নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : চলমান সর্বাত্মক লকডাউনে অন্যান্য সেক্টরের পাশাপাশি দোকান শপিংমলও বন্ধ করা দেওয়া হয়। শ্রমজীবী খেঁটে খাওয়া মানুষ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অসুবিধার কথা চিন্তা করে সরকার আগামী ২৫ এপ্রিল থেকে দোকানপাট ও শপিংমল খোলা দেওয়ার ঘোষণা দেয়।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখা যাবে বলে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রজ্ঞাপনে আজ শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) বলা হয়েছে। ফলে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সাধারণ ক্রেতারা, ব্যবসায়ী কর্মচারীরা কীভাবে মার্কেটে যাওয়া আসা করবে সেটা নিয়ে নতুন করে শংকায় পড়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
দোকান ও শপিংমল অনেক দিন বন্ধ থাকায় অনেকেরই কেনাকাটা জমে আছে। তাছাড়া সামনে ঈদ-উল-ফিতর। সে উপলক্ষেও কেনাকাটার হিড়িক পড়তে পারে। মার্কেট খোলার কথা শুনেই রবিবার মার্কেট যাওয়ার প্রস্তুতির কথা জানালেন শারমিন সুলতানা। তবে তিনি বলেন, শপিংমল খুলে দিচ্ছে অথচ যাওয়া আসা কীভাবে করবো এইটা নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। সবাইর তো আর প্রাইভেট গাড়ি নেই। আমরা যারা সাধারণ ক্রেতা যাবো গণপরিবহন বন্ধ থাকলে কি করে মার্কেটে যাবো। মার্কেট যেহেতু খুলে দিয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গণপরিবহন খুলে দিক।
বেসরকারী চাকরিজীবী মুমিনুল হাসান বলেন, গত বছর যেভাবে লকডাউন ছিল এ বছর এসে লকডাউনে মানুষ মানতে চাচ্ছে না। মানুষ প্রয়োজনে ঠিকই বের হচ্ছে। মানুষের দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে যেহেতু শপিংমল খুল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার তাহলে গণপরিবহনও খুলে দেওয়ার বিবেচনা করতে পারে। কারণ সবাই তো ব্যাক্তিগত গাড়ি নিয়ে কিংবা অনেক টাকা ভাড়া করা গাড়ি নিয়ে মার্কেটে যাওয়ার সুযোগ নেই আর সেটা সম্ভব না। তাই সাধারণদের কথা আরও ভাবা উচিত বলে আমি মনে করি।
একইভাবে পুলক ও অপু বলেন, গণপরিবহন বন্ধ রেখেই মার্কেট খুলে দিচ্ছ তাহলে আমরা মার্কেটে যাবো কীভাবে? তাদের মতোই একই দাবি জানান আর অনেকেই।
মুভমেন্ট পাস ছাড়া কেউ দোকান বা শপিংমলে যেতে পারবে কি না এ বিষয়ে এখনও নতুন করে কোনো তথ্য জানায়নি পুলিশ সদর দফতর। এছাড়া শপিংমল খোলার বিষয়ে জারি হওয়া প্রজ্ঞাপনে এ বিষয়ে কোনও নির্দেশনাও দেওয়া হয়নি।
গত ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়া কঠোর লকডাউনে মুভমেন্ট পাস ছাড়া জনসাধারণকে বাসা থেকে বের হতে নিষেধ করেছিল পুলিশ। যারাই বের হয়েছেন তারাই আইনি বাধার সম্মুখীন হয়েছিলেন। শপিংমল খুললেও সেই নিয়মই কার্যকর থাকবে কি না এ বিষয়ে গণমাধ্যমকে এখনও বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সারাদেশে দ্বিতীয় দফায় বৃহস্পতিবার (২২ এপ্রিল) থেকে ‘লকডাউন’ শুরু হয়। যা চলবে আগামী ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত। করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় সরকার জনসমাগম এড়াতে প্রথমে ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত নানা বিধিনিষেধ আরোপ করে। পরে এ নিষেধাজ্ঞা আরও দুই দিন বাড়িয়ে ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত করা হয়। তবে সে সময় সরকারি-বেসরকারি অফিস, শিল্পকারখানা, গণপরিবহন চালু ছিল।
এরপর ১৪ এপ্রিল থেকে এক সপ্তাহের জন্য সব ধরনের অফিস ও পরিবহন বন্ধের পাশাপাশি বাজার-মার্কেট, হোটেল-রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। তবে উৎপাদনমুখী শিল্প কারখানায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে কাজ চালানোর অনুমতি দেওয়া হয়।