ওসির সামনে উপজেলা চেয়ারম্যানকে কুপিয়ে আহত করার ভিডিও ভাইরাল

পটুয়াখালী প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ঘটনার ২১ দিন পর রোববার ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে ভিডিওটি। এতে দেখা যায়, বাউফল থানার ওই সময়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুনের সামনে কালাইয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্য মোহাম্মদ শফি হাওলাদারের নেতৃত্বে ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেবের ওপর হামলা করা হয়। একপর্যায়ে আবদুল মোতালেব সড়কের ওপর শুয়ে পড়েন। এরপরও শফি হাওলাদার, সজীব দাসসহ কয়েকজন তাঁকে কোপাতে ও পেটাতে থাকেন।

মোহাম্মদ শফি হাওলাদার এ ঘটনায় করা মামলার ৩ নম্বর আসামি। ভিডিওটির বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কালাইয়া ইউনিয়ন যুবলীগের এই সদস্য বলেন, ‘ভিডিওতে সুপার এডিট করে আমার ছবি লাগানো হয়েছে। আমি কোনো হামলা চালাইনি।’ অপর অভিযুক্ত সজীব দাস মামলার ৬ নম্বর আসামি। এ বিষয়ে কথা বলতে তাঁর মুঠোফোনে একাধিকবার কল করে সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

ভিডিওতে পুলিশের সামনে উপজেলা চেয়ারম্যানের ওপর হামলা চালাতে দেখা যাওয়ার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সম্প্রতি যোগ দেওয়া বাউফল থানার ওসি এ টি এম আরিচুল হক বলেন, ‘বিষয়টি আমার নজরে পড়েনি। আমি সম্প্রতি এই থানায় যোগ দিয়েছি। তবে আমি আসার পর আসামিদের মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ওই দুজন পটুয়াখালী আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হন। যতটুকু জেনেছি, বাকি আসামিরা উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিন নিয়েছেন।’

গত ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে আয়োজিত পৃথক কর্মসূচি ঘিরে বাউফল উপজেলা আওয়ামী লীগের দুটি পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে অর্ধশত ব্যক্তি আহত হন। ওই সময় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব হাওলাদারকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়।

এ ঘটনার ১৪ দিন পর ২ এপ্রিল রাতে বগা ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. দিদারুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও কালাইয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এস এম ফয়সাল আহম্মেদ ওরফে মনির হোসেন মোল্লা মামলার ১ নম্বর আসামি।

মামলায় মোট ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের সবাই স্থানীয় সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের অনুসারী। তাঁদের মধ্যে দুজন তাঁর ভাতিজা।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ১৭ মার্চ বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠ থেকে আবদুল মোতালেবের নেতৃত্বে ১০-১৫ হাজার নেতা-কর্মী আনন্দ র‍্যালি নিয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের (জনতা ভবন) দিকে যাচ্ছিলেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদের গেটের পূর্ব পাশে পৌঁছালে গাড়ির মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকা সংসদ সদস্য আ স ম ফিরোজের সামনে তাঁর দুই ভাতিজার নেতৃত্বে আবদুল মোতালেবের ওপর রড ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালানো হয়।

হামলায় তাঁর ডান হাতের তৃতীয় আঙুল কেটে চামড়ার সঙ্গে ঝুলে থাকে। তাঁর বুকের ডান পাশে ও ডান হাতের কনুইয়ের ওপরের অংশে জখম হয়। ডান পা ভেঙে যায় ও মাথায় আঘাত লাগে। বর্তমানে তিনি রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

Share