নয়াবার্তা ডেস্ক : পাকিস্তানের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রীর পদ হারান ইমরান খান। তবে ইমরান খান সে সময় থেকে তাকে হটানোর পেছনে বিদেশি চক্রান্তের অভিযোগ করে আসছেন। এবার তিনি সরাসরি দেশটির সেনাবাহিনীকে একহাত নিলেন।
পিটিআইয়ের চেয়ারম্যান ইমরান খান স্বীকার করেন তার সরকার ‘দূর্বল’ ছিল এবং চতুর্দিক থেকে ব্লাকমেইল করা হয়েছিল। তিনি অভিযোগ করেন, ক্ষমতা তার হাতে ছিল না এবং সবাই জানে সেটা কার হাতে।
বুধবার (১ মে) পাকিস্তানের বোল নিউজকে সাক্ষাৎকার দেন ইমরান খান। সেখানে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে একহাত নেন তিনি।
ইমরান খান বলেন, ‘আমাদের হাত বাধা ছিল। সর্বত্রই আমাদের (সরকারের) সঙ্গে তঞ্চকতা করা হয়েছে। হুমকি দেওয়া হয়েছে। সরকারে থেকেও আমরা ক্ষমতার অধিকারী ছিলাম না।’
ইমরানের মতে, দেশের সুরক্ষার স্বার্থে শক্তিশালী সেনাবাহিনী থাকা অবশ্যই জরুরি। তবে শক্তিশালী সেনার সঙ্গে ক্ষমতাসীন মজবুত সরকারের ভারসাম্য বজায় রাখা ততটাই আবশ্যক।
তেহরিক-ই-ইনসাফের নেতা বলেন, ‘আমাদের সরকার যখন ক্ষমতায় এলো, তখন আমরা সত্যিই দুর্বল ছিলাম। সেই সময় বিভিন্ন দলের সাহায্য নিতে হয়েছিল আমাদের। কিন্তু আমাদের হাত বাঁধা ছিল। আমরা সবাই জানি, পাকিস্তানে কাদের হাতে সব চেয়ে বেশি ক্ষমতা। তাই তাদের ওপরেই নির্ভর করতে হয়েছিল আমাদের।’
তিনি বলতে থাকেন, সব সময়েই ওদের ওপর ভরসা করতে হত আমাদের। ওরা অনেক ভাল কাজ করেছে। আবার এমন অনেক কিছুই ওরা করেনি, যা করা উচিত ছিল। ওদের হাতে ক্ষমতা রয়েছে কারণ ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরোর মতো প্রতিষ্ঠান ওদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
পাকিস্তানের রাজনৈতিক মহলের একাংশের দাবি, গত বছর পাক গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই-এর শীর্ষপদে লেফটেন্যান্ট জেনারেল নাদিম আনজুমের নিয়োগে প্রাথমিকভাবে সবুজ সঙ্কেত দিতে রাজি হননি ইমরান।
তার পর থেকেই পাকিস্তান সরকার ও দেশটির সেনার মধ্যে সম্পর্কে ফাটল ধরা শুরু হয়। যদিও পরে নাদিমের নিয়োগে অনুমোদন দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী।
বুধবার ইমরান বললেন, ‘প্রতিষ্ঠান যদি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়, তা হলে নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, এই সেনাও ধ্বংস হয়ে যাবে। পাকিস্তানের অর্থনীতি শেষ হয়ে যেতে বসেছে। এভাবে চলতে থাকলে কারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে? সেনা। তার পরিণাম হবে, আমরা পারমাণবিক শক্তিধরের তকমা হারাবো। এই মুহূর্তে সঠিক সিদ্ধান্ত না নেওয়া হলে দেশ ও জাতির মৃত্যু অবধারিত।’