির কারণে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। পরের অর্থবছরে বিদেশি মুদ্রার সংকট কাটলে এবং আমদানি স্বাভাবিক হলে প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৬ শতাংশে উঠতে পারে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম ভাগে প্রকৃত জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৪ দশমিক ৮ শতাংশ; সেই সঙ্গে মূল্যস্ফীতিও ঊর্ধ্বমুখী। চলতি বছরের এপ্রিলে মূল্যস্ফীতির হার ৯ দশমিক ৭ শতাংশে ওঠে।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি হতে পারে ৯ দশমিক ৪ শতাংশ। পরের অর্থবছরে তা কমে ৭ দশমিক ২ শতাংশে নেমে আসতে পারে। নীতিগত ধারাবাহিকতা ও বিশ্ববাজারে পণ্যের দাম কমে আসার সম্ভাবনার কারণে মূল্যস্ফীতি কমে আসতে পারে বলে মনে করছে আইএমএফ। সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের মধ্যেও অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা থাকবে; সেই সঙ্গে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার ঝুঁকি আছে।

অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ২০২২ সালের জুলাইয়ে আইএমএফের কাছে ঋণ চায়। বাংলাদেশের ঋণ আবেদনের ছয় মাস পর সংস্থাটি গত বছরের ৩০ জানুয়ারি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আইএমএফ জানায়, শর্ত পূরণ সাপেক্ষে ২০২৬ সাল পর্যন্ত মোট সাত কিস্তিতে ঋণের এ অর্থ দেওয়া হবে।

Share