পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতিতে উদ্বেগ বিএফইউজে ও ডিইউজের

নয়াবার্তা প্রতিবেদক : সাংবাদিকতা নিয়ে পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে দেশের পেশাজীবী সাংবাদিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। সংগঠন দুটির নেতারা বলছেন, সংবাদ প্রকাশের পর কোনো কোনো নেতা এবং কোনো কোনো সংগঠন যে ভাষায় প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে, তা স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতি হুমকি বলে মনে করেন তাঁরা।

বিএফইউজের সভাপতি ওমর ফারুক, মহাসচিব দীপ আজাদ এবং ডিইউজের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক আকতার হোসেন আজ শনিবার এক যৌথ বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাঁদের প্রত্যাশা, সংশ্লিষ্ট সব মহল স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ বিঘ্নিত হয়, এমন বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত থাকবে। কারণ, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও স্বাধীন সাংবাদিকতার অধিকার সংবিধানেই স্বীকৃত।

বাংলাদেশ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন গতকাল শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে ভবিষ্যতে পুলিশ বাহিনী সম্পর্কে কোনো ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশের ক্ষেত্রে অধিকতর সতর্কতা অবলম্বন ও সাংবাদিকতার নীতিমালা যথাযথভাবে অনুসরণের অনুরোধ জানিয়েছে। সম্প্রতি গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া) ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক ও বর্তমান সদস্যদের নিয়ে ধারাবাহিকভাবে আংশিক, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ঢালাও প্রতিবেদন প্রকাশ করা হচ্ছে বলে দাবি করেছে সংগঠনটি।

এমন পরিপ্রেক্ষিতে বিবৃতি দেয় বিএফইউজে ও ডিইউজে। বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতারা বলেন, সম্প্রতি দেশের কিছু ক্ষমতাধর বর্তমান ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তার বিপুল ও অস্বাভাবিক সম্পদের বিবরণ সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। কোনো বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে নয়, দায়িত্বশীল সাংবাদিকেরা প্রাপ্ত তথ্য ও দলিল যাচাই–বাছাই করে প্রমাণযোগ্য বিষয়গুলোই প্রকাশ করছেন বলে তাঁরা বিশ্বাস করেন।

বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতারা বলেন, সরকারি বিবৃতি, ভাষ্য, ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য বা সাংবাদিক সম্মেলনে পাওয়া সব তথ্যই গুরুত্বপূর্ণ। এ তথ্য থেকেই সাংবাদিকেরা সংবাদ তৈরি করেন। কিন্তু সাংবাদিকদের বড় কাজ হচ্ছে, প্রভাবশালী ব্যক্তিরা যে তথ্য গোপন রাখতে চান, তা অনুসন্ধান করে বের করা এবং পেশাদারত্বের সঙ্গে জনগণকে বিস্তারিত জানানো। আশার কথা, ইতিমধ্যে প্রভাবশালী মহল সম্পর্কে কিছু তথ্যভিত্তিক খবর প্রকাশিত হয়েছে।

বিএফইউজে ও ডিইউজের নেতারা বলেন, ‘আমরা এতে কারও উত্তেজিত হওয়ার কোনো কারণ দেখছি না। এ ক্ষেত্রে যাঁরা এসব খবর প্রকাশ করেছেন, তাঁদের দায়িত্ব এসব বিষয় প্রমাণ করা এবং যাঁদের নামে প্রকাশিত হয়েছে, তাঁদের কাজ হচ্ছে প্রকাশিত তথ্যগুলো সঠিক নয়, তা প্রমাণ করা। এ ক্ষেত্রে সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহলের দায়িত্ব প্রকাশিত তথ্য নিয়ে তদন্ত করা এবং দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করা। এসব বিষয় নিয়ে পারস্পরিক দোষারোপ করা কোনো শোভন কাজ নয়। তারপরও কেউ সংক্ষুব্ধ হলে প্রেস কাউন্সিলে যেতে পারেন। কোনো কর্মকর্তা দুর্নীতি করে থাকলে সেটি তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়, কোনো বাহিনীর বিষয় নয়।’

বিবৃতিতে বলা হয়, বিএফইউজে ও ডিইউজে স্পষ্টভাবে জানাতে চায়, শত হুমকির মুখেও প্রমাণিত তথ্যের ভিত্তিতে সাংবাদিক সমাজ তাদের পেশাগত দায়িত্বপালন অব্যাহত রাখবে।

Share