নিজস্ব জেলা প্রতিবেদক : ঈদের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ঘাটে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ঘরমুখো মানুষের ঢল। প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে আগে ভাগেই রাজধানী ছাড়তে শুরু করা হাজারো মানুষ করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে পাটুরিয়া হয়ে দৌলতদিয়া ঘাটে এসে ভিড় করছেন। এতে চরমভাবে লঙ্ঘিত হচ্ছে স্বাস্থ্যবিধি।
শুক্রবার বিকেলে দৌলতদিয়া ঘাট ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা ও এর আশপাশের জেলাগুলো থেকে সাধারণ মানুষ প্রখর রোদে তীব্র গরমে বিভিন্ন ছোট ছোট যানবাহনে এসে ফেরি পার হয়ে দৌলতদিয়া ঘাট প্রান্তে চরম ভোগান্তিতে পড়ছে। অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ইজিবাইক, মাহেন্দ্র, মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাসসহ বিভিন্ন যানবাহনে গাদাগাদি করে গন্তব্যস্থলের দিকে ছুটছেন যাত্রীরা।
ঢাকা থেকে আগত আমিনুল ইসলাম, বাবুল হোসেন, মিনহাজউদ্দিনসহ অনেকেই জানান, সামনে ঈদ তাই ঝামেলা এড়াতে একটু আগে ভাগেই বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছেন তারা। দরুপাল্লার যানবাহন না থাকায় পথে পথে ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে সবাইকে। পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি।
রওশন আরা, বেলাল আহমেদ, সাইফুল ইসলামসহ অনেক যাত্রী বলেন, ঝুঁকি আছে জেনেও তারা প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ করতে বাড়িতে যাচ্ছেন। কিন্তু পথে অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। একই বাহনে দীর্ঘ পথ যেতে পারছেন না। বাসে উঠে জেলার শেষ সীমানায় নামতে হচ্ছে, দিতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। কিন্তু স্বাস্থ্যবিধি বা সামাজিক দূরত্ব কোনটাই মানা সম্ভব হচ্ছে না। ফেরিতেও গাঁ ঘেষাঘেষি করে পার হতে হয়েছে।
তাই স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত ও মানুষের সুবিধার্থে গণপরিবহনসহ সবগুলো ফেরি চালুর দাবি জানান তারা।
বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক মজিবার হোসেন মোল্লা জানান, ঘাটে ছোট বড় মিলিয়ে ১৬টি ফেরির মধ্যে ৬টি ফেরি দিয়ে সীমিত আকারে জরুরি যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ পেলে সবগুলো ফেরিই চালু করা হবে।
এদিকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ট্রাক বুকিং কাউন্টারে পণ্যবাহী ট্রাকের টিকেটে অতিরিক্ত টাকা আদায়ের দায়ে বিআইডব্লিউটিসির একজন কর্মকর্তাকে জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
জানা গেছে, শুক্রবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রফিকুল ইসলাম দৌলতদিয়া ট্রাক বুকিং কাউন্টারে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করে গোলাম মোস্তফা (৫৮) নামে বিআইডব্লিউটিসির এক কর্মকর্তাকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এ প্রসঙ্গে সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে পণ্যবাহী ট্রাকের নির্ধারিত ফি ব্যতিত অতিরিক্ত কোন টাকা নেওয়া যাবে না। এরপরেও যারা এই কাজের সঙ্গে জড়িত থাকবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।