ডিবি কার্যালয়ে অনশনের পর ৬ সমন্বয়ক মুক্তি পেয়েছেন

নয়াবার্তা প্রতিবেদক : বৈষম্যবিরোধী অন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে টানা ৩২ ঘণ্টা অনশনের পর মুক্তি পেয়েছেন। ছাড়া পাওয়ার পর সমন্বয়ক ও পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ডিবি কার্যালয়ে তাদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে। নির্যাতনের মুখেই তারা ২৮ জুলাই তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।

পরে তারা টানা ৩২ ঘণ্টা অনশনে যান। অনশনরত অবস্থায় বৃহস্পতিবার দুপুরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ছেড়ে দেওয়ার আগে তাদের পরিবারের সদস্যদের ডেকে নেওয়া হয় ডিবি কার্যালয়ে। পরে ছয় পরিবারের সদস্যদের জন্য পৃথক ছয়টি গাড়ির ব্যবস্থা করে ডিবি। ওইসব গাড়িতে সমন্বয়কদের বাসাবাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়।

ছাড়া পাওয়ার পর নাহিদ ইসলাম বলেন, এই মুহূর্তে শারীরিক ও মানসিক অবস্থা ভালো নয়। বাসায় ফিরেই স্যালাইন নিয়েছি। একটু সুস্থ হলে ছয়জন মিলে বসে সব কথা ক্লিয়ার করে বলব।

তিনি বলেন, ডিবি কার্যালয় থেকে বারণ করা হয়েছে, যাতে মিডিয়ায় আমরা কোনো কথা না বলি। তারা তাদের মতো করে বলেছে। কিন্তু আমরা তাদের কথা শুনব না। আমরা আমাদের মতো করে সবই বলব। এক্ষেত্রে আমাদের একটু সময় দেন। আগে আমাদের সুস্থতা দরকার।

সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামের বাবা বদরুল ইসলাম বলেন, ডিবি কার্যালয়ের নির্যাতন ও ৩২ ঘণ্টার অনশনে খুব দুর্বল অবস্থা আছে। এই মুহূর্তে কথা বলার মতো অবস্থায় নেই। কথা বলার মতো পরিস্থিতি হলে সে সবই জানাবে।

তিনি বলেন, বাসায় ফেরার জন্য ডিবির পক্ষ থেকে সবাইকে (কোটা সংস্কার আন্দোলনের ছয় সমন্বয়ক) কালো গ্লাসের গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়।

ডিবির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আমরা যেন কারও সঙ্গে কথা না বলি। তিনি বলেন, ডিবির কাছে আমরা কোনো নিরাপত্তা চাইনি। তারপরও ডিবি নিরাপত্তার নামে আমাদের সন্তানদের তুলে এনে নির্যাতন চালিয়েছে। মানসিক নির্যাতন বেশি হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ডিবি কার্যালয়ে নেওয়ার আগে আমার ছেলেকে তার এক বন্ধুর বাসা থেকে তুলে নিয়ে নির্মম শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালানো হয়। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করি। চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে নিরাপত্তার নামে ডিবি কার্যালয়ে এনে আটক রাখা সত্যিই দুঃখজনক।

তিনি আরও বলেন, ডিবি পুলিশ তুলে নেওয়ার পর প্রথমে বিষয়টি স্বীকারই করেনি। প্রথমদিন আমাদের দেখা করতে দেয়নি। পরদিন দেখা করতে দেয়। ডিবি কার্যালয়ের ভেতর থেকে বিবৃতি দেওয়ার আগ পর্যন্ত তারা খুবই নির্যাতনের মুখে ছিল। বিবৃতি দেওয়ার পর অনেকটা স্বাভাবিক আচরণ করেছে।

Share