নিজস্ব জেলা প্রতিবেদক : ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের প্রভাবে উপকূলীয় বাগেরহাটে বুধবার সকাল থেকে দমকা ঝড়ো হাওয়া বইতে শুরু করেছে। সেই সাথে বৃষ্টি হচ্ছে।আশ্রয় কেন্দ্রে ৯০ হাজারের অধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন।
বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার আশংকায় উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের বুধবার সকাল পর্যন্ত জেলার ৯৭৭টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে ৯০ হাজারের অধিক মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এদের মধ্যে বয়স্ক নারী, পুরুষ, শিশু ও প্রতিবন্ধীই বেশি রয়েছেন। দুর্গত মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে নিতে জেলায় প্রায় বারো হাজার স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছে। স্থানীয় প্রশাসন ও রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি আশ্রয় কেন্দ্রের এসব মানুষদের খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও মোমবাতি সরবরাহ করেছে। এসময় ১৩ হাজার গবাদি পশু আশ্রয় কেন্দ্রে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঝড় নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সমন্বয়কারী বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. কামরুল ইসলাম।
তিনি আরও জানান, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে যাওয়ায় জেলার আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে আগের মতো লোক গাদাগাদি করে রাখা যাবে না। সবাইকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে রাখতে হবে। এজন্য স্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রের সাথে অস্থায়ী আশ্রয় কেন্দ্রে মানুষদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলায় রেড ক্রিসেন্ট, স্কাউটস, সিপিপির মোট ১১ হাজার ৭০৮ জন স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৮৫টি মেডিকেল টিম। এ জেলার জন্য ২০০ মে. টন চাল, নগদ ৩ লাখ টাকা, শিশু খাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা. গো খাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দিয়েছেন।
অতি-বর্ষণ ও ঝড়ো হাওয়ায় মাঠে থাকা কৃষি ফসলের ক্ষতির আশংকা করছে কৃষি বিভাগ। বাগেরহাট জেলায় ৪ হাজার হেক্টর জমিতে করলা, ঝিঙে, ঢেঁড়স বিভিন্ন ধরনের সবজির আবাদ করা হয়েছে। এছাড়া পাট ১৮০০ হেক্টর, পান বরজ ১১০০ হেক্টরে এবং ৩৪৯ হেক্টরে আউশ ধানের বীজতলা রোপণ করা হয়েছে। আম্ফানের প্রভাবে অতি-বর্ষণে জলাবদ্ধতা, জোয়ারের জলোচ্ছ্বাস হলে এবং ঝড়ো বাতাসে এসব ফসল নষ্ট হওয়ার আশংকা করছেন বাগেরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ পরিচালক রঘুনাথ কর।