নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : রাজধানীর কাঁঠালবাগানের বাসার ৯ তলার বারান্দা থেকে ‘লাফিয়ে পড়ে’ ব্যারিস্টার আসিফ ইমতিয়াজ খান জিসাদের (৩৩) মৃত্যু হয়েছে। তিনি সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) শহিদুল ইসলামের ছেলে। ব্যারিস্টার আসিফ শ্বশুর বাড়িতে থাকতেন।
শহিদুল ইসলাম অভিযোগ করেছেন, তার ছেলেকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন হত্যা করেছে। তবে শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলছেন, বারান্দা থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছেন। শুক্রবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে কলাবাগান থানাধীন কাঁঠালবাগান ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের ১৬৩ নম্বর বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
আসিফ সিরাজগঞ্জ কামারখন্দ বাগবাড়ী এলাকার অ্যাডভোকেট শহিদুল ইসলাম খানের ছেলে। শহিদুল ইসলাম ১৯৮৬-৯০ মেয়াদে সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি কামারখন্দ) আসনের জাতীয় পার্টির এমপি ছিলেন। বর্তমানে তিনি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী।
আসিফের শ্যালক সাইমন শাহিদ নিশাদ জানান, চার বছর আগে আসিফ তার বড় বোন সাবরিনা শাহিদ নিশিতাকে প্রেমের সম্পর্কে বিয়ে করেন। তবে আসিফের পরিবার এটি মেনে নেয়নি। এজন্য আসিফ কাঁঠালবাগান শ্বশুর বাড়িতেই থাকতেন। তিনি দাবি করেন, আসিফ মাদকাসক্ত ছিলেন। চার মাস রিহ্যাবেও ছিলেন তিনি। আসিফ ও সাবরিনার সঙ্গে মাঝেমধ্যে পারিবারিক বিষয়াদি নিয়ে ঝগড়া হতো। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে আবারও স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া বাঁধে। একপর্যায়ে আসিফ ৯ তলার বারান্দা থেকে রেলিংয়ের ওপর দিয়ে লাফিয়ে নিচে পড়েন। আসিফকে উদ্ধার করে প্রথমে স্কয়ার হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ভোরে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে ভোর সাড়ে ৫টায় চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আসিফের বাবা শহিদুল ইসলাম বলেন, আসিফ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। মতিঝিলে দেশ ট্রেডিং করপোরেশনের লিগ্যাল অ্যাডভাইজার ছিল। তার শ্বশুর বাড়ির লোকজনই ভোরে খবর দেয় আসিফের অবস্থা ভালো না, তাকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়েছে। পরে এখানে এসে আসিফকে মৃত দেখতে পাই। আমাদের সন্দেহ আসিফকে মেরে ফেলা হয়েছে। সে আত্মহত্যা করতে পারে না।
কলাবাগান থানার ওসি পরিতোষ চন্দ্র জানান, মৃত ব্যক্তির বাবার লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কী কারণে এবং কিভাবে তিনি নিচে পড়েছেন সেটা তদন্ত করে দেখা হবে।
ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক ঢামেকের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. সোহেল মাহমুদ বলেন, প্রাথমিকভাবে ওপর থেকে পড়ে যাওয়ার সিমটম পেয়েছি। এ ছাড়া তার ভিসেরা পরীক্ষা জন্য পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাবে।