দুর্নীতিবাজ যেই হোক ব্যবস্থা নিচ্ছি, নেব: প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব বার্তা প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর থেকে কে কোন দলের সেটা বড় কথা নয়, দুর্নীতি ও অনিয়মে জড়িতদের আমরা ধরে যাচ্ছি। দুর্নীতিবাজ যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছি, নেব। এটা অব্যাহত থাকবে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টম (বাজেট) অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে একথা বলেন তিনি। খবর বাসসের।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্নীতির সাথে জড়িত, অনিয়মে জড়িত, আমরা যাকেই পাচ্ছি এবং যেখানেই পাচ্ছি তাকে ধরছি। আর ধরছি বলেই, চোর ধরে যেন চোর হয়ে যাচ্ছি। আমরা ধরি আবার আমাদেরকেই দোষারোপ করা হয়। এটাই হচ্ছে দুর্ভাগ্য। এর আগেতো দুর্নীতিটাই নীতি ছিল। অনিয়মটাই নিয়ম ছিল। সেভাবেই রাষ্ট্র চলেছে। আমরা যতদূর পারি শুদ্ধ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। এই অনিয়মগুলো আমরা নিশ্চয়ই মানব না।’

এর আগে সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের বক্তৃতা করেন। তিনি বহুল আলোচিত রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন অনিয়মের কথা তুলে ধরেন। এরপর কোভিড-১৯ এর মধ্যেও দেশব্যাপী তার সরকারের চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী রিজেন্ট হাসপাতালের দুর্নীতি, করোনা চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকা-খাওয়া বিষয়ে ব্যয়ের পরিসংখ্যান এবং অন্যান্য অনিয়ম-অসঙ্গতির প্রসঙ্গে দেশে ‘৭৫ পরবর্তী সামরিক সরকারগুলোর দুর্নীতির প্রাতিষ্ঠানিকীকরণকে দায়ী করেন।

একের পর এক বিভিন্ন দুর্নীতিবাজদের পাকড়াও করার উল্লেখ করে সরকারের দুর্নীতির মূল উৎপাটনে আন্তরিকতার বিষয়টিও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। একই সঙ্গে তিনি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং ‘ভয়কে জয় করার’ জন্য সবাইকে পরামর্শ দেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘১৯৭৫ এর পর যারা রাতের অন্ধকারে অস্ত্র হাতে নিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল তারাই বাংলাদেশের মানুষের চরিত্র নষ্ট করে দিয়ে গেছে। কারণ অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে সেই ক্ষমতা কুক্ষিগত করার জন্য এরা মানুষকে দুর্নীতি শিখিয়েছে, কালো টাকা বানাতে ও ঋণখেলাপি হতে শিখিয়ে এই সমাজটাকে কলুষিত করে দিয়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মানুষ যে আগে একটা আদর্শ নিয়ে চলত, নীতি নিয়ে চলত, দীর্ঘদিন মিলিটারি ডিক্টেটরশিপ এদেশের মানুষের চরিত্র হরণ করেছে। কারণ, অবৈধ ক্ষমতাটাকে নিষ্কণ্টক করাই ছিল তাদের লক্ষ্য। তারা বছরের পর বছর এই দুর্নীতি-অনিয়মের বীজ বপন করেছে। তা মহীরুহ হয়ে গেছে। এখন আপনি যতই কাটেন আবার কোথা থেকে যেন গজিয়ে ওঠে। সেক্ষেত্রে চরিত্রহীনতা একেবারে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত। সেখানে আপনি যতই চেষ্টা করেন এর মূলোৎপাটন করা যথেষ্ট কঠিন।’

সরকারের দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের সাফল্য ও দুর্নীতিবাজদের আইনের আওতায় নিয়ে আসার পদক্ষেপের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তারপরও এর মধ্যে যে খবরগুলো আসছে, তাতে বুঝতে পাচ্ছেন, এটা কারা করছে।’

Share