নিজস্ব জেলা প্রতিবেদক : মাদারীপুরের রাজৈরে করোনা ভাইরাসে প্রথম আক্রান্ত সুমন মুন্সী সুস্থ হয়ে গত রবিবার (৩ মে) বাড়ি ফেরেন। এরপর আজ বৃহস্পতিবার (৭মে) দুপুরে তার স্ত্রী বৈশাখী (২২) ও শিশু সন্তান ইসমাইল (৩) করোনা যুদ্ধে জয়ী হয়ে নিজ বাড়ি ফিরে গেছেন।
জানা গেছে, রাজৈর উপজেলার কোদালিয়া বাজিতপুর গ্রামের সুমন মুন্সী ঢাকার কদমতলীতে একটি ফলের দোকানের কর্মচারী হিসেবে কাজ করেন। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে তিনি ঢাকা থেকে নিজ বাড়িতে আসলে শরীরের করোনা ভাইরাসের লক্ষণ দেখা দেয়। এ খবর জানাজানি হলে রাজৈর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সুমন, তার স্ত্রী ও শিশু সন্তানকে হাসপাতালের নির্দিষ্ট কক্ষে কোয়ারেন্টাইনে রাখে। এরপর ৯ এপ্রিল সুমন মুন্সীর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হয়। দুদিন পরে রিপোর্ট আসে সুমনের শরীরে করোনা ভাইরাস পজিটিভ। পরে ১১ এপ্রিল শিশু সন্তান ও স্ত্রীর নমুনা ঢাকায় পাঠানো হয়। এতে শিশুটির করোনা পজিটিভ ও স্ত্রীর নেগেটিভ রিপোর্ট আসে। দীর্ঘদিন হাসাপাতালের আইসোলেশন থেকে চিকিৎসা নেওয়ার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এরপর ২৫ এপ্রিল নতুন করে তিন জনেরই নমুনা ঢাকা পাঠায়। এবারের করোনা টেস্ট রিপোর্টে সুমন ও তার সন্তানের নেগেটিভ আসে, তবে স্ত্রীর করোনা পজিটিভ আসে।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রদীপ চন্দ্র মণ্ডল জানান, পর পর দুইবার নেগেটিভ রিপোর্ট আসায় সুমন ও তার শিশু সন্তানকে বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হলেও শিশু ইসমাইল মাকে ছাড়া থাকতে পারবে না। এ কারণে শিশুটি করোনায় আক্রান্ত মা বৈশাখী বেগমের কাছে থেকে যায়। পুনরায় নমুনা ঢাকায় পাঠানোর পর বুধবার (৬ মে) বিকালে বৈশাখীর করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় সমস্ত বিধি মেনে মা ও ছেলেকে বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।
সুমন জানান, ‘হাসপাতালের ডাক্তাররা আমার এবং আমার স্ত্রী ও সন্তানের জন্য খাবার, ঔষধ ও পোশাক-এমনকি শিশু সন্তানকে শান্ত রাখতে খেলনা পর্যন্ত কিনে দিয়েছেন। আমি ৪ দিন আগেই সুস্থ হয়ে বাড়ি গিয়েছি। আজ আমার স্ত্রী ও সন্তান সুস্থ হয়ে বাড়ি যাচ্ছে। এতে আমি আনন্দিত।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহানা নাসরিন জানান, করোনায় আক্রান্ত একই পরিবারের তিনজনই করোনা মুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। তাদের আরো ১৪দিন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। তাদের এ ১৪ দিনের খাবারের ব্যবস্থা করা হবে।