দেশে করোনায় আক্রান্ত ৭ হাজার ছাড়ালো , মোট মৃত্যু ১৬৩ জন

২৪ ঘন্মৃটায় মৃত্যু ৮, নতুন শনাক্ত ৬৪১ জন

নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : দেশে মহামারি করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এ আক্রান্ত শনাক্তের ৫৩তম দিনে আরো ৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকায় ৬ জন এবং ঢাকার বাইরে ২ জন। এ নিয়ে করোনা ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ালো ১৬৩ জনে। ২৪ ঘণ্টায় ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন আরো ৬৪১ জন। এ নিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার ১০৩ জনে। নতুন করে সুস্থ হয়েছেন ১১ জন। মোট সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ১৫০ জন। এর আগে মঙ্গলবার ৫৪৯ জন নতুন শনাক্তের কথা জানানো হয়েছিল। আর ৩ জনের মারা যাওয়ার কথা জানানো হয়। দেশের ৬০টি জেলায় আক্রান্ত পাওয়া গেছে। সাতক্ষীরা,নাটোর, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলা করোনা মুক্ত রয়েছে।

এদিকে চারটি বেসরকারি হাসপাতালকে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এগুলো হল : এভারকেয়ার হাসপাতাল লিমিটেড (সাবেক এ্যাপোলো হাসপাতাল), স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড ও ইউনাইটেড হাসপাতাল লিমিটেড। এ জন্য রোগীদের খরচ হবে সাড়ে তিন হাজার টাকা।

এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বাইরের রোগী পরীক্ষা করতে পারবে। এ জন্য রোগীদের কোনো ফি দিতে হবে না। এই চারটিসহ মোট ২৯ হাসপাতালে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার ব্যবস্থা হচ্ছে।

বুধবার দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত অনলাইন ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য দেয়া হয়। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। তিনি বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯৬৮ নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ৬৪১ জন। ফলে দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা ৭১০৩ জন।

একই সময়ে আরও আটজন মারা গেছেন। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মোট ১৬৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। সুস্থ হয়ে বাড়ি গেছেন মোট ১৫০ জন। তিনি বলেন, সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫৯ হাজার ৭০১টি। আর মোট করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন সাত হাজার ১০৩ জন।

এর আগে মঙ্গলবার ৫৪৯ জন, সোমবার ৪৯৭ এবং রোববার ৪১৮ জন করোনাভাইরাসের রোগী শনাক্ত হয়। নমুনা পরীক্ষা বৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ছে শনাক্তের সংখ্যাও।

নিয়মিত ব্রিফিংয়ে অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ৮ জন। এই আটজনের মধ্যে ছয়জন পুরুষ এবং দু’জন নারী। ছয়জনই ঢাকার বাসিন্দা এবং দু’জন ঢাকার বাইরের। বয়সের দিক থেকে চারজন ষাটোর্ধ্ব, দু’জন পঞ্চাশোর্ধ্ব এবং দু’জন ত্রিশোর্ধ্ব।

তিনি বলেন, করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে যারা বাড়িতে আছেন, তারা অধিদফতরের হটলাইনের মাধ্যমে চিকিৎসা নেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাদের লক্ষণ ও উপসর্গগুলো মৃদু থাকে। তারা বাড়িতে চিকিৎসা নিয়েই সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন।

করোনার উপসর্গ যখন শেষ হয়ে যাবে, তার ১৪ দিন পর তার দ্বিতীয় নমুনা নেয়া হয়। তার সাত দিন পর আবার নমুনা নেয়া হয়। পরপর দুটি পরীক্ষায় করোনা নেগেটিভ এলে আমরা তাদের সম্পূর্ণ সুস্থ বলি।

এতে আরও বলা হয়, ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে একভাগ রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাকি তিন ভাগ বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাড়ি থেকে চিকিৎসা যারা নিচ্ছেন তাদের মধ্যে ৩৮ জন সুস্থ হয়েছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আইসোলেশনে এসেছেন ১০৩ জন আর এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে আছেন এক হাজার ৩৪০ জন। আইসোলেশন থেকে মুক্ত হয়েছেন ৪৮ জন।

এ পর্যন্ত আইসোলেশন থেকে মুক্ত হয়েছেন ৮৩৩ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় হোম কোয়ারেন্টিনে আছেন দুই হাজার ৪১২ জন, আর প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ১৩২ জন। সারা দেশে মোট ২ হাজার ৫৪৪ জন কোয়ারেন্টিনে আছেন।

অতিরিক্ত মহাপরিচালক বলেন, রাজধানীর তিনটি বেসরকারি হাসপাতালকে করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এগুলো হল : এভারকেয়ার হাসপাতাল লিমিটেড (সাবেক এ্যাপোলো হাসপাতাল), স্কয়ার হাসপাতাল লিমিটেড ও ইউনাইটেড হাসপাতাল লিমিটেড।

এখন থেকে এ হাসপাতালগুলোয় যেসব নমুনা পরীক্ষা করা হবে, সেগুলো সরকারি ল্যাবরেটরির মোট নমুনার সঙ্গে যোগ করে প্রকাশ করা হবে। এসব হাসপাতালে যে রোগী ভর্তি হবে, শুধু তাদের নমুনাই পরীক্ষা করতে পারবে। আউট ডোরের পেশেন্ট পরীক্ষার অনুমতি দেয়া হয়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন।

এ ছাড়া নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকেও নমুনা পরীক্ষার অনুমোদন দেয়া হয়েছে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকার এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানান তিনি।

গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।

দেশে প্রথম কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হন ৮ মার্চ এবং এ রোগে আক্রান্ত প্রথম রোগীর মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ। ভাইরাসটিতে বিশ্বজুড়ে এখন পর্যন্ত প্রায় দুই লাখ ১৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

Share