নয়াবার্তা ডেস্ক প্রতিবেদন : যুক্তরাষ্ট্রের খ্যাতনামা টিকা প্রস্তুতকারক কোম্পানি মডার্নার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টেফানি ব্যানসেল বলেছেন, এক বছরের মধ্যেই করোনাভাইরাস মহামারি শেষ হতে পারে। টিকার উৎপাদন বৃদ্ধি ও মানুষের মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরির কারণে এটা ঘটবে বলে তার আশা।
এদিকে, করোনাভাইরাস একসময় সাধারণ ঠান্ডা জ্বরে পরিণত হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন করোনার অন্যতম টিকা আবিস্কারক বিশ্বখ্যাত বিজ্ঞানী সারাহ গিলবার্ট।
সুইজারল্যান্ডের একটি পত্রিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ব্যানসেল বলেছেন, গত ছয় মাসে করোনার টিকা উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধির দিকে তাকালে দেখা যাবে, আগামী বছরের মাঝামাঝিতে প্রতিষেধকটি সবার কাছে সহজলভ্য থাকবে। তাতে বিশ্বের প্রত্যেককে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে। প্রয়োজনে বুস্টার ডোজও দেওয়া সম্ভব হবে।
মডার্নার সিইও বলেন, যারা টিকা পাবেন না, তাদেরও প্রাকৃতিকভাবে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠবে। যারা টিকা নেবেন, আসন্ন শীত তাদের বেশ আনন্দে কাটবে। কিন্তু যারা টিকা নেবেন না, তারা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতেই থাকবেন।
এক প্রশ্নের জবাবে ব্যানসেল বলেন, ‘আজকে থেকে এক বছরের মধ্যে আমরা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরব বলে আমি মনে করি।’ এখন পর্যন্ত বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪৩ ভাগের বেশি টিকার অন্তত একটি ডোজ পেয়েছেন। তবে দরিদ্র দেশগুলো এখনও টিকাদানে বেশ পিছিয়ে রয়েছে। এসব দেশে জনসংখ্যার মাত্র ২ ভাগকে টিকাদান সম্ভব হয়েছে।
ব্যানসেল বলেন, ‘আমরা এখন করোনার ডেলটা ধরন প্রতিরোধ করতে পারে, এমন টিকার পরীক্ষা চালাচ্ছি। আগামী বছর তা বুস্টার ডোজের রূপ নেবে। এ ছাড়া আমরা ডেলটা প্লাস ও বিটা সংস্করণ নিয়েও কাজ করছি।’ তিনি বলেন, বুস্টার ডোজ হবে এক ডোজের অর্ধেক।
এদিকে, বুধবার যুক্তরাজ্যের রয়েল সোসাইটি অব মেডিসিনের এক ওয়েবিনারে অপফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা উৎপাদনকারী দলের অন্যতম প্রধান অধ্যাপক সারাহ গিলবার্ট বলেন, আমরা এখনও মানুষকে সংক্রমিত করতে সক্ষম চারটি আলাদা করোনাভাইরাসের সঙ্গে বসবাস করছি। কিন্তু সেগুলো নিয়ে আমরা খুব বেশি চিন্তিত হই না। এক সময় এই সার্স-কভ-২ (নভেল করোনাভাইরাস) সেগুলোর মতোই হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, করোনা আরও প্রাণঘাতী হয়ে উঠবে-এমন সম্ভাবনা খুব কম। ভবিষ্যতে এই ভাইরাস ক্রমেই শক্তি হারিয়ে ফেলবে। কেননা, তখন তাকে কভিড প্রতিরোধী জনগোষ্ঠীর মাধ্যমেই ছড়াতে হবে।
সারাহ বলেন, ভবিষ্যৎ মহামারির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। সামান্য বিনিয়োগ দীর্ঘমেয়াদে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার বাঁচাতে পারে। অতীতে প্রাদুর্ভাব সৃষ্টি করেছে এবং ভবিষ্যতেও করবে- এমন রোগের টিকা বানাতে মহামারির আগে থেকেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। এখনই ভবিষ্যৎ মহামারি মোকাবিলার পরিকল্পনা শুরু করা দরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।