নিজস্ব জেলা প্রতিনিধি : কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী মহিলা ডিগ্রি কলেজের এক খণ্ডকালীন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেছিলেন এক ছাত্রী। পরে তদন্ত করে ওই ছাত্রীকে স্থায়ী বহিস্কার করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে অভিযুক্ত খণ্ডকালীন শিক্ষককে কলেজে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
ছাত্রীর অভিযোগ থেকে জানা যায়, ভূরুঙ্গামারী মহিলা ডিগ্রি কলেজের খণ্ডকালীন ইংরেজি শিক্ষক হাবিবুল্লাহ খোকনের কাছে প্রাইভেট পড়তেন এইচএসসি প্রথমবর্ষের ওই ছাত্রী। বাসায় গিয়ে প্রাইভেট পড়ার সুযোগে তাকে বিভিন্ন সময় প্রেমের প্রস্তাব দেন ওই শিক্ষক। পরে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হলে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে একাধিকবার ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করেন শিক্ষক হাবিবুল্লাহ। এক র্যায়ে ওই ছাত্রী বিয়ের চাপ দিলে তড়িঘড়ি করে অন্যত্র বিয়ের আয়োজন করেন শিক্ষক হাবিবুল্লাহ। তিনি গোপনে বিয়ে করলে গত এপ্রিল মাসে অধ্যক্ষ বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কমিটি গঠন করে তদন্ত শেষে ওই ছাত্রীকে বহিষ্কার করে কলেজ কর্তৃপক্ষ। পরে ভূরুঙ্গামারীর তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে লিখিত অভিযোগ দেন ওই ছাত্রী। কিন্তু পদক্ষেপ নেননি সংশ্লিষ্টরা।
কলেজের বহিষ্কারের সিদ্ধান্তে ওই ছাত্রীর পড়ালেখা বন্ধের উপক্রম হয়েছে। এ অবস্থায় ছাত্রত্ব ফিরে পেতে দপ্তরের বিভিন্ন কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছেন ওই ছাত্রী।
ছাত্রীর স্বজনরা জানান, একজন শিক্ষক জঘন্য অপরাধ করলো। কিন্তু শান্তি দেওয়া হলো ছাত্রীকে। তার পড়ালেখা বন্ধ হওয়ার মতো এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া ঠিক হয়নি।
কলেজ পরিচালনা কমিটি ও তদন্ত কমিটির সদস্য ইমদাদুল হক মন্টু বলেন, তদন্তে শিক্ষকের অপকর্ম নিশ্চিত হওয়া গেছে। ছাত্রীর সম্মতিতে এ ঘটনা ঘটেছে।
ভূরুঙ্গামারী মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. খালেদুজ্জামান বলেন, কলেজ পরিচালনা কমিটি ও তদন্ত কমিটির সিদ্ধান্তে ওই ছাত্রীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। যেহেতু সে অন্যায় করেছে। বিষয়টি অন্য শিক্ষার্থীদের ওপর প্রভাব পড়তে পারে। এজন্য এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
কলেজ পরিচালনা কমিটির তৎকালীন সভাপতি স্থানীয় (২৫ কুড়িগ্রাম-১) সংসদ সদস্য আছলাম হোসেন সওদাগর জানান, তদন্ত কমিটি তাদের দুজনের অন্যায় খুঁজে পেয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারও কারণে কলেজ ক্ষতিগ্রস্ত হবে এটা ঠিক না।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শামছুল আলম বলেন এ ঘটনায় ছাত্রীটির উপর দু’টি অনৈতিক কাজ হয়েছে। একে শিক্ষকের ঘৃণিত কাজ; অন্যটি বহিষ্কার। তার পড়ালেখা যাতে বন্ধ না হয়, সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।