চাল জব্দের খবর শুনে পালালেন যুবলীগ-ছাত্রলীগের ৩ নেতা

নিজস্ব জেলা প্রতিবেদক : খাগড়াছড়িতে কালোবাজারে বিক্রি হওয়া খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ২৫৬ বস্তা সরকারি চাল জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় গা ঢাকা দিয়েছেন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের তিন নেতা। তবে আটক হয়েছেন দুই ব্যবসায়ী।

পলাতকরা হলেন- মাটিরাঙ্গার গোমতি ইউনিয়ন যুবলীগের সহ-সভাপতি আব্দুল মোমিন ও তাইন্দং ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল কাদের অপরজন হলেন দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি জহির উদ্দিন।

সোমবার জেলার দীঘিনালার মেরুং ইউনিয়নের মেরুং বাজারে দেলোয়ার হোসেনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়ে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ৭০ বস্তা চাল উদ্ধার করা হয়। এ সময় দেলোয়ার হোসেনকে আটক করা হয়।

এদিকে চোরাই চাল জব্দ করার খবর পেয়ে পালিয়ে যান ডিলার জহির উদ্দিন। তিনি মেরুং ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি।

আটক ব্যবসায়ি দেলোয়ার জানান, তিনি ডিলার জহির উদ্দিনের কাছ থেকে ৩০ কেজি ওজনের বস্তা প্রতি এক হাজার টাকা দরে মোট ৭০ বস্তা চাল কিনেন।

গোপন সূত্রে খবর পেয়ে দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্লাহ সোমবার দুপুরে এ অভিযান পরিচালনা করেন।

এ ব্যাপারে কালোবাজারি ও মজুতদারি আইনে মামলা রুজুর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান।

এদিকে গত রবিবার মাটিরাঙ্গার গোমতি ইউনিয়নে ৩৩৫ জন কার্ডধারীর কাছে ১০ টাকা কেজি দরে বিক্রির জন্য বরাদ্দকৃত ৩০ কেজি ওজনের ২৮ বস্তা সরকারি চাল জব্দ করা হয়। এসময় আবুল হাসেম নামে এক ব্যবসায়িকে আটক করা হয়।

আবুল হাসেমের বলিচন্দ্র কার্বারিপাড়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে এসব চাল জব্দ করেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফারজানা আকতার ববি।

গোপনে চালগুলো আবুল হাসেমের কাছে বিক্রি করেন সংশ্লিষ্ট ডিলার যুবলীগ নেতা আব্দুল মোমিন।

একই দিন রাতে উপজেলার তাইন্দং ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি মেম্বার ও ওয়ার্ড শ্রমিকলীগের সভাপতি জামাল হোসেনের চালের গুদাম থেকে ৩০ কেজি ওজনের ১৫৮টি চালের বস্তা জব্দ করা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিভীষণ কান্তি দাস গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জামান হোসেনের চালের গুদামে অভিযান চালিয়ে ১০ টাকা কেজি দরের ৩০ কেজি ওজনের ১৫৮টি চালের বস্তা জব্দ করেন।

জানা যায়, ঐ ইউনিয়নের ডিলার ও ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল কাদের চালগুলো কার্ডধারীদের না দিয়ে জামাল হোসেনের কাছে বিক্রি করেন।

ডিলার কাদেরের বাবা আব্দুল লতিফ তাইন্দং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে মাটিরাঙ্গা উপজেলা যুবলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাকিবুল হাসান মুঠোফোনে বলেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল কালোবাজারে বিক্রি করে আব্দুল মোমিন শুধু দলের সুনাম নষ্ট করেনি, প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ করেছে। এ ধরণের ব্যক্তির স্থান যুবলীগে থাকবে না। তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিভীষণ কান্তি দাশ বলেন, চাল কালোবাজারে বিক্রির ঘটনায় সংশ্লিষ্ট ডিলার এবং এর ক্রেতাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট ট্যাগ অফিসারের এ ঘটনায় গাফিলতি আছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হবে।

Share