শিশু কেন্দ্রে ৩ কিশোর হত্যা, ৫ কর্মকর্তার নেতৃত্বে নির্যাতন

নিজস্ব জেলা প্রতিবেদক : যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে নির্যাতনের ঘটনায় তিন কিশোর নিহত হয়। এ ঘটনায় আরো ১৫ জন আহত হয়। শিশু কেন্দ্রের পাঁচ কর্মকর্তার নেতৃত্বে ওই কিশোরদের ওপর পৈশাচিক নির্যাতন চালানো হয়। এর মধ্যেই অভিযুক্ত ওই পাঁচ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

১৫ আগস্ট, শনিবার শনিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে যশোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন এসব তথ্য জানান।

এ ঘটনায় ওই কর্মকর্তাদের অনুগত সাত-আট কিশোর বন্দিও অংশ নিয়েছিল। ‘চুল কাটা নিয়ে বিরোধের সূত্র ধরে’ মিটিং করে ওই নির্যাতন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক ও সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, সহকারী তত্ত্বাবধায়ক প্রবেশন অফিসার মাসুম বিল্লাহ, কারিগরি প্রশিক্ষক ওমর ফারুক, ফিজিক্যাল ইন্সট্রাক্টর একেএম শাহানুর আলম ও সাইকো সোশ্যাল কাউন্সিলর মুশফিকুর রহমান। ১৪ আগস্ট, শুক্রবার ওই কেন্দ্রের ১০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে হেফাজতে নেয়ার পর মামলা হয়। এরপর ওই রাতে এই পাঁচ কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন জানান, ঘটনার সূত্রপাত ৩ আগস্ট। কিশোর বন্দি হৃদয় চুল কাটায় পারদর্শী। তাই এদিন হৃদয়কে চুল কেটে দিতে বলেন কেন্দ্রের নিরাপত্তাপ্রধান নূর ইসলাম। ঈদের আগে প্রায় দুশ বন্দির চুল কাটায় হৃদয় তার হাত ব্যথা উল্লেখ করে চুল কাটতে অস্বীকৃতি জানায়।

তিনি আরো জানান, এতে ক্ষুব্ধ হয়ে নূর ইসলাম কেন্দ্রের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ও সহকারী তত্ত্বাবধায়ক মাসুম বিল্লাহর কাছে অভিযোগ করেন, ‘ওরা ট্যাবলেট খেয়ে নেশাগ্রস্ত হয়ে রয়েছে।’ এছাড়া তিনি হৃদয় ও তার বন্ধু পাভেলের মধ্যে অনৈতিক সম্পর্কের ইঙ্গিত করেন।

পুলিশ সুপার আরো জানান, এ সময় সেখানে উপস্থিত কিশোর নাঈদ অভিযোগ শুনে বিষয়টি পাভেলকে জানিয়ে দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পাভেল তার কিছু অনুসারী কিশোরকে নিয়ে নূর ইসলামকে মারপিট করে। এতে তার হাত ভেঙে যায়। এ ঘটনার সূত্র ধরেই ১৩ আগস্টের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

এর আগে ১৩ আগস্ট, বৃহস্পতিবার রাতে যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিনজন কিশোর বন্দী নিহত হয়। প্রথমে সংঘর্ষে মৃত্যু হওয়ার কথা বলা হলেও পরে জানা গেছে পিটিয়ে ওই কিশোরদের হত্যা করা হয়।

Share