নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দেশে এসে আটকেপড়া প্রবাসীদের বিদেশে চাকরিতে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে মন্ত্রিসভার আগামী বৈঠকে সমন্বিত প্রতিবেদন দিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রতিবেদন জমা দেয়ার এ নির্দেশ দেয়া হয়।
২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ১ লাখ ৪১ হাজার প্রবাসী দেশে ফেরত আসেন। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে এবং মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যরা সচিবালয় থেকে যুক্ত ছিলেন।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়রুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘বৈঠকের শেষে প্রধানমন্ত্রী বিদেশে কর্মসংস্থান নিয়ে অতিরিক্ত (অনির্ধারিত) আলোচনায় গিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে পরবর্তী মন্ত্রিসভার বৈঠকে কীভাবে আটকা পড়া প্রবাসী শ্রমিকদের ফেরত পাঠানো যায়, যথাযথভাবে পুনরায় নিয়োগ দেয়া যায় এবং বিদেশে নতুন শ্রমবাজার অন্বেষণ করা যায় সে বিষয়ে একটি বিস্তৃত প্রতিবেদন দিতে বলেছেন।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশী শ্রমিকদের জন্য উজবেকিস্তান এবং কাজাখস্তানের মতো কিছু সম্ভাব্য চাকরির বাজার রয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে উত্থাপন করা উপাত্ত অনুসারে, ২০২০ সালে মোট ১ লাখ ৪১ হাজার ৪৬ জন শ্রমিক দেশে ফিরেছেন এবং তাদের মধ্যে ৮৮ হাজার ৫৮৬ জন বহিরাগত বা ভ্রমণ ভিসা নিয়ে এসেছিলেন, যোগ করে তিনি বলেন, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় কোভিড-১৯ মহামারিকালীন সময়ে জনশক্তি রফতানি এবং বিদেশে কর্মসংস্থানের পরিস্থিতি সম্পর্কে এর ভবিষ্যত কর্ম পরিকল্পনা উত্থাপন করেছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রায় এক কোটি বাংলাদেশী বিদেশে থাকায় এবং বেশিরভাগ প্রবাসী নিয়মিত দেশে ভ্রমণ করায় ফেরত আসাদের সংখ্যা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগজনক নয়।
চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত আট মাসে প্রায় ১ লাখ ৮১ হাজার ২৭৩ বাংলাদেশী শ্রমিক বিদেশে গিয়েছেন, আগের বছরে একই সময়ে এ সংখ্যা ছিল ৪ লাখ ৬ হাজার ৯৬২ জন।
২০১৯ সালে প্রায় ৭ লাখ ১৫৯ জন বাংলাদেশী শ্রমিক বিদেশে গিয়েছিলেন এবং ২০২০ সালে সরকার প্রায় সাড়ে ৭ লাখ শ্রমিক রফতানি করার লক্ষ্য নিয়েছিল, তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী কোভিড -১৯ মহামারির প্রাদুর্ভাব সত্ত্বেও গত অর্থবছরে (২০১৯-২০২০) রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল ১৮.২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় ৯.৬ শতাংশ বেশি।
আটকে থাকা সৌদি প্রবাসীদের বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মন্ত্রিপরিষদকে জানিয়েছেন যে তিনি রোববার সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে কথা বলেছেন এবং বিপুল সংখ্যক সৌদি বিমান ও বিমান বাংলাদেশের ফ্লাইট চালনার অনুমতি দেয়ার এবং ভিসার মেয়াদ ২৪ দিন বাড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন।
ভিসার মেয়াদ কয়েকবার বাড়ানো হলেও সৌদি কর্তৃপক্ষ আরও সময় বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছে, বলেন মন্ত্রী।