লালগালিচার পাড় মাড়িয়ে খালে নামলেন তিন উপদেষ্টা

উদ্বোধন করলেন খননকাজ

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর মিরপুর-১৩ নম্বর সেকশন খাল সংস্কারকাজের উদ্বোধন করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তিন উপদেষ্টা। উদ্বোধন করতে তিন উপদেষ্টা যে পথে যান, সেখানে বিছানো ছিল লালগালিচা (কার্পেট)। ওই গালিচা বিছানো পথে হেঁটে গতকাল রোববার সকালে তাঁরা বাউনিয়া খালের খননকাজ শুরুর মাধ্যমে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটির ছয়টি খালের সংস্কারকাজের উদ্বোধন করেছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, দুই সিটির আওতাধীন ছয়টি খালের সংস্কারকাজ শুরুর জন্য মিরপুর-১৩ নম্বর সেকশনে রূপসী প্রো-অ্যাকটিভ ভিলেজ আবাসিক এলাকার বাউনিয়া খালসংলগ্ন রাস্তায় একটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনসহ পানি সম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, গৃহায়ণ ও গণপূর্তসহ শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়সহ যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ওই তিন উপদেষ্টাসহ অন্য কর্মকর্তারা বাউনিয়া খালের পাড়ে যান। এর আগেই খালে একটি ভাসমান খননযন্ত্র (ফ্লোটিং এক্সকাভেটর) এনে রাখা হয়। খালের পাড় থেকে ওই ভাসমান খননযন্ত্রে যেতে একটি অস্থায়ী পথ তৈরি করা হয়। ওই পথে বিছানো ছিল লাল রঙের একটি কার্পেট। তিন উপদেষ্টাসহ অন্য কর্মকর্তারা ওই পথে হেঁটে খালে থাকা ভাসমান খননযন্ত্রের ওপরে যান। উপদেষ্টারা খননযন্ত্রে ওঠার পর যন্ত্রটি চালু করে খালের খননকাজের উদ্বোধন করা হয়। উপদেষ্টাদের নিয়ে খাল থেকে কয়েকবার যন্ত্রের সাহায্যে খনন করা মাটি পাড়ে ফেলা হয়। খননকাজ শুরু করে দেওয়ার পর তিন উপদেষ্টাসহ অন্যরা খননযন্ত্র থেকে পাড়ে নেমে আসেন। এ সময় তাঁরা সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

এ সময় এক গণমাধ্যমকর্মী পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানকে একটি প্রশ্ন করেন। প্রশ্নটি ছিল, ‘আগে দেখতাম মেয়ররা এমন ধুমধাম করে উদ্বোধন করতেন। সেখানে হয়তো লালগালিচা থাকত না। কিন্তু আজকে দেখলাম আপনারা খালেই নামলেন লালগালিচার ওপর দিয়ে।’

এ বিষয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ওই সাংবাদিককে হেসে উত্তর দিয়ে বলেন, ‘ওটা তো অবশ্য আমি দেখিনি। ওটা অবশ্য আমি খেয়াল করিনি, আপনি খেয়াল করেছেন?’ এর আগে রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘এই ফেব্রুয়ারির মধ্যে আমরা ঢাকা শহরের চারটি নদীকে দূষণমুক্ত করার কাজ শুরু করব। দক্ষিণ কোরিয়া, চীন, লন্ডন, নেপাল, ইন্দোনেশিয়া বলেন, ১০ বছরের আগে কোনো দিনও কোনো নদীকে ওভাবে দূষণমুক্ত করতে পারেনি। বিষয়টি হচ্ছে এমন একটি অ্যাকশন প্ল্যান দেওয়া, যেখানে বলা থাকবে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বছর কী করা হবে, সেই কর্মপরিকল্পনা আমরা চূড়ান্ত করব।’

রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, ১৬ ফেব্রুয়ারি এডিবির একটি দল আসবে, তারা আমাদের নেপাল, ইন্দোনেশিয়া ও চীনে তারা কীভাবে তিনটি নদী কীভাবে পুনরুদ্ধার করেছিল, সেই অভিজ্ঞতা শেয়ার করবে। জিপিএস দিয়ে সব দূষণ ম্যাপিং করা হয়েছে। একেকটি নদীর নিচে তিন থেকে পাঁচ মিটার পলিথিনের স্তর রয়েছে বলেও জানান তিনি।
ঢাকা শহরের ভেতরের ও চারপাশের সব জলাধার—খাল, জলাশয় ইত্যাদির কার্যকর ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে নগরজীবনের পরিবেশগত, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন সাধন করতে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণের আওতাধীন ছয়টি খাল সংস্কারকাজের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Share