পেঁয়াজ রপ্তানিতে ভারতের নিষেধাজ্ঞা, প্রতিবাদে কৃষকদের পথ অবরোধ

নয়াবার্ত‍া  ডেস্ক : ভারতের বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টায় আগামী মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এ সিদ্ধান্তে চটেছে মহারাষ্ট্র রাজ্যের নাশিকের কৃষকরা।

দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, রোববার বিকালে পুনে-মুম্বাই মহাসড়কে ব্যস্ত অশোক স্তম্ভ চক্রে ২ ঘণ্টারও বেশি সময় ‘রাস্তা রোকো’ (বন্ধ) কর্মসূচি পালন করেন পেঁয়াজ চাষীরা। এ বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়েছে মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক দল প্রহর জনশক্তি পার্টি।

কৃষকদের এই পথ অবরোধে ব্যাহত হয়েছে গাড়ি চলাচল। এর আগে চান্দওয়াড়, কাওলান এবং দেওয়া তালুকা থেকে শত শত কৃষক দিন্দরির স্থানীয় এমপি এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিষয়ক রাজ্য ইউনিয়ন মন্ত্রী ভারতী পাওয়ারের বাসভবনের কাছে বিক্ষোভ করেন।

কৃষকরা বাইসাইকেলে করে ভারতী পাওয়ারের বাসভবনের দিকে যাত্রা করেছিল। কিন্তু পুলিশ তাদেরকে অশোক স্তম্ভ চক্রে থামিয়ে দেয়। গঙ্গাপুর সড়ক এলাকা অভিমুখী রাস্তায় বসানো হয় ব্যারিকেড।

এরপরই কৃষকরা প্রতিবাদ জানাতে অশোক স্তম্ব চক্রে পথ অবরোধ (রাস্তা রোকো) করেন এবং ইউনিয়ন মন্ত্রীকে তাদের সঙ্গে দেখা করে কথা বলার দাবি জানান। কেন্দ্র সরকার হঠাৎ করে কেন পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিল সে বিষয়ে মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলার দাবি জানান কৃষকরা।

তারা ভারতী পাওয়ারের বাসভবনে না যেতে দেওয়া পর্যন্ত রাস্তা ছেড়ে যেতে অস্বীকৃতি জানান। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধেও স্লোগান দেন কৃষকরা। পরে ভারতী পাওয়ারের পিএ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কৃষকদের বোঝানোর চেষ্টা করেন।

তাদেরকে জানানো হয় ভারতী পাওয়ার দিল্লিতে পার্লামেন্টের শীতকালীন অধিবেশনে গেছেন। ভারতীর প্রতিনিধিরা এও বলেন যে, মন্ত্রী পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য কেন্দ্রের সঙ্গে এরই মধ্যেই আলাপ করছেন। কিন্তু কৃষকরা তবুও প্রতিবাদে অটল থাকেন।

পরে নাশিকে প্রহর জনশক্তি পার্টির প্রেসিডেন্ট ফোনে ইউনিয়নমন্ত্রী ভারতীর সঙ্গে যোগাযোগ করে কৃষকদের হতাশার কথা তুলে ধরেন।

পেঁয়াজ কৃষকদের কথায়, কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের ফলে বহু ক্ষেত্রে কুইন্টাল পিছু পেঁয়াজ অনেক কম দামে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। যদিও সরকারি তথ্য অনুযায়ী কুইন্টাল পিছু পেঁয়াজের দাম বেশিই বলা হচ্ছে।

কিন্তু কৃষকদের ক্ষোভ, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম নাগালে রাখতে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছে কেন্দ্র। এ সিদ্ধান্তের ফলে লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে তাদের।

গত অক্টোবরের শুরুতে দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারি গুদাম থেকে ভর্তুকি মূল্যে খুচরা বাজারে পেঁয়াজ সরবরাহ করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তবুও কাজ হয়নি।

এর আগে পেঁয়াজের রপ্তানি মূল্য নির্ধারণ করে দেয় ভারতের ভোক্তা বিষয়ক বিভাগ। প্রতি মেট্রিক টনের সর্বনিম্ন দাম ৮০০ মার্কিন ডলার ধার্য করে তারা, যা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কার্যকর হওয়ার কথা ছিল।

এর মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার জানানো হয়, ন্যূনতম রপ্তানিমূল্যের ওই সীমা আরও তিন মাস, অর্থাৎ মার্চ পর্যন্ত বহাল থাকবে। এরপর রপ্তানিই বন্ধ করার ঘোষণা আসে।

Share