চবি সংবাদদাতা : ‘এত রাতে বাইরে কেন’ জানতে চেয়ে মারধর শুরু করে। তখন ছাত্রীটির বন্ধু বাধা দিলে তাকে এলোপাথাড়ি কিল-ঘুসি, লাথি মেরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম করে। এক পর্যায়ে আসামিরা ভুক্তভোগী ও তার বন্ধুকে জোর করে বেগম ফজিলাতুন নেছা হলের পেছনে নিয়ে যায়। এসময় জিজ্ঞেস করে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন সেশনে ও বিভাগে পড়াশুনা করেন। আসামিরা ওই ছাত্রীকে এসময় যৌন হয়রানি করে এবং ভিডিও ধারণ করে। সংবাদ সম্মেলনে র্যাব অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ এতথ্য জানান।
শনিবার (২৩ জুলাই) দুপুরে র্যাব-৭ এর চট্টগ্রামের চাঁন্দগাও ক্যাম্পে এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রীকে যৌন হেনস্তার বিস্তারিত তুলে ধরেন র্যাব-৭ এর অধিনায়ক।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলো- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র মো. আজিম (২৩), হাটহাজারী কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র নূর হোসেন প্রকাশ শাওন (২২), চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের মো. নুরুল আবছার বাবু (২২) ও হাটহাজারী কলেজের অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র মো. মাসুদ রানা মাসুদ (২২)।
গত ১৭ জুলাই রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টা। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের (২০২০-২১) একজন ছাত্রী রাতের খাওয়া-দাওয়া শেষে হল থেকে বের হয়ে ক্যাম্পাসে হাঁটতে বের হন। বন্ধুর সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকা হয়ে প্রীতিলতা হল সংলগ্ন রাস্তায় যাওয়ার পথেই তাদের গতিরোধ করে পাঁচ তরুণ। এরপর এই তরুণদের দ্বারা যৌন হেনস্তার শিকার হন ওই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীর শরীরের কাপড় খুলে ভিডিও ধারণ করে অভিযুক্তরা।
র্যাব আরও জানায়, আসামিদের একজন হুমকি দেয়; তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক না করলে ধারণকৃত ভিডিও ভাইরাল করে দেবে। তারা ওই ছাত্রী ও তার বন্ধুকে প্রায় এক ঘণ্টা আটক করে দুটি মোবাইল সেট ও নগদ ১৩ হাজার ৭০০ টাকা ছিনিয়ে নেয়।
র্যাব জানায়, ঘটনার পর ছাড়া পেয়ে ওই ছাত্রী তাৎক্ষণিক পুরো ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানায়। এরপর ঘটনাটি চারদিকে জানাজানি হলে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার শুরু থেকেই তদন্ত শুরু করে র্যাব-৭।
সর্বশেষ শুক্রবার রাতে রাউজান উপজেলা থেকে ঘটনার মূলহোতা আজিমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মোট ৬ জন আসামিকে শনাক্ত করা হয়। এদের মধ্যে মূলহোতা আজিমসহ ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রী হাটহাজারী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।