২৩ দিনে বৈধ পথে প্রবাসী আয় এলো ১ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার

নয়াবার্ত‍া প্রতিবেদক : ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম ২৩ দিনে প্রবাসীরা বৈধ পথে ও ব্যাংকিং চ্যানেলে ১ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন বা ১৬৪ কোটি ৬১ লাখ মার্কিন ডলার সমপরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রায় রেমিট্যান্স দেশে পাঠিয়েছেন। দেশীয় মুদ্রায় প্রতি ডলার ১১০ টাকা ধরে যার পরিমাণ ১৮ হাজার ১০৭ কোটি টাকা। সে হিসাবে দৈনিক গড়ে ৬ কোটি ৮৫ লাখ ডলার প্রবাসী আয় দেশে এসেছে। আগের মাস জানুয়ারিতে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১০ কোটি মার্কিন ডলার। গতকাল ২৫ ফেব্রুয়ারি রোববার বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে ৪৪ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন প্রবাসী আয় আসে দেশে। এতে সরকার প্রণোদনা বাড়ায়। পাশাপাশি নির্ধারিত দামের অতিরিক্ত দামে প্রবাসী আয় না কেনার নির্দেশনা তুলে নেয়। এরপর থেকে প্রবাসী আয় বাড়তে থাকে। ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রেমিট্যান্স কেনায় ঘোষিত দর ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা হলেও ১২২ থেকে ১২৫ টাকা পর্যন্ত দরে কেনা যাচ্ছে। যে কারণে প্রবাসী আয় বাড়ছে। ২০২৩ সাল ও তার আগের বছরে যে হারে মানুষ কাজ নিয়ে বিদেশে গেছেন, হুন্ডির মাধ্যমে টাকা আসা ও অর্থ পাচার হওয়ায় ব্যাংকিং চ্যানেলে বৈধভাবে সে অনুপাতে রেমিট্যান্স বাড়েনি। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ায় রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা কেটে গেছে, পাচার কমেছে। এর প্রভাব পড়ছে প্রবাসী আয়ে। আগামী মাসগুলোয় এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তারা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি মাসের প্রথম ২৪ দিনে ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৬৪ কোটি ৬১ লাখ ডলার এসেছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৭ কোটি ৫৫ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ৬ কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৪০ কোটি ৪০ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৩৫ লাখ মার্কিন ডলার। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৫ কোটি ৮৮ লাখ ডলার, ফেব্রুয়ারিতে ১৫৬ কোটি ডলার, মার্চে ২০২ কোটি, এপ্রিলে ১৬৮ কোটি, মে মাসে ১৬৯ কোটি, জুনে ২২০ কোটি, জুলাইয়ে ১৯৭ কোটি, আগস্টে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ, সেপ্টেম্বর মাসে ১৩৩ কোটি, অক্টোবরে ১৯৭ কোটি, নভেম্বরে ১৯৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। এছাড়া গত বছরের ডিসেম্বর মাসে প্রবাসীরা পাঠিয়েছেন ১৯৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স। ২০২২-২৩ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১৬১ কোটি ৭ লাখ মার্কিন ডলার। ২০২১-২০২২ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ১০৩ কোটি ১৭ লাখ মার্কিন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে রেমিট্যান্স এসেছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ মার্কিন ডলার। যা ছিল সর্বোচ্চ পরিমাণ রেমিট্যান্স।

অর্থনীতিবিদদের মতে, রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির প্রভাব পড়ছে রিজার্ভে। চলতি মাসের শুরুতে গত ১ ফেব্রুয়ারি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ২ হাজার ৫০৯ কোটি ডলার। ২০ ফেব্রুয়ারি এটি বেড়ে দাঁড়ায় ২ হাজার ৫৩২ কোটি ডলারে। তবে আন্তর্জাতিক নিয়মে আইএমএফের হিসাব পদ্ধতি বিপিএম ৬ অনুযায়ী, ২০ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রকৃত রিজার্ভ দাঁড়ায় ২ হাজার ২০ কোটি ডলারে। যা মাসের শুরুতে ছিল ১ হাজার ৯৯৪ কোটি ডলার।

Share